বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত দুই হাজার ৮৫৬ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে৷ মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ হাজার ৩৭৯ জনে৷
বিজ্ঞাপন
করোনার প্রথম সংক্রমণ শুরু হয়েছিল চীন থেকে৷ দেশটিতে এখন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮৪ হাজার ২২৮ জন৷ সেই বিবেচনায় আক্রান্তের সংখ্যায় চীনের উপরে রয়েছে বাংলাদেশ৷
গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে ৪৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন৷ মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৩৯ জনে৷
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৭৮ জন৷ এখন পর্যন্ত কোভিডমুক্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৮২৭ জন৷
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে সবশেষ তথ্যগুলো তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. নাসিমা সুলতানা৷ তিনি জানান, নতুন করে ১৬ হাজার ৬৩৮ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে৷ মোট পরীক্ষা করা হয়েছে চার লাখ ৮৯ হাজার ৯৬০ টি৷
ব্রিফিংয়ে নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘‘মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, অন্যান্য জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, প্রশাসন অন্যান্য সকল পেশার মানুষ এবং সাধারণ জনগণ (আক্রান্তের) এই সংখ্যা এবং পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, মৃত্যুর তালিকাও দীর্ঘ হচ্ছে৷ স্বাস্থ্যসেবা, আইনশৃঙ্খলা এবং অন্যান্য সেবাদানকারীগণ তাদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে কাজ করলেও এই সংখ্যা এবং পরিসংখ্যানকে নিম্নমুখী করা যাবে না, যদি না আপনারা অর্থাৎ আমরা জনগণ সচেতন না হই, স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে না মানি৷’’
এফএস/জেডএ
করোনার বিরুদ্ধে কারা জেতে, কারা জেতে না
ফুটবলে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সমানে সমানে লড়ে, কিন্তু এই লড়াইয়ে ব্রাজিল পাত্তাই পায় না৷ ৪৫ বছর আগের এক যুদ্ধের মতো পুঁচকে ভিয়েতনামের কাছে আবার লজ্জা পায় যুক্তরাষ্ট্র৷ করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধের আরো কিছু বিষয় থাকছে ছবিঘরে..
ছবি: Getty Images/AFP/S. Lima
দেশ অপ্রস্তুত আর প্রেসিডেন্ট একগুঁয়ে হলে যা হয়
চীনে করোনা সংকট দেখা দেয়ার দু’মাস পরও যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাসামগ্রীর ঘাটতি, করোনা টেস্ট শুরু করায় বিলম্ব, ইটালিতে মৃত্যুর মিছিল দেখেও করোনাকে ট্রাম্পের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, মধ্য এপ্রিলেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চাওয়া- ইত্যাদির উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি৷ বিশেষজ্ঞরা যা চান ট্রাম্প তার ঠিক বিপরীত দিকে হাঁটতে চেয়েছেন৷ ফলাফল পরাশক্তি হয়েও করোনার কাছে নাস্তানাবুদ হওয়া৷
শীতল যুদ্ধের যুগ আর নেই৷ তবে এ যুগেও কমিউনিস্ট শাসিত কিউবা আর যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক মধুর হয়নি ৷ যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃত্যু এক লাখ ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে, অথচ কিউবায় মারা গেছে মাত্র ৮৩ জন৷ হোক না মাত্র এক কোটি ১৪ লাখ মানুষের দেশ, করোনাকে এভাবে বোতলবন্দি করলো কিভাবে তা-ই এখন কৌতুহলের কেন্দ্রে৷ গার্ডিয়ান বলছে, শুরু থেকে সপ্তাহের সাতদিন ঘরে ঘরে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করে তা সম্ভব করেছে কিউবা৷
ছবি: pictrure-alliance/AP Photo/I. Francisco
বিশেষজ্ঞরা স্বেচ্ছাচারিতার কবলে পড়লে যা হয়
লকডাউন প্রশ্নে ট্রাম্পের বিরোধিতা করে কোণঠাসা হয়েছেন জাতীয় অ্যালার্জি ও সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের প্রধান ডা, অ্যান্থনি ফাউচি, একই বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর বিরোধিতা করে দায়িত্ব হারিয়েছেন ব্রাজিলের দুই স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ সামাজিক দূরত্ব মানার সরাসরি বিরোধিতা করা বলসোনারোর দেশও এখন ধুঁকছে৷ গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে কিউবার চেয়ে সত্তর গুন পিছিয়ে আছে ব্রাজিল৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Lima
ভিয়েতনাম হলে যা হয়
ভিয়েতনামও করোনার বিরুদ্ধে দারুণ সফল৷ দেশ ছোট আর অর্থনীতি দুর্বল হলেও বড় যুদ্ধে ভিয়েতনাম কখনো হারেনি৷ ৩৫ বছর আগে সামরিক যুদ্ধে ব্যর্থ হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, এখন ব্যর্থ হচ্ছে করোনা ভাইরাস৷ দ্রুত সীমান্ত বন্ধ করা, অল্প সময়ে বেশি পরীক্ষা করানো, সামাজিক দূরত্ব, লকডাউন- সব নিয়ম কঠোরভাবে মেনে সফল হয়েছে ভিয়েতনাম৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Hau Dinh
সরকার এবং সরকারপ্রধান অপরিনামদর্শী না হলে যা হয়
জনমনে অসন্তোষ দেখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট বন্ধ করেছিল ব্রাজিল সরকার৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা আবার চালু হয়েছে৷ ফুটবলে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে আর্জেন্টিনা ২৬ হাজারের মতো সংক্রমণ আর মাত্র ৭৮৭ জন করোনায় মৃত্যু নিয়ে এখনো অনেক ভালো অবস্থায়৷ আর্জেন্টিনার জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে চার কোটি, বিপরীতে ব্রাজিলের জনসংখ্যা ২১ কোটির কাছাকাছি হলেও ব্যবধানটা কিন্তু সেই তুলনায় অনেক বড়!
ছবি: Getty Images
করোনাকে বেশি সময় দিলে যা হয়
করোনা যখন হানা দিলো, তখন পরীক্ষার প্রস্তুতি, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের জোগান- সব কিছুরই ঘাটতি ছিল ইউরোপের দেশটিতে৷ লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব মানতে চাননি অনেকে৷ ফলে বিপদ বেড়েছে দ্রুত৷ এখন পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক৷ এ পর্যন্ত ইটালিতে ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ ডাক্তার মারা গেছেন একশ’রও বেশি৷ বেশির ভাগ ডাক্তারই মারা গেছেন পিপিই ছাড়া চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/E. Mattia Del Punta
ছোট দেশও ‘গাইডলাইন’ মানলে যা হয়
প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডার্ন জানিয়েছেন, নিউজিল্যান্ডে আর করোনায় সংক্রমিত রোগী নেই৷ বিশ্লেষকরা বলছেন মূলত গাইডলাইন মেনে চলার কারণেই এমন সাফল্য এসেছে৷ ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের স্কুল অব ফার্মাসির শিক্ষক ওকসানা পাইসিক বলেন, ‘‘ প্রথমে খুঁজে বের করা, তারপর টেস্ট করা, আইসোলেট করা, প্রত্যেক রোগীকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা, সংক্রমণ ধরা পড়লে কোয়ারান্টিনে পাঠানো- এসব মেনেই নিউজিল্যান্ড সফল হয়েছে৷’’