1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ, প্রকৃতি ও মানুষ

ভিবকে ফয়ারসেঙার/এসবি২৩ আগস্ট ২০১৩

ব্রাজিলের অ্যামাজন অঞ্চলের রেন ফরেস্টের আওয়া উপজাতি বিপন্ন হয়ে উঠছে৷ কাঠুরে ও বসতকারীদের চাপে তাদের বসবাসের জায়গা সংকুচিত হচ্ছে৷ সারভাইভাল ইন্টারন্যাশানাল নামের একটি সংগঠন তাদের স্বার্থরক্ষায় এগিয়ে এসেছে৷

ছবি: picture-alliance/dpa/Fiona Watson/Survival International

১,২০০ বর্গ কিলোমিটার ঘন জঙ্গল, লুক্সেমবুর্গের অর্ধেক আয়তনের সমান৷ গোটা বিশ্বের চোখের আড়ালে এখানে আওয়া উপজাতির বসবাস৷ শিকার ও খাদ্য সংগ্রহ করেই তাদের দিন চলে৷ লোকসংখ্যা প্রায় ৪৫০৷ তাদের মধ্যে অনেকে কোনোদিন বাইরের জগতের সংস্পর্শে আসেনি৷ তাদেরই একজন জানালো, ‘‘নদীর কাছে মাঝে মাঝে অন্যান্য আওয়া-দের দেখতে পাই৷ বালিতে তাদের পায়ের ছাপ দেখা যায়৷''

আওয়া উপজাতির মানুষ জঙ্গলের জীবনযাত্রায় সম্পূর্ণ অভ্যস্ত৷ তবে টিকে থাকতে হলে তাদের চাই রেন ফরেস্টের একটা বড় অংশ৷ তারা সারা জঙ্গল চষে বেড়ায়৷ কখন কোথায় ফলমূল পাকে, শিকার কোথায় ঘোরে – তার উপর তাদের গতিবিধি নির্ভর করে৷ তাদের এই অভিনব জীবনযাত্রা অক্ষত রাখতে একটি এলাকাকে সংরক্ষিত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে৷

হুমকির মুখে আওয়া উপজাতিছবি: Toby Nicholas/ Survival

জার্মানির মারবুর্গ শহরে ফিলিপস বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেন ভল্ফগাং কাম্ফহামার৷ দক্ষিণ অ্যামেরিকার রেড ইন্ডিয়ানদের নিয়েই তাঁর কাজ৷ তিনি বললেন, ‘‘অ্যামাজন অঞ্চলে প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য নিয়ে যে ধারণা প্রচলিত রয়েছে, তা কিন্তু ঠিক নয়৷ সেখানে পুষ্টির বড়ই অভাব৷ অর্থাৎ সম্পদ থাকলেও তা বিশাল জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে৷ ফলে এক জায়গায় থিতু হওয়া যায় না, অনেক সময় নিয়ে গোটা এলাকা চষে বেড়াতে হয়৷''

এই অবস্থায় একটা গোটা জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে উঠছে৷ বসতিকারীরা আওয়া উপজাতির জন্য সংরক্ষিত এলাকার আরও গভীরে প্রবেশ করছে৷ তারা গবাদি পশুর চারণভূমির জন্য জঙ্গল ধ্বংস করছে৷ তবে এটাই একমাত্র হুমকি নয়৷ আওয়াদের অভিযোগ, কাঠুরেরা এসে জঙ্গল ধ্বংস করছে৷ তাদের পালাতে হচ্ছে৷

বে-আইনি কাঠুরেদের ভয়ডর নেই৷ কারণ এই সংরক্ষিত এলাকা রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে অনেক দূরে৷ সরকারের বেঁধে দেওয়া সংরক্ষিত এলাকার প্রায় এক তৃতীয়াংশই কাঠুরে, পশুপালক ও বসতিকারীদের কবলে চলে গেছে৷ বহিরাগতদের অনুপাত এখন ১০ গুণ বেশি৷ এক আওয়া নারী জানালেন, ‘‘এখন জঙ্গলে গেলেই আমার দুশ্চিন্তা হয়, একদিন সবকিছু উধাও হয়ে যাবে না তো! ভয় হয় – আরও মানুষ আসবে, আরও গাছপালা ধ্বংস হয়ে যাবে৷ একটা সময় আসবে যখন আমরা আর শিকার করতে পারবো না৷ ওরা কি আমাদের জঙ্গল পুরোপুরি ধ্বংস করে দেবে? তারা কি এই সব গাছ বিক্রি করে নিজেদের জন্য কিছু কিনতে চায়?''

জবরদখলকারীরা শুধু আওয়াদের জঙ্গল কড়ে নিচ্ছে না৷ কাঠ কোম্পানিগুলি ‘পিস্তোলেরোস' গুন্ডাদের কাজে লাগাচ্ছে, যারা আওয়া-দের পিছনেই ধাওয়া করছে৷ এক আওয়া তরুণ বললেন, ‘‘বাইরের লোক এসে জঙ্গলে আমার বাবাকে খুন করেছে৷ আমার মাকেও খুন করা হয়েছে৷ আরও অনেকে প্রাণ হারিয়েছে৷''

‘সারভাইভাল ইন্টারন্যাশানাল'-এর আশঙ্কা, আওয়ারা শীঘ্রই লুপ্ত হয়ে যাবে৷ তাদের সঙ্গে হারিয়ে যাবে অভিনব এক ইকোসিস্টেম সম্পর্কে জ্ঞান৷ ভল্ফগাং কাম্ফহামার মনে করেন, ‘‘আমার মনে হয়, আগামী কয়েক দশকের মধ্যে পশ্চিমা সমাজকেও এমন মূল্যবোধের শিকড়ে ফিরতে হবে, যা আজকের উপজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে দেখা যায়৷ প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক, ভোগের প্রবণতা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে৷''

রাষ্ট্র হস্তক্ষেপ না করলে অনেক দেরি হয়ে যাবে৷ বর্ষার শেষে কাঠুরেরা ফিরে আসবে৷ আওয়াদের পিছু হঠতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ