লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আরো ৩১০ বাংলাদেশি
৩১ অক্টোবর ২০২৫
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকাল পৌনে ৮টার দিকে বাংলাদেশি অভিবাসীদের বহনকারী ফ্লাই ওইয়া এয়ারলাইন্সের চার্টার্ড ফ্লাইটটি ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে৷ আগের দিন, লিবিয়ার ত্রিপোলির মিতিগা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন বাংলাদেশি অভিবাসীরা৷
লিবিয়ার ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে৷
এতে বলা হয়েছে, প্রত্যাবাসিত বাংলাদেশি অভিবাসীদের মধ্যে ২১১ জন ছিলেন মিসরাতায় এবং ৯৯ জন ছিলেন ত্রিপোলিতে৷ লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছেন, দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে লিবিয়ার জাতীয় ঐক্যমত্যের সরকারের সার্বিক সহযোগিতা ও ব্যবস্থাপনায় ৩১০ জন বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশি নাগরিককে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে৷
এ নিয়ে চলতি মাসে লিবিয়া সরকারের সহযোগিতায় তৃতীয় চার্টার্ড ফ্লাইটটি পরিচালনা করা হয়েছে৷ এর আগে ৯ অক্টোবর প্রথম ফ্লাইটে ৩০৯ জন, ২৩ অক্টোবর দ্বিতীয় ফ্লাইটে আরো ৩০৯ জন এবং সবশেষ ৩০ অক্টোবর তৃতীয় ফ্লাইটে ৩১০ জনসহ মোট ৯২৮ জন বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছে৷
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রত্যাবাসিত বাংলাদেশিদের সবাই স্বেচ্ছায় দেশে ফিরেছেন৷ দূতাবাসের উদ্যোগের কারণে অভিবাসীদের জেল ও জরিমানা মওকুফ করে নিরাপদে দেশে পাঠানো সম্ভব হয়েছে৷
লিবিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার ত্রিপোলির অভ্যর্থনা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে প্রত্যাবাসিত অভিবাসীদের বিদায় জানান৷ এ সময় দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মো. রাসেল মিয়াসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন৷
প্রত্যাবাসিত বাংলাদেশিদের উদ্দেশে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘‘দেশে ফিরে নতুনভাবে জীবন শুরু করুন, পরিবারের পাশে থাকুন এবং স্থানীয় পর্যায়ে মানবপাচার ও অনিয়মিত অভিবাসন প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখুন৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘নিরাপদ অভিবাসনই টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি৷ তাই ভবিষ্যতে যথাযথ প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে বৈধ উপায়ে বিদেশে কর্মসংস্থানের চেষ্টা করা উচিত৷''
অভিবাসীদের দেশে ফিরে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি৷
দূতাবাস জানিয়েছে, লিবিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে আগ্রহী তাদের প্রত্যাবাসনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে দূতাবাস৷ এজন্য লিবিয়া সরকার, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে কাজ করছে দূতাবাস৷ এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দূতাবাস অভিবাসীদের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করা, বহির্গমন ছাড়পত্র এবং জেল-জরিমানা মওকুফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছে৷
দূতাবাস জানিয়েছে, ২০২৩ সালের জুন থেকে এখন পর্যন্ত মোট সাত হাজার ১৭১ জন বাংলাদেশিকে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে৷ এছাড়াও বর্তমানে ত্রিপোলির তাজুরা ও বেনগাজীর গানফুদা ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশিদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য দূতাবাসের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে৷
টিএম/এআই (লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস)
প্রথম প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ইনফোমাইগ্রেন্টস
অভিবাসী বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইনফোমাইগ্রেন্টস তিনটি প্রধান ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমের নেতৃত্বে একটি যৌথ প্লাটফর্ম৷ প্লাটফর্মটিতে রয়েছে জার্মানির আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে, ফ্রান্স মিডিয়া মোন্দ, এবং ইটালিয়ান সংবাদ সংস্থা আনসা৷ এই প্রকল্পের সহ-অর্থায়নে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷