1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শরণার্থীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা অপ্রতুল

গ্রেহেম লুকাস/এসিবি১২ জুন ২০১৫

পূর্ব আফ্রিকা বা মধ্যপ্রাচ্য থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে শরণার্থীদের যে স্রোত ইউরোপে আসছে, কয়েকটি দেশে তা বড় রকমের চাপ তৈরি করছে৷ গ্রেহেম লুকাস মনে করেন, ইউরোপে শরণার্থীরা যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা পান, তা যথেষ্ট নয়৷

Bootsflüchtlinge Lampedusa Immigranten Flüchtlinge Europa Syrien
ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS

ভূমধ্যসাগর থেকে কোনো বিপর্যয়ের খবর আসে না এমন দিন আজকাল কমই পাই৷ এ বছর ইটালি হয়ে ইউরোপে ঢুকতে গিয়ে ইতিমধ্যে কয়েক হাজার মানুষ সাগরে ডুবেছে৷ কয়েক হাজার এমন ভাগ্যবানও আছেন, যাঁদের ইউরোপীয় ইউনিয়নের গড়ে তোলা নৌ-টহল বাহিনী উদ্ধার করেছে৷ তাঁরা রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারছেন৷ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যেমনটি হচ্ছে, এই শরণার্থীদের সঙ্গে ইউরোপ সেরকম করছে না, অর্থাৎ, তাঁদের ফিরিয়ে দিচ্ছে না বা জাহাজগুলো টেনে সাগরের মাঝখানে ছেড়ে দিয়ে আসছে না৷ সমস্যাটিকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখছে ইউরোপ, যা নিশ্চয়ই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য৷ তবে এ কথাও মনে রাখতে হবে যে, ইউরোপ কিন্তু এ সব নিজের স্বার্থেই করছে৷

গ্রেহেম লুকাস, ডয়চে ভেলে

ইউরোপের বেশির ভাগ দেশেই জন্মহার ক্রমাগত কমছে৷ এ কারণে কোথাও কোথাও জনসংখ্যা কমেও যাচ্ছে৷ অথচ ইউরোপের কাঙ্খিত উন্নয়ন কিন্তু আমাদের সার্বিক আর্থিক অবস্থার ওপর নির্ভরশীল৷ কর্মক্ষম বয়সের দক্ষ কর্মী যথেষ্ট থাকলেই কেবল আমরা যে মানের জীবনযাপনে অভ্যস্থ, তার উপযোগী সম্পদ ইউরোপের অর্থনীতি জোগান দিতে পারবে৷ এ কারণেই আমাদের অভিবাসী দরকার৷

ইউরোপের রাজনীতিবিদরা এ বাস্তবতা বুঝতে শুরু করেছেন৷ সম্প্রতি জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, জার্মানি অভিবাসীদের দেশ৷ প্রচলিত ধারণা কতটা বদলাচ্ছে তাঁর এ কথা থেকেই তা বোঝা যায়৷ কয়েক বছর আগে জার্মানির কোনো নেতার মুখে এমন মন্তব্য একেবারে অকল্পনীয় ছিল৷ ম্যার্কেল আসলে জানেন যে, তাঁর নিজের মধ্য-ডান খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দলের ভেতরে এ বিষয়ে কিছুটা মতবিরোধ থাকলেও দেশের বেশির ভাগ মানুষ তাঁর পাশে আছে৷ তবে বিরুদ্ধবাদীরা সংখ্যায় কম হলেও সরব৷ কম বেতনের চাকরি করছেন এমন অনেকেই অভিবাসীদের নিজেদের জন্য হুমকি মনে করেছেন৷

ইউরোপের আরো কিছু দেশেও এখন প্রায় একই অবস্থা৷ সেসব দেশে ভূমধ্যসাগর থেকে ধেয়ে আসা শরণার্থীদের বিষয়ে উদ্বেগ, অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে৷ উগ্র-ডানপন্থি দলগুলো এই অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ভিত শক্ত করছে৷ ম্যার্কেল অভিবাসীদের প্রসঙ্গে কিছু বৈপ্লবিক মন্তব্যও করেছেন৷ তিনি এও বলেছেন, যেসব অভিবাসন প্রত্যাশীর বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা এবং কম্পিউটার বিষয়ক কাজে দক্ষতা আছে, তাঁদের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার কোনো দরকার নেই, জার্মানি তাদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত – এ বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত থাকতে পারেন৷ কথাটি অবশ্য ম্যার্কেল জার্মানির পূর্বাঞ্চলে দানা বেঁধে ওঠা ছোট অথচ সোচ্চার এক বিদেশি-বিরোধী আন্দোলনের জবাবে বলেছিলেন৷

ফ্রান্স, জার্মানি, হল্যান্ড এবং ব্রিটেনের মতো কয়েকটি দেশের রাজনীতিতে উগ্রতা বাড়ছে৷ উগ্র-ডানপন্থিরা উঠে আসছে৷ বেশ চিন্তার বিষয়৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাধ্যমে ইউরোপে অভিবাসীদের জন্য অবিলম্বে একটি সুসংবদ্ধ নীতিমালা প্রণয়ন করা দরকার৷ ইউরোপ এখনো তা করে উঠতে পারেনি৷

ফলে নিরাপদ আশ্রয় এবং ভালো কাজের আশায় দক্ষিণ ইউরোপে যে অভিবাসন প্রত্যাশীরা আসছেন, অনেক সময়ই তাঁরা এমন জায়গায় এসে পড়ছে যেখানে তেমন একটা সুযোগ নেই এবং যেখানে তারা অনাহূত৷ কালাইসের আফ্রিকান অভিবাসনপ্রত্যাশীরা নৌকায় করে লুকিয়ে ব্রিটেনে ঢোকার চেষ্টা করছে৷ প্যারিসে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে অনেক গৃহহীন মানুষ৷ তাই, একটি বিষয় খুব পরিষ্কার যে, ইউরোপ অভিবাসনের সমস্যাটিকে যথাযথভাবে সামাল দিচ্ছে না৷ এটা খুবই উদ্বেগের৷ ইউরোপীয় পর্যায়ে শিগগিরই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করা দরকার৷ ইউরোপের অভিবাসীর দরকার আছে৷ তবে উগ্র-ডানপন্থিদের দৌরাত্ম্য আরো বেড়ে যাওয়ার বিপদ নিয়ন্ত্রণের কথা মাথায় রেখেই সব কাজ করতে হবে৷ মনে রাখা দরকার, ইউরোপীয় গণতন্ত্রে সংখ্যাগুরুর মেধা ও মননের লড়াইয়ে জয়লাভ এখনো অনেক বাকি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ