ল্যান্ডমাইন খুঁজে দিচ্ছে ধেড়ে ইঁদুর
১০ আগস্ট ২০১৫১৯৯২ সালে মোজাম্বিকের গৃহযুদ্ধ শেষ হয়৷ কিন্তু আজও মানুষ ইচ্ছামতো সব জায়গায় যেতে পারেন না৷ কারণ মাটির নীচে লুকোনো ল্যান্ডমাইন৷ হাজার-হাজার মানুষ মাইন বিস্ফোরণের শিকার হয়েছেন৷ যেমন আরেন্টিন কোনিয়া৷
এখন এক স্পেশাল টিম মোজাম্বিকের মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে৷ আফ্রিকায় ৭০ জন প্রশিক্ষকদের দলে রয়েছেন নিকো৷ তাঁরা ধেড়ে ইঁদুরদের মাইন খুঁজতে শেখান৷ আজ প্রশিক্ষণের দিন৷ নিকো প্রতিভাবান ইঁদুর ‘মিস মার্পেল'-কে শোঁকার ক্লাসে নিয়ে যাচ্ছেন৷ সে গত দুই বছরের প্রশিক্ষণে টিএনটি বিস্ফোরকের গন্ধ শনাক্ত করতে শিখেছে৷ সে জানে, গন্ধ শুঁকে মাটির নীচে লুকানো মাইন চিহ্নিত করতে পারলে সুস্বাদু পারিশ্রমিক পাওয়া যায়৷
ট্রেনিং সেশন-এর পর এবার সরকারি অভিযান৷ নিকো ও তাঁর সহকর্মীরা ধেড়ে ইঁদুরদের নিয়ে লুকোনো মাইন খুঁজতে বেরোতে চান৷ সুরক্ষার সরঞ্জাম সঙ্গে রাখতে হয়৷ সিসা দিয়ে তৈরি বর্ম মাইনের উড়ন্ত টুকরো ও পাথর থেকে রক্ষা করবে৷ টানটান উত্তেজনার পরিবেশ৷ আগেই প্রত্যেকটি পদক্ষেপের পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং ধীরে ধীরে কাজ চলছে৷ এমনকি মিস মার্পেল-ও দুশ্চিন্তা টের পাচ্ছে৷ সে চিহ্নিত অংশে টহল দিচ্ছে৷ নিকো তার প্রতি কড়া নজর রাখছেন৷
মনে হচ্ছে মিস মার্পেল কিছু শনাক্ত করেছে৷ সে তার প্রথম মাইন খুঁজে পেয়েছে৷ জায়গাটা প্রথমে চিহ্নিত করা হচ্ছে, পরে মাইন নিষ্ক্রিয় করা হবে৷ তারপর খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু হবে৷ মিস মার্পেল তার পারিশ্রমিক পেয়ে খুশি৷ মাইন চিহ্নিত করা হয়েছে৷ খেয়াল রাখতে হবে, ডিমাইনার যাতে মাইনের উপরের অংশ ছুঁতে না পারে৷ মাত্র ৬ কিলোগ্রাম ওজনই বিস্ফোরণ ঘটানোর ক্ষমতা রাখে৷ অর্থাৎ ধেড়ে ইঁদুরদের বিপদের কোনো কারণ নেই৷
একবার মাইনের উপরের মাটি সরানোর পর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা কাজে নেমে পড়েন৷ বালুর বস্তা বসিয়ে বিস্ফোরণের জোর কমানো হয়৷ ১০০ গ্রাম বিস্ফোরকই এই মাইন ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট৷
অভিযান সফল হয়েছে৷ মিস মার্পেল-এর শনাক্ত করা মাইন দূর করা গেছে৷ আগামী ৪ মাস ধরে নিকো ও তাঁর সহকর্মীরা ধেড়ে ইঁদুরদের সাহায্যে চিরুনি তল্লাশি চালাবেন৷ তারপর মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে৷ মোজাম্বিকের মানুষ এই সাহায্যের যথেষ্ট কদর করেন৷ অবশেষে স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারবে৷
আর মিস মার্পেল? সে ভালই কাজ করেছে৷ গ্রামের মানুষ তাকে নিজেদের ছোট্ট হিরো হিসেবে আদর-যত্ন করছে৷