1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জঙ্গলই যাদের বাড়ি

রুট ক্রাউসে/এসি৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

লোস কোলোরাদোস হল কলম্বিয়ার একটি সুরক্ষিত অরণ্য৷ সেখানে বাস করে মালিবু উপজাতির লোকেরা৷ তাদের ছেলে-মেয়েরা এখন শিখছে নিজেদের হারানো ঐতিহ্যকে পুনরাবিষ্কার করতে: প্রকৃতিপ্রেম৷

Kolumbien Quibdo
ছবি: Getty Images/AFP/L. Robayo

জঙ্গলই যাদের বাড়ি

05:21

This browser does not support the video element.

ক্রমেই আরো বেশি মানুষ লোস কোলোরাদোস ন্যাশনাল পার্কের প্রান্তে বাস করছেন, কেননা তাদের অন্য কোথাও যাবার জায়গা নেই৷ লুইস অর্তেগাও এখানে বাড়ি বানিয়েছেন, যদিও তিনি জানেন এ কাজ বেআইনি৷ কী করবেন, শহরের কেন্দ্রে বাড়ি পাওয়া ভার, ভাড়াও আবার বেশি৷

লুইস এদিক সেদিক ছোটখাট কাজ করে সংসার চালান৷ এবার তাঁর পরিবারের মানুষজনের একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে৷ লুইস বলেন, ''আমি এখানে বাড়ি তৈরি করছি যাতে আমার ছেলে-মেয়েদের একটা ভবিষ্যৎ থাকে৷ আমার তিন সন্তান; আর আছেন আমার স্ত্রী, আমার ভাই-এর স্ত্রী, আমরা একটা বড় পরিবার৷ আমি আমার পরিবারের জন্য একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ চাই৷''

গত ৫০ বছর ধরে কলম্বিয়ায় সরকার, মাদক পাচারকারী, বামপন্থি আর দক্ষিণপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির মধ্যে রক্তাক্ত সংঘাত চলেছে৷ অন্য অনেকের মতো লুইস ও তাঁর পরিবার সেই সংঘাতের হাত থেকে বাঁচার জন্য পালিয়েছেন৷ এবার একটা বাড়ি পেয়ে সকলেই খুশি৷ লুইসের বক্তব্য, ''আমরা এখানে নিরাপদ; আগে পাহাড়ে যা ছিলাম, তার চেয়ে বেশি নিরাপদ৷ এখানে আমরা গ্রামের ভিতরে না হলেও, গাঁয়ের কাছাকাছি থাকি; নিজেদের অন্তত নিরাপদ বোধ করি৷''

সুরক্ষা যাদের কাজ

রোঁদে বেরিয়েছেন পার্কের কর্মীরা৷ তবে অকারণে লোকজনকে পার্ক থেকে বের করে দেন না তাঁরা৷ লুইস অর্তেগা অন্যত্র যেতে রাজি ছিলেন, যদি অন্যত্র এর চেয়ে ভালো একটা বাড়ি পান৷ কিন্তু তার জন্য অনেক টাকা চাই৷ তাহলে কার মূল্য বেশি: মানুষ না জীবজন্তুর? লোস কোলোরাদোস ন্যাশনাল পার্কের কর্মী হর্খে ফেরার বলেন, ''আমাদের সত্যিই উভয়সংকট৷ সেই কারণে আমরা আপনাদের সঙ্গে মিলে একটা সমাধান বার করার চেষ্টা করছি৷ একটি সমাধান হলো পুনর্বাসন, কিন্তু ক্ষতি যাতে কম হয়, সেটাও আমরা দেখার চেষ্টা করছি; মানুষজনকে বোঝানোর চেষ্টা করছি, পরিবেশকে বাঁচানো কতটা দরকারি কাজ৷''

ন্যাশনাল পার্ককে বাঁচানোর জন্য অরণ্যরক্ষীরা অপর একটি দীর্ঘমেয়াদি পন্থা নিয়েছেন, যার নাম হল শিক্ষা৷ কাছের শহর থেকে একদল কিশোর-কিশোরী এসেছে, তাদের অনেকেই পার্কের ভিতরকার বস্তিতে থাকে৷ আগে এটা শুধু একটা গিরিসংকট নয়, মালিবু উপজাতির লোকেদের প্রার্থনার জায়গা ছিল৷ মালিবু-রা ছিল প্রকৃতি উপাসক৷ হর্খে ফেরার বললেন, ''আমরা আবার সেই ট্র্যাডিশন চালু করে কিশোর-কিশোরীদের দেখাতে চাই, প্রকৃতি আগে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যাতে ওরা ওদের পূর্বপুরুষদের মতোই প্রকৃতিকে গুরুত্ব দিতে শেখে৷''

জীবজন্তুরা ছিল ভাইয়ের মতো

সেই পূর্বপুরুষরাই পাথরে এই সব চিহ্ন কুঁদে রেখেছেন৷ কয়েকশ' বছর আগেও মালিবু-রা এখানে বাস করত৷ লোস কোলোরাদোস ন্যাশনাল পার্কের কর্মী ফ্রান্সিস্কো ওসোরিও জানালেন, ''সব জীবজন্তুরা ছিল তাদের ভাইয়ের মতো৷ জাগুয়ার নামের চিতাবাঘটা ছিল এক ধরনের দেবতা৷ সেই দেবতাকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এই প্রতীকটা ব্যবহার করা হতো৷'' কিশোর-কিশোরীরা এই প্রথমবার তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে চিনতে শিখছে৷ ফ্রান্সিস্কো ওসোরিও বলেন, ''তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ ভবিষ্যতে জীববিজ্ঞানী হবে, অথবা জীববিজ্ঞান পড়ার সুযোগ পাবে, বলে আমরা আশা করছি৷ আমরা যদি না রাখি, তাহলে এ সবের কোনো অর্থ নেই৷ আমরা এ বিষয়ে যত কম জানব, আমাদের কাছে এর গুরুত্ব ঠিক ততটাই কম হবে৷''

একটা খেলার মধ্যে দিয়ে কিশোর-কিশোরীরা এই সব পুরনো প্রতীক আর ন্যাশনাল পার্কের জন্তুজানোয়ারদের চিনতে শিখছে৷ স্কুলের ছাত্রী মারিয়া হোসে অর্তেগা মেলেন্দে বলে, ''প্রথমবার দেখলে খুব আশ্চর্য লাগে৷ ঠিক বর্ণনা করা যায় না৷ এখানে বেশ কিছু অদ্ভুত জীবজন্তু আছে৷''

একটি জীবের আর দেখা পাওয়া যায় না: সেটি হল জাগুয়ার৷ তবে সে আবার ফিরবে বলে সকলের আশা৷ জাগুয়ারের সম্মানে আর মালিবুদের স্মরণে হর্খে ও তাঁর সহকর্মীরা 'জাগুয়ার ফেস্টিভালের' আয়োজন করেছেন৷ বছরে একবার করে শহরের মানুষরা আসেন, প্রকৃতির কোলে প্রকৃতিকে উদযাপন করতে৷ হর্খে এবং পার্ককর্মীদের পক্ষে এই উৎসব সফল হয়েছে৷ তাঁদের কথায়, ''আমরা খুশি, সুখি৷ আমরা আশা করছিলাম যে অনেকে আসবেন আর ঘটেছেও তাই৷ সেটাই হলো আমাদের নীতির সাফল্য৷ কাজেই আমি খুব খুশি যে এতো কচিকাঁচারা এসেছে৷''

এই সব ছেলে-মেয়েরা যদি পরিবেশ সচেতন হয়ে বড় হয়ে ওঠে, তাহলে তারাই ন্যাশনাল পার্ক রক্ষায় সাহায্য করবে, বলে হর্খের আশা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ