পর্তুগালের রাজধানী লিসবন এক ঐতিহাসিক শহর৷ তার ঠিক মাঝখানে কংক্রিট আর কাচের একটা পাঁচতলা বাড়ি তৈরি করার কথা ভাবতে পারেন? পর্তুগিজ স্থপতি জোসে মাটেউশ শুধু তা ভাবেননি, করেও দেখিয়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
লিসবনের আকর্ষণ ‘টাউনহাউস’
04:34
পর্তুগালের রাজধানী লিসবনকে চেনা যায় তার ঐতিহাসিক বাড়িঘর দেখে৷ তার মধ্যে অনেক বাড়ি একশো বছরের বেশি পুরনো৷ তার মাঝখানে হঠাৎ একটি অতি আধুনিক বাড়ি! বাড়ির সামনেটা আবার চুনাপাথর দিয়ে মোড়া, ঠিক যেন কোনো পুরনো প্রাসাদের মতো৷ পর্তুগিজ স্থপতি জোসে মাটেউশ বাড়িটির নকশা করেন৷
২০১৩ সাল থেকে তিনি ও তাঁর পরিবার এই বাড়িতে বাস করছেন৷ পুরো বাড়িটায় থাকার জায়গা সাড়ে চার হাজার বর্গফুটের চেয়ে বেশি – তবে পাঁচটি তলা মিলিয়ে৷ একটা ছোট করিডোর থেকে সরাসরি বসবার ঘরে ঢোকা যায়৷ জোসে বলেন, ‘‘বাড়িটা তৈরি হয়েছে আমি, আমার স্ত্রী আর আমাদের তিন ছেলেমেয়ের জন্য৷ আমরা খুব খোলামেলাভাবে থাকি৷ আমাদের অনেক বন্ধুবান্ধব আছে, কাজেই নানা পার্টি দেওয়া হয়, মানুষজন আসে-যায়৷''
ইউরোপের সবচেয়ে সুন্দর দশটি প্রাসাদ
প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক ইউরোপের দুর্গ ও প্রাসাদগুলি দেখতে আসেন৷ তাদের অপরূপ স্থাপত্য এই সুপ্রাচীন মহাদেশের সুদীর্ঘ ইতিহাসের সুন্দরতম অভিব্যক্তি৷ যদিও আজ আর কে রাজপ্রাসাদে বাস করার স্বপ্ন দেখতে পারে!
ছবি: picture-alliance/ZB/W. Thieme
ফ্রান্সের ভার্সাই প্রাসাদ
প্যারিসের কাছে অবস্থিত ভার্সাই প্রাসাদে কক্ষের সংখ্যা মোট এক হাজার আটশো! ইউরোপের বৃহত্তম প্রাসাদগুলির মধ্যে গণ্য এই সুবিশাল প্রাসাদ ও উদ্যান নির্মিত হয় ১৬৭৭ সালে৷ ফরাসি নৃপতি চতুর্দশ লুই নিজের বাসভবন হিসেবে প্রাসাদটি তৈরি করান৷ পরে ইউরোপের অপরাপর শাসক তাঁদের নিজস্ব ‘ভার্সাই’ তৈরি করার চেষ্টা করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/ZB/A. Engelhardt
রাশিয়ার পেটারহোফ প্রাসাদ
সেন্ট পিটার্সবার্গের পশ্চিমে, ফিনল্যান্ড উপসাগরের কূলে অবস্থিত প্রাসাদটি ‘রুশ ভার্সাই’ নামেও পরিচিত৷ জার পিটার দ্য গ্রেট ১৭২৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রাসাদটির উদ্বোধন করেন – তাঁর গ্রীষ্মকালীন বাসস্থান হিসেবে৷ প্রাসাদটির অন্যতম আকর্ষণ হল গ্র্যান্ড ক্যাসকেড কিংবা স্যামসন ফাউন্টেন-এর মতো ফোয়ারা৷
ছবি: picture-alliance/ZB/A. Engelhardt
তুরস্কের টপকাপি প্রাসাদ
ইস্তানবুলের টপকাপি প্রাসাদ ছিল পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি তুর্কি সম্রাটের বাসভবন৷ প্রাসাদের চারটি মুখ্য চত্বর এবং অন্যান্য ছোটখাটো ভবন আছে, যেখানে প্রাসাদের প্রায় পাঁচ হাজার কর্মী বসবাস ও কাজ করতেন৷
ছবি: picture-alliance/ZB/B. Settnik
ব্রিটেনের উইন্ডসর ক্যাসল
যেখানে মানুষজন বাস করে, এবং সবচেয়ে বেশিদিন ধরে বাস করে আসছে, এমন সব প্রাসাদ-দুর্গগুলির মধ্যে ইউরোপের বৃহত্তম ক্যাসল হল উইন্ডসর৷ প্রথম হেনরি-র আমল থেকে ইংল্যান্ডের রাজপরিবার এখানে বাস করে আসছে৷ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় ১০৭৮ সালে৷ পরে এই ক্যাসল সেনা ছাউনি এবং কারাগার হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে৷ আজ এই উইন্ডসর ক্যাসল ইংল্যান্ডের রানির মূল বাসভবন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/U. Gerig
অস্ট্রিয়ার শ্যোনব্রুন প্রাসাদ
প্রায় ৩০০ বছর আগের কথা৷ অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের সম্রাজ্ঞী মারিয়া টেরেজা ভিয়েনার শ্যোনব্রুন প্রাসাদ-কে ইউরোপের রাজকীয় ঐতিহ্যের কেন্দ্রবিন্দু করে তোলেন৷ প্রতিবছর পঁচিশ লক্ষের বেশি টুরিস্ট আসেন এই শ্যোনব্রুন প্রাসাদ দেখতে৷
ছবি: picture-alliance/ZB/W. Grubitzsch
স্পেনের এল এস্কোরিয়াল
মাদ্রিদের কাছে এল এস্কোরিয়াল নামধারী প্রাসাদটি দৈর্ঘ্যে ২০৭ মিটার এবং প্রস্থে ১৬১ মিটার৷ বিশ্বের বৃহত্তম রেনেসাঁস স্থাপত্য হল এল এস্কোরিয়াল৷ স্পেনীয়রা বলেন, বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য৷ স্পেনের অধিকাংশ নৃপতির মরদেহ রাখা রয়েছে শ্বেতপাথরের ২৬টি কবর বিশিষ্ট একটি সমাধিগৃহে৷
ছবি: picture alliance/Prisma Archivo
চেক প্রজাতন্ত্রের লুবোকা প্রাসাদদুর্গ
বোহেমিয়ার শোয়ারৎসেনবার্গের নৃপতিদের সাবেক বাসভবনটি আজ চেক প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রাসাদগুলির মধ্যে পড়ে৷ এখানে সপ্তদশ শতাব্দীর ওয়ালপেপার-এর যে সংগ্রহ আছে, তা সত্যিই দর্শনীয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/W. Matheisl
জার্মানির নয়শোয়ানস্টাইন ক্যাসল
বাভারিয়ার রাজা দ্বিতীয় লুডভিশ-এর স্বপ্ন ছিল, মধ্যযুগীয় নাইট-দের মতো তাঁর একটি দুর্গ থাকবে – তা যদি সে দুর্গ তৈরি করতে হয়, তাও সই৷ যেমন কথা, তেমনি কাজ: লুডভিশ টুরিঙ্গিয়ার ভার্টবুর্গ প্রাসাদ-দুর্গের কায়দায় নয়শোয়ানস্টাইন তৈরি করালেন – যদিও সে দুর্গ সমাপ্ত হতে হতে ১৮৮৬ সাল হয়ে যায়৷ রাজা লুডভিশ-এর রূপকথার ক্যাসল আজ বাভারিয়ার একটি টুরিস্ট ম্যাগনেট৷
ছবি: picture-alliance/ZB/F. Baumgart
ইটালিতে ‘দোজে’-র প্রাসাদ
ভেনিস-এর সাবেক প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আধিকারিক ছিলেন ‘দোজে’ বা ডিউক৷ সান মার্কো চত্বরে তাঁর প্রাসাদটি ছিল একাধারে বাসভবন তথা নৌ- এবং বাণিজ্যশক্তি হিসেবে ভেনিসের প্রতিপত্তির প্রতীক৷ ভেনেশিয়ান গথিক শৈলীর প্রাসাদটি বারংবার অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বারংবার তা সারানো হয়েছে৷ প্রাসাদটি আজ একটি মিউজিয়াম৷
ছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb/M. Schrader
পর্তুগালের পেনা জাতীয় প্রাসাদ
রোম্যান্টিসিজমের আমলের এই প্রাসাদটিতে নানা ধরনের স্থাপত্যশৈলীর খেয়ালি সংমিশ্রণ৷ অনেকের তা দেখে ডিজনিল্যান্ডের কথা মনে পড়ে যায়৷ টুরিস্টরা কিন্তু সিন্ত্রা শহরের এই প্রাসাদটির প্রেমে পড়ে আছেন! চতুর্দশ শতাব্দি থেকেই পেনা প্রাসাদটি পর্তুগালের রাজপরিবারের গ্রীষ্মকালীন বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Read
10 ছবি1 | 10
কংক্রিট থেকে ‘উষ্ণ অনুভূতি'
সেজন্য এমন আসবাবপত্র রাখা হয়েছে, যা প্রয়োজন পড়লেই অন্যভাবে সাজিয়ে নেওয়া যায় – জানালেন বাড়ির মালিক৷ দেয়াল চুনকাম করা কিংবা ওয়ালপেপার লাগানো নয়৷ ঘরের ছাদ, দেয়াল, মেঝে, সবই একপোজ্ড কংক্রিটের তৈরি৷ স্থপতি জোসে মাটেউশ জানালেন, ‘‘খোলা কংক্রিট নানা ধরনের ছবি, আসবাবপত্র, কুশন ইত্যাদি দিয়ে ঢাকা যায়, যাতে অতটা ন্যাড়া দেখতে না লাগে, বরং একটা উষ্ণ অনুভূতি হয়৷''
কংক্রিট রং করতে হয় না, তাই পয়সা বাঁচে – জানালেন জোসে৷ বেসমেন্টে কিচেন আর ডাইনিং রুম৷ কিচেনটা ডিজাইন করেছেন মিসেস মাটেউশ৷ জোসে জানালেন, ‘‘পার্টিতে অনেক লোকজন এলে কিচেনটা প্রায়ই বড় ছোট লাগে৷ সেই কারণে আমাদের এই খোলা এরিয়ার আইডিয়াটা মাথায় আসে, যেখান থেকে বাগানেও যাওয়া-আসা করা যাবে৷''
বাগানটা মাত্র সাড়ে সাতশ’ বর্গফুট, অর্থাৎ বেশ ছোট৷ তবুও, এ যেন শহরের ঠিক মাঝখানে একটা মরুদ্যান৷ জোসে বললেন, ‘‘এখান থেকে আজও পুরনো দেয়ালগুলো দেখা যায় আর বোঝা যায়, আগে কীভাবে বাড়ি তৈরি করা হতো৷ আমি যেখানে দাঁড়িয়ে, তার নীচেটা দেখুন৷ আগে যে ভাঙা বাড়িটা এই জায়গায় ছিল, তার পাথর দিয়ে এই মেঝেটা গড়া হয়েছে৷''
সিঁড়িভাঙা অঙ্ক
আগে এখানে একটা ফ্ল্যাটবাড়ি ছিল৷ বেশ ভেঙেচুরে যাওয়া বাড়ি৷ জোসে বাড়িটা আবিষ্কার করেন ২০১০ সালে৷ বাড়িটাকে পুরোপুরি ভেঙে তিনি এখানে তাঁর ‘টাউনহাউস' তৈরি করেন৷ নতুন বাড়ির পাঁচটা তলা মিলিয়ে মোট সাতটা ঘর৷ জোসের টাউনহাউস আর পাঁচটা শহুরে বাড়ির মতো নয়, কেননা তার ঘরগুলো একটার উপর আরেকটা৷ জোসের মন্তব্য, ‘‘অনেকে ভাবেন যে এ বাড়িতে থাকা কষ্টকর, সারাক্ষণ সিঁড়ি ভাঙতে হয়৷ কী করা যাবে, এ বাড়ির অনেকগুলো তলা, তাই সিঁড়ি লাগে৷ এখানে এক তলা থেকে আরেক তলা যেতে চারবার সিঁড়ি ভাঙতে হয়৷ কিন্তু আমরা দেখেছি যে, রোজকার জীবনে ঐ একটা বা দু'টো তলাতেই থাকা হয়৷ এছাড়া সিঁড়ি ভাঙা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো, বলে আমাদের ধারণা৷''
জার্মানির দশটি উদ্ভুটে হোটেল
দেখতে হয়ত জেল কিংবা রাস্তায় বসানোর জলের পাইপ অথবা অতিকায় কাঠের পিপের মতো৷ অথচ এরা সবাই এক-একটি সুপরিচিত হোটেল...
ছবি: Propeller Island
হোটেলের প্রত্যেকটি ঘর যেন শিল্পকলা
কোনো ঘরে শয্যা বলতে একটি কফিন৷ কোনো ঘরে আসবাবপত্র ঝুলছে ছাদ থেকে৷একটি ঘরের চতুর্দিকে আয়না লাগানো – একেবারে শিশমহল! বার্লিনের এই হোটেলটির নাম ‘প্রপেলার আইল্যান্ড’৷ এর ডিজাইন করেছেন শিল্পী লার্স স্ট্রশেন৷ এমনকি তিনি প্রতিটি ঘরের জন্য আলাদা মিউজিক কমপোজ করতেও ভোলেননি...৷
ছবি: Propeller Island
রেলগাড়ি ঝমাঝম
বার্লিন থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে ইয়্যুটারবোগ৷ সেখানে অতিথিরা ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলওয়ের আস্বাদ পেতে পারেন৷ স্লিপার কোচ হোটেলটিতে ২৫ জন অতিথির থাকার জায়গা আছে৷ প্রত্যেক কম্পার্টমেন্টে একটি করে ডাবল বেড, সেই সঙ্গে বসার জায়গা ও একটি বাথরুম৷
ছবি: Schlafwagenhotel
বাক্সের মধ্যে ঘুমনো
জার্মানির পূর্বাঞ্চলে কেমনিৎস-এর কাছে লুনৎসেনাউ শহরের ‘কফটেল’ বা বাক্সো হোটেলটিকে বিশ্বের খুদেতম হোটেল বললেও সম্ভবত দোষ হবে না৷ ২০০৪ সালে সৃষ্ট হোটেলটির প্রতিটি ঘর একটি সুটকেসের আকারে৷ ঘর বলতে দেড় মিটার চওড়া, তিন মিটার লম্বা আর দু’মিটার উঁচু৷ বিছানা নিজেকেই নিয়ে আসতে হয়৷ রাত কাটানোর খরচ: ১৫ ইউরো৷ বছরে শ’পাঁচেক অতিথি এই বাক্সো হোটেলে রাত কাটান৷
ছবি: Zum Prellbock
হবিটরা যেখানে থাকে
টলকিয়েন-এর ‘লর্ড অফ দ্য রিংস’-এর কল্যাণে হবিটদের আর কে না চেনে? তবে হবিটদের ওয়াইল্ডারল্যান্ড দেখার জন্য নিউজিল্যান্ডের ফিল্মসেটে যেতে হবে না৷ হবিটরা যেভাবে বাস করত, জার্মানির টুরিঙ্গিয়া প্রদেশের জঙ্গলেও তা করা সম্ভব – এই হোটেলটির কল্যাণে৷
ছবি: Feriendorf Auenland
‘ড্যান্সেস উইথ উল্ভস’
সন্ধ্যা নামছে, আঁধার ঘনাচ্ছে, কোথাও কোনো মানুষের সাড়া নেই৷ এই হলো উত্তর জার্মানির ব্রেমেন শহরের কাছে ‘ট্রি ইন’ বা বৃক্ষ হোটেলের পরিবেশ৷ ড্যোরফার্ডেন-এ বাচ্চা নেকড়েদের রাখার জন্য যে ‘এনক্লোজার’ আছে, তার ঠিক মাঝখানে এই ট্রিহাউস হোটেল৷ পাঁচ মিটার উঁচুতে কাচে ঘেরা কামরা থেকে পরম আরামে নেকড়ে দেখা যায় – কেননা এখানে মিনি-বার থেকে হুইর্লপুল, কোনো আধুনিক বিলাসিতার অভাব নেই৷
ছবি: Tree Inn
জলের পাইপে বাস
জার্মানির রুর শিল্পাঞ্চলের বট্রপ শহরের পার্ক হোটেল-এ রাস্তায় বসানোর জলের পাইপগুলোকে কামরায় পরিণত করা হয়েছে৷ রাত কাটানোর কোনো বাঁধা ভাড়া নেই, যে যা পারেন, তা-ই দেন৷ জলের পাইপগুলোর ব্যাস প্রায় আড়াই মিটার; এক একটা সেকশনের ওজন সাড়ে ১১ টন৷ ভিতরে বিছানা আর একটা সাইড টেবল ঠিকই ধরে যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Weihrauch
লৌহকপাট
আগে এখানে জেলের আসামিরা বন্দি থাকতেন৷ আজ সেখানে ক্রাইম থ্রিলার-এর ফ্যানরা রাত কাটান৷ জার্মানির কাইজার্সলাউটার্ন শহরের আল্কাত্রাজ হোটেলে মোট ৫৬টি কামরা ও সুইট আছে৷ আজও এখানে সর্বত্র গারদ ও লোহার শিক – এমনকি হোটেলের পানশালাটিতেও৷ তবে অতিথিরা মর্জিমতো আসতে-যেতে পারেন৷
ছবি: alcatraz
মদের পিপেতে শয্যা
এককালে যেখানে ওয়াইন মজুদ রাখা হতো, সেখানে আজ রাত কাটানো যায়৷ রাইন নদের ধারে রুডেসহাইম শহরের লিন্ডেনভির্ট হোটেলটিতে ছ’টি অতিকায় কাঠের পিপে আছে৷ পিপেগুলোয় মোট ছ’হাজার লিটার সুরা ধরতো৷ আজ তার বদলে দু’জন অতিথির শোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে৷ তবে বসবার ঘরটা পিপের বাইরে৷
ছবি: Lindenwirt
মধ্যযুগের নাইটদের মতো
দক্ষিণ জার্মানির লেক কন্সটান্স-এর কাছে আর্টুস হোটেলে ঢুকলে মনে হবে, যেন মধ্যযুগে প্রবেশ করেছেন৷ কামরাগুলো যেন মধ্যযুগের কোনো সরাইখানার অনুকরণে সাজানো, খাবারদাবার নাইটদের আমলের ভুরিভোজ...৷
ছবি: Hotel Arthus
শীতকাতুরেদের জন্য নয়
নাম ইগলু লজ৷ ইগলু বলতে উত্তরমেরু অঞ্চলের এস্কিমোদের বরফের ঘর৷ ওবার্স্টডর্ফ-এ নেবেলহর্ন পাহাড়ের উপর এই বরফের হোটেলটি ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাস অবধি খোলা থাকে৷ ৪০ জন অতিথি এখানে দু’জন কিংবা চারজনের ইগলুতে রাত কাটাতে পারেন৷ সেই সঙ্গে রয়েছে – ভোর হলে – দু’হাজার মিটার উচ্চতা থেকে আল্পস পর্বতমালার অনুপম দৃশ্য৷
ছবি: IgluLodge
10 ছবি1 | 10
দোতলায় জোসের ছেলেদের ঘর৷ এখানকার মজা হলো, বিছানার পিছনে দেয়ালটাই হলো জামাকাপড় রাখার আলমারি৷ সবার ওপরের তলায় আছে একটা ‘পাটিও' বা খোলা জায়গা৷ আর তার ঠিক উলটোদিকে একটি লাইব্রেরি৷ জোসে মাটেউশ এখানে অনেক সময় কাটান৷ ওয়েদার যেমনই হোক না কেন, এখান থেকে লিসবন আর তেজো নদীর যে অপরূপ দৃশ্য দেখা যায়, সেই দৃশ্যের লোভেই তো জোসে এই পাঁচতলা বাড়িটা বানিয়েছেন৷ জোসে বলেন, ‘‘আমার এই দৃশ্যটা দারুণ লাগে, কেননা এখানে থেকে প্রতিবারই নতুন কোনো খুঁটিনাটি চোখে পড়ে, নতুন নতুন রং, যেমন ভোরবেলা, বা সন্ধ্যা হলে৷ দৃশ্যটা কোনো সময়েই এক নয়৷''
সেই দৃশ্যের টানেই জোসে মাটেউশ তাঁর টাউনহাউসের চার-চারটি ফ্লাইট সিঁড়ি ভেঙে ওপরে ওঠেন৷