1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার

সমীর কুমার দে, ঢাকা১৮ এপ্রিল ২০১৬

প্রবীণ সাংবাদিক ও লেখক শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তাঁর তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যার পরিকল্পনা করার অভিযোগে তাঁকে আটক করা হয়৷

পুলিশ
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman

শনিবার ভোরে শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করার পর ঐ দিনই তাঁকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ৷ বর্তমানে তিনি গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতেই আছেন৷

এ প্রসঙ্গে মানবাধিকার কর্মী নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শফিক রেহমানকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি৷ তাঁর বিরুদ্ধে যদি সত্যি এই ধরনের অভিযোগ থাকে, তাহলে আদালত থেকে পরোয়ানা এনেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা যেত৷ এছাড়া তাঁকে গ্রেপ্তারের সময় সাদা পোশাকের পুলিশ সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বাসায় ঢোকে৷ এতে সাধারণ মানুষের কী ধারণা হবে? উল্টে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে৷ মানুষ মনে করবে, বিরোধী মত দমনের অংশ হিসেবে সরকার শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করেছে৷''

শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তারের কারণ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত রয়েছে৷ পুলিশ সুনির্দিষ্ট মামলা দেখিয়ে গ্রেপ্তার করলেও বিএনপির নেতারা মনে করছেন, শফিক রেহমানকে যে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, সেটা তাঁকে আটকের মূল কারণ নয়৷ তাঁদের মতে, বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবীদের চাপে রাখতেই শফিক রেহমানকে ধরা হয়েছে৷ আবার কারও কারও ধারণা, কূটনৈতিক পর্যায়ে শফিক রেহমানের যোগাযোগ থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷

নূর খান

This browser does not support the audio element.

রবিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের বলেন, সুনির্দিষ্ট মামলায় এবং পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ অবশ্য নির্দোষ প্রমাণিত হলে তিনি ছাড়া পাবেন৷

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক নেতা কামাল উদ্দিন সবুজ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘একজন প্রবীণ সাংবাদিককে এভাবে গ্রেপ্তার করা ঠিক হয়নি৷ আমি এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই৷ শফিক রেহমান দীর্ঘদিন ধরে লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত৷ যারা তাঁর সমালোচনা সহ্য করতে পারেনি তারাই এভাবে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে৷ বিরোধী মতের মানুষকে সরকার কোনোভাবেই সহ্য করতে পারছে না৷ এটা একটা গণতান্ত্রিক দেশে কাম্য হতে পারে না৷ গণতান্ত্রিক দেশে সব মতের মানুষের কথা বলার সুযোগ থাকতে হবে৷''

ওমর ফারুক

This browser does not support the audio element.

শফিক রেহমানকে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে৷ সোমবার ছিল তাঁর রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন৷ মামলার তদন্ত-তদারক কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সজীব ওয়াজেদ জয়কে অ্যামেরিকায় হত্যার ষড়যন্ত্র শুরু হয় ২০১১ সালে৷ এর অংশ হিসেবে ২০১২ সালে জাসাসের (জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠন) সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের বাসায় একটি বৈঠক হয়৷ এতে মোহাম্মদ উল্লাহ, তাঁর ছেলে রিজভী আহমেদ (সিজার) এবং এফবিআই-এর এক প্রতিনিধি অংশ নিয়েছিলেন৷ এ বিষয়ে বর্তমানে শফিক রেহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে৷

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশের) সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সাংবাদিক হিসেবে তো আর শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়নি৷ তিনি একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত৷ ফলে এটা সরকার ও প্রশাসনের বিষয়৷ এছাড়া রিমান্ডে নেয়ার বিষয়ে আমি বলব, একজন অপরাধী যে বয়সেরই হোক না কেন তার অপরাধ বিচার করে রিমান্ডে নেয়া হয়৷ সাধারণ একটি চুরির মামলায় তো রিমান্ডে নেয়ার প্রয়োজন হয় না৷ কিন্তু বিষয়টি যদি রাষ্ট্রীয় হয় বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তির বিষয়ে হয়, তাহলে রিমান্ডে নেয়া যেতেই পারে৷ এখানে আমি সাংবাদিক নেতা হিসেবে কিছু বলতে পারি না৷''

কামাল উদ্দীন সবুজ

This browser does not support the audio element.

গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এই মামলায় ‘আমার দেশ' প্রত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কারাবন্দি মাহমুদুর রহমানের নামও এসেছে৷ তাদের কথায়, শফিক রেহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা ও অপহরণের ষড়যন্ত্রে মাহমুদুর রহমানের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে৷ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই মামলার সঙ্গে মাহমুদুর রহমানেরও সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে৷ তাই সোমবার মাহমুদুর রহমানকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে৷ আদালত আগামী ২৫ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করেছে৷

জানা গেছে, মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৭৩টি মামলা রয়েছে৷ এর মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় তাঁর তিন বছর সাজাও হয়৷ সেই জেলেও আছেন প্রায় তিন বছর৷ তবে ইতিমধ্যে ৭১টি মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ