লিবিয়ায় যুদ্ধের বিরুদ্ধে জার্মানিতে জনমত
৩১ মার্চ ২০১১যুদ্ধ মানে শত্রু-শত্রু খেলা
যুদ্ধ মানে তোমার প্রতি আমার অবহেলা
নির্মলেন্দু গুণের কবিতার পংক্তিদ্বয়ে যে চিত্রভাষ্য, স্পষ্টতই দৃশ্যত ন্যাটোর লিবিয়া যুদ্ধ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রবাহিনীর দলে অ্যামেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স যুক্ত ছিল৷ এখন আর মিত্রবাহিনী বলা হয়না৷ ভিন্ন নামকরণ৷ ন্যাটো-ভুক্ত দেশ৷ এই সঙ্গে আছে ঠুঁটো জগন্নাথ জাতিসংঘ৷ যদি অনুমতি দেয় জাতিসংঘ, জায়েজ হয়ে যায় যুদ্ধ৷ না দিলেও, ন্যাটোর মাতব্বররা তোয়াক্কা করে না৷ সমরাভিযান চালানোর জন্যে ভোঁতা যুক্তি খাড়া করবেই৷
কেউ এখন যুদ্ধ চায় না৷ যুদ্ধ মানেই শত্রুতা৷ শত্রুকে খতম করে অবহেলার খেলা৷ টিউনিশিয়ার গণ অভ্যুত্থানে মিশরও উদ্দীপ্ত হোসনি মুবারককে হটিয়েছে৷ টিউনিশিয়া-মিশরের ঢেউ মধ্যপ্রাচ্যের নানা দেশে৷ স্বৈরশাসকের অতিষ্ঠ অত্যাচারে মানুষ মরিয়া৷ উচ্ছেদের সংগ্রামে অকুতোভয়৷ লিবিয়ার স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি সাধারণ মানুষ হত্যায় মেতে ওঠে, অন্যান্য স্বৈরশাসকের চেয়েও কঠোর হয়৷ তাঁর এই মানবতাবিরোধী জঙ্গিপনায় বিশ্বের টনক নড়ে৷ ন্যাটোর তিনটি দেশ লিবিয়ায় ঝাঁপিয়ে পড়ে যুদ্ধে, মানবতা রক্ষার নামে৷ অবশ্য, গোটা দেশে নয়৷ সাধারণ মানুষ বলেন, এই যুদ্ধ পশ্চিমাদের লিবিয়ার তেল দখলই মূল উদ্দেশ্য৷
সৌদি আরব, দুবাই,কাতার, কুয়েতে গণতন্ত্র নেই৷ একনায়কতন্ত্রের রাজত্ব৷ অথচ গণতন্ত্রী, মানবতাবাদী পশ্চিমাদের কোনো গরজ নেই৷ চুপ৷ মৌনী৷ কেউ বলেন, তেল নয়,মানবিক কারণেই এই যুদ্ধ৷ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ৷ স্বৈরশাসক উচ্ছেদে যুদ্ধ৷ কারোর কথা, প্যালেস্টাইন-ইসরায়েলের জ্বলন্ত সমস্যা জিইয়ে রেখে মধ্যপ্রাচ্যে, তথা আরবদেশে, আফ্রিকায় গণতন্ত্র ও শান্তি আসতে পারেনা৷
প্রতিবেদন: দাউদ হায়দার, বার্লিন
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন