1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লুক্সেমবুর্গে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধের প্রভাব কী

১০ জুলাই ২০২৫

লুক্সেমবুর্গ শহরের কেন্দ্রে ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ ফলে ভিক্ষুকের সংখ্যা আগের চেয়ে কমলেও মূল সমস্যার সমাধান হয়নি বলে মনে করছেন কেউ কেউ৷

লুক্সেমবুর্গ সিটি
লুক্সেমবুর্গ সিটি৷ ফাইল ফটোছবি: Êrik Lattwein/Zoonar/picture alliance

বরং কিছু ভিক্ষুক এখন চুরি করার পরিকল্পনা করছেন৷ শহর কর্তৃপক্ষ অবশ্য ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধের উদ্যোগ সফল মনে করছে৷

লুক্সেমবুর্গ শহরের কেন্দ্রে গ্রঁন্দ ব়্যুই এক জনপ্রিয় শপিং কেন্দ্র৷ দামি সব দোকান, অনেক ভিড়৷ ডেভিড এখানে প্রায়ই আসেন৷ ৪১ বছর বয়সি এই ব্যক্তি গৃহহীন এবং ভিক্ষুক৷ তিনি বলেন, ‘‘অনেকে এখানে ট্রাম থেকে বাসে ওঠেন৷ এটা সবচেয়ে ভালো স্থান৷''

চেক প্রজাতন্ত্রের ডেভিড অনেক বছর আয়ারল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডে কাজ করে একপর্যায়ে লুক্সেমবুর্গে চলে আসেন৷ এই স্থানে তিনি আগে নিয়মিত ভিক্ষা করতেন৷ কিন্তু গত বছর ভিক্ষাবৃত্তির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে শহর কর্তৃপক্ষ, ফলে পুলিশের আনাগোনো বেড়েছে বলে জানান ডেভিড৷

তিনি বলেন, ‘‘আমি এখানে ভিক্ষা করতাম৷ এখন দশ মিনিটের মধ্যে তারা (পুলিশ) হাজির হয়ে বাধা দেয়৷ জটিলতা করলে পরিচয়পত্র দেখতে চায়৷ না হলে সব গুছিয়ে নিয়ে অন্যত্র যেতে বলে৷'' 

সকাল সাতটা থেকে রাত দশটা অবধি শহরের কেন্দ্র, কয়েকটি সড়ক, চত্বর ও পার্কে ভিক্ষা করা নিষেধ৷ কেউ এই নির্দেশনা অমান্য করলে ২৫০ ইউরো জরিমানা৷

ডেভিড মনে করেন, দাম্ভিক আমলারা ভিক্ষুকদেরকে শহর ছাড়া করতে এই পথ বেছে নিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘তারা তাদের একাউন্টে টাকা পাঠায়৷ তাদের গাড়ি, বাড়ি আছে৷ ফলে জীবন নিয়ে তেমন ভাবতে হয় না৷ অন্যদিকে আমরা রাস্তায় কোনোমতে টিকে আছি৷''

নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কী হয়েছে? ভিক্ষুকদের এখনও রাস্তায় দেখা যায়, তবে সংখ্যায় কম৷ এই পথচারী বলেন, ‘‘দুই এক বছর আগের তুলনায় কম ভিক্ষুক দেখছি৷’’

আরেকজনের মন্তব্য, ‘‘সংঘবদ্ধ ভিক্ষাবৃত্তি কমেছে, তবে ভিক্ষুক সবসময় থাকবে৷’’

লুক্সেমবুর্গে বন্ধ ভিক্ষাবৃত্তি, চুরির পরিকল্পনা অনেকের

04:20

This browser does not support the video element.

মেয়র লেডি প্যলফার মনে করেন, নিষেধাজ্ঞায় কাজ হয়েছে৷ অতীতে ভিক্ষুকদের চক্র শহরকে অনিরাপদ করে তুলেছিল৷ এখন সেই অবস্থা নেই৷

তিনি বলেন, ‘‘প্রায়ই দেখা যায়, আগ্রাসী ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িতরা বেশ তথ্যসমৃদ্ধ৷ ফলে লুক্সেমবুর্গ শহরে নতুন আইন চালুর পর রাতারাতি তারা হারিয়ে যায়৷’’

সাহায্যপ্রার্থী অনেক মানুষ শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত ‘ভয়েস অব স্ট্রিট' নামের এক দাতব্য সংস্থায় জড়ো হন৷ এখানে ৫০ পয়সায় খাবার পাওয়া যায়, রয়েছে গোসলের ব্যবস্থা ও পোশাক৷ কর রাজস্ব থেকে এই প্রকল্পের অর্থায়ন করা হয়৷  

ব্যবস্থাপক আলেক্সান্ড্রা অক্সেলাই আমাদের জানান যে, মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, দিনে এখন সাড়ে চারশো জন৷ তার মতে নিষেধাজ্ঞার কারণে শহরের কেন্দ্র থেকে সমস্যা অন্যত্র সরে যাচ্ছে৷  

অক্সেলাই বলেন, ‘‘আমরা শহরের পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি চাই৷ আমার এমন কিছু দেখাতে চাই যা বাস্তব নয়, আমরা দারিদ্র্য লুকাতে চাই৷ কিন্তু এটা আর লুকানো সম্ভব নয়৷ এটা নতুন লুক্সেমবুর্গ৷’’

এখানে আসা সবাই দারিদ্র হলেও গৃহহীন বা ভিক্ষুক নয়৷ কিন্তু শহরের কেন্দ্রে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ হওয়ায় ভিক্ষুকরা এখন কী করছেন?

তাদের অধিকাংশই ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে রাজি নন৷ তাদের কেউ কেউ ভিক্ষা করতে না পারলে চুরি করতে চান৷ 

ডেভিড সিগারেট ও কফির বিনিময়ে দেখা দিয়েছেন৷ এবং তার জন্য এক কাজের সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে৷

তিনি বলেন, ‘‘আমার এক বন্ধু একজন ইটালীয় পাচক৷ তার রান্নাঘরে থালাবাসন পরিষ্কার করা বা অন্য কোনো কাজ পাওয়া যাবে কিনা জানতে চেয়েছি৷''

সেই কাজ না হওয়া অবধি শহরতলিতে ভিক্ষা করতে চান ডেভিড৷ 

প্রতিবেদন: টোবিয়াস ডামার্স/এআই

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ