লিবিয়ায় ন্যাটোর অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা
১৪ এপ্রিল ২০১১ন্যাটো'র ২৮টি সদস্য দেশ এবং লিবিয়ায় সামরিক অভিযানে অংশ নেওয়া আরো ছয়টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠক করছেন জার্মানির রাজধানী বার্লিনে৷ লিবিয়ায় সামরিক অভিযানের সাফল্য এবং কৌশল নিয়ে আলোচনা চলছে৷ ন্যাটো মহাসচিব আন্ডার্স ফগ রাসমুসেন বলেছেন, লিবিয়ার প্রশাসন যতদিন সাধারণ মানুষের উপর হামলা বন্ধ না করবে, ততদিন ন্যাটোর সামরিক অভিযান চলবে৷ তাঁর যুক্তি, লিবিয়া সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের পথ সুগম করতেই সেখানে সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘লিবিয়ার বর্তমান প্রশাসনে কোন ভবিষ্যৎ নেই৷ এখন লিবিয়ার ভবিষ্যৎ জনগণের উপর নির্ভর করছে৷ তাদের ন্যায্য দাবি পূরণে লিবিয়ার মানুষের সহযোগিতায় ঐক্যবদ্ধ রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং লিবিয়ার প্রশাসন যতদিন হামলা বন্ধ না করবে ততদিন আমরা বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তার জন্য অভিযান চালিয়ে যাবো৷''
লিবিয়ায় সামরিক অভিযানের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে ন্যাটো৷ এগুলোর মধ্যে ৯০০ টি হামলা হয়েছে সেসব সেনা দলের উপর, যারা বেসামরিক মানুষের উপর হামলার চেষ্টা করছিল৷ ন্যাটো প্রধানের মতে, গাদ্দাফির জন্য এটা একটা সুস্পষ্ট এবং শক্তিশালী সতর্কবার্তা৷ গাদ্দাফি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে রাসমুসেন বলেন, ‘‘আপনারা নিজেদের সাধারণ মানুষের উপর সাঁজোয়া যান, ভারি অস্ত্র-শস্ত্র এবং চোরাগোপ্তা হামলা চালাবেন আর আমরা অলসভাবে বসে থাকবো তা হতে পারে না৷''
জার্মানির অবস্থান
লিবিয়ার আকাশ সীমায় নিষেধাজ্ঞা আরোপে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে সমর্থন করেনি জার্মানি৷ এছাড়া সেখানে সামরিক অভিযানে সৈন্য পাঠাতেও অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে বার্লিন৷ তবে বৃহস্পতিবার জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে বলেন, লিবিয়ায় সামরিক অভিযানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সাথে একমত তারা৷ গাদ্দাফিকে স্বৈরশাসক উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁকে অবশ্যই বিদায় নিতে হবে৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমরা একটি মুক্ত ও গণতান্ত্রিক লিবিয়া চাই৷ আমরা লিবিয়ার সাধারণ মানুষকে সমর্থন জানাই যেন তারা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ বেছে নিতে পারে৷'' উল্লেখ্য, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য গাদ্দাফির বিরুদ্ধে সামরিক চাপ বাড়াতে চাইলেও, সেখানে কূটনৈতিক পন্থায় সমাধান চায় জার্মানি৷
এদিকে, বার্লিন বৈঠকে এসে ন্যাটোর অভিযানের পক্ষে সকলকে একক অবস্থানে থাকার আহ্বান জানালেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন৷ তিনি বলেন, ‘‘গাদ্দাফি আমাদের মনোবল পরীক্ষা করছেন৷ তাই এই অভিযান অব্যাহত রাখতে আমাদের প্রচেষ্টা এবং ঐক্য আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷'' এই অভিযানের সাফল্য দ্রুততর করতে তিনি গাদ্দাফি প্রশাসনের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা ও ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ অন্যান্য শাস্তিমূলক পদক্ষেপের কথা বলেন৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন