লিবিয়ার জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে গত এপ্রিল থেকে লড়ছেন খলিফা হাফতার৷ তিনি একটি সশস্ত্রগোষ্ঠীর নেতা৷ মঙ্গলবার সকালে মস্কোতে শান্তি চুক্তিতে সই না করেই তিনি রাশিয়া ছেড়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের একটি বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করেন হাফতার৷ গত এপ্রিলে ত্রিপোলি দখলের অভিযান শুরু করেন তিনি৷ এতে এখন পর্যন্ত ২৮০-র বেশি সাধারণ মানুষ ও প্রায় দুই হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে৷ এছাড়া ঘরছাড়া হয়েছেন প্রায় এক লাখ ৪৬ হাজার লিবীয় নাগরিক৷
রাশিয়া ও তুরস্কের উদ্যোগে গত সপ্তাহান্ত থেকে লিবিয়ায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছিল৷ এরপর সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে সোমবার রাশিয়ার মস্কো যান হাফতার৷ সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় সাত ঘণ্টা বৈঠক হয়৷ এরপর এতে সই করেন লিবিয়ার জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারের প্রধান ফায়েজ এল-সারাজ৷ কিন্তু হাফতার তাতে সই না করে মস্কো ছেড়ে যান বলে জানিয়েছে এএফপি৷
সুপেয় পানির সংকটে লিবিয়া
খনিজ তেলে ভরপুর লিবিয়া উত্তর আফ্রিকার ধনী দেশগুলোর একটি৷ কিন্তু সে দেশে গৃহযুদ্ধ তৈরি করেছে নানামুখি সংকট৷ ধারণা করা হচ্ছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ সুপেয় পানির সংকটের সম্মুখীন৷
ছবি: Reuters/H. Ahmed
সংকটে মৌলিকসেবা
স্বাস্থ্যসেবা নিয়েও ঝুঁকির মুখে আছে লিবিয়া৷ দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে৷ যুদ্ধের দামামায় ১৪৯টি পানি সরবারহ লাইনের ১০১টি নষ্ট হয়ে গেছে৷
ছবি: Reuters/E.O. Al-Fetori
ধ্বংসের মুখে পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনা
শুষ্ক মরুভূমি দেশ লিবিয়া৷ পানির চাহিদা যোগানে ৮০-র দশকে ‘গ্রেট ম্যান-মেইড রিভার’ নামে প্রকল্প গ্রহণ করেন গাদ্দাফি৷ এর মধ্য দিয়ে দেশের ৭০ ভাগ মানুষের কাছে পৌঁছে যেত জল৷ কিন্তু গাদ্দাফির পতন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে পড়ে সেই পানি সরবরাহ৷
ছবি: Reuters/E.O. Al-Fetori
যুদ্ধের দামামা
২০১১ সালে গাদ্দাফির পতন হলেও শান্তি ফেরেনি লিবিয়ায়৷ উলটে সংঘাত ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে৷ পশ্চিমা সমর্থিত সরকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেও সাধারণ মানুষের ওপর নিয়ন্ত্রণ খাটাতে পারেনি৷ বরং জেনারেল খলিফা হাফতারের নেতৃত্বে দেশটির পূর্ব ভাগ দখল করে সেনাবাহিনী৷
ছবি: AFP/M. Turkia
পানিও যখন যুদ্ধাস্ত্র
নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে দেশের পানীয় জলের সরবরাহকে নষ্ট করেছে বিদ্রোহীরা৷ আর এই ফাঁকে, কিছু মানুষ নগদ অর্থের লোভে পানির পাইপ, সরঞ্জাম বিক্রি করে ফেলেছে৷ যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে পানির ব্যবহার নিয়ে উভয় পক্ষকে সতর্ক করেছিল জাতিসংঘ৷
ছবি: Reuters/H. Ahmed
স্বাস্থ্য ঝুঁকি
ইউনিসেফ বলছে, চলমান সংকটের সমধান না এলে, চার লাখ মানুষ সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত হবে৷ ফলে হেপাটাইটিস-এ, কলেরা, ডায়েরিয়ার মতো রোগ মহামারি আকার নিতে পারে৷
ছবি: Reuters/E.O. Al-Fetori
দূষিত পানি
পানির সংকট তো আছেই, কিন্তু যতটুকু পানি মিলছে সেটাও দূষণে ভরা৷ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ আর লবণ ঘনত্ব এ পানিকে করেছে ব্যবহার অনুপযোগী৷ জাতীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রধান বদর আল-দিদিন আল-নজরও বিষয়টি মেনে নিয়েছেন৷
ছবি: Reuters/E.O. Al-Fetori
6 ছবি1 | 6
হাফতারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাত দিয়ে রাশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা রিয়া নভস্তি জানিয়েছে, চুক্তিতে সারাজ সরকারের সমর্থনপুষ্ট গোষ্ঠীগুলো কবে ভেঙে দেয়া হবে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমার উল্লেখ না থাকায়, হাফতার তাতে সই করেননি৷
এদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানিয়েছেন, এবার নির্দিষ্ট ফল পাওয়া না গেলেও ভবিষ্যতে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে৷