লিবিয়া থেকে ইউরোপে আসতে ইচ্ছুকদের ধর্ষণ, নির্যাতন এবং হত্যার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে ইটালির পুলিশ৷গ্রেপ্তার হওয়া তিন জনের মধ্যে দু'জন মিশরীয় আর বাকি এক জন গিনি বিসাউয়ের৷
বিজ্ঞাপন
গ্রেপ্তার হওয়া গিনি বিসাউয়ের নাগরিকের বয়স ২৭ বছর আর মিশরের দুজনের বয়স ২৪ ও ২৬ বছর৷ ইটালির বিভিন্ন শিবিরের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অভিযোগ — ওই তিন ব্যক্তি লিবিয়ার জাওয়াই-এ সাবেক সেনাঘাঁটিতে ডিটেনশন ক্যাম্প খুলেছেন৷ ভূমধ্য সাগর পাড়ি দিয়ে যাঁরা ইউরোপে ঢুকতে চান, তাঁদের পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দিতেন ওই ব্যক্তিরা৷ আগেভাগে চুক্তি অনুযায়ী টাকা দিতে ব্যর্থ ব্যক্তিদের ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হতো৷ তারপর শুরু হতো অকথ্য নির্যাতন৷
অবাধে ধর্ষণ, নির্যাতন, হত্যা
জীবন বাজি রেখে ইউরোপের পথে
অভিবাসনের আশায় বিভিন্ন দেশ থেকে অনেকেই ইউরোপে আসছেন৷ ইটালির ‘পাসো ডেলা মর্তে’ হয়ে ইউরোপের আরো উত্তরের দেশগুলোতে আসতে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন অনেকে৷ ফটোসাংবাদিক ফেডেরিকো স্কপা ছিলেন তেমন শরণার্থীদের সঙ্গে....
ছবি: DW/F.Scoppa
গহীন জঙ্গল, দুর্গম পথ
জঙ্গলের ভেতর দিয়ে সভয়ে এগিয়ে চলেছে আফগান কিশোরদের একটি দল৷ সব সময় ভয় – পুলিশ যদি দেখে ফেলে! এই ভয় নিয়ে, দুর্গম পাহাড়ি পথ ধরেই পেরোতে হবে ‘ডেথ পাস টু ফ্রান্স’৷ যাত্রা শেষ হতে এখনো ১২ কিলোমিটার বাকি৷
ছবি: DW/F.Scoppa
পদে পদে বিপদ
ইটালির ভেনটিমিগলিয়া শহর আর ফ্রান্সের মেতোঁর মাঝখান দিয়ে এক সময় হাইওয়ের টানেলের ভেতর দিয়ে, কখনো রেলপথ ধরে, কখনো বা গিরিপথ ধরে হেঁটে হেঁটে এগিয়ে যেতে হয়৷ যে কোনো মু্হূর্তেই ঘটে যেতে পারে সমূহ বিপদ৷
ছবি: DW/F.Scoppa
তীব্র গতি, দৃষ্টি ক্ষীণ
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের্ অনেকেই প্রাণ হাতে নিয়ে এই হাইওয়ে টানেল ধরে ধরে হেঁটে পৌঁছাতে চান ফ্রান্স৷ জীবনের ঝুঁকি তাদের প্রায় প্রতি পদক্ষেপে৷
ছবি: DW/F.Scoppa
প্রকৃতির আশ্রয়ে, প্রকৃতির ভরসায়
কীভাবে যেতে হবে তা না জেনে, সঙ্গে কোনো খাবার না নিয়েও ‘ডেথ পাস’ দিয়ে যাত্রা শুরু করেন অনেকে৷ প্রকৃতির উদারতাই তাদের একমাত্র ভরসা৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতীয় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুখতে ফরাসি সরকার তৈরি করেছিল এই প্রাচীর৷ শান্তির পতাকাও ওড়ানো হয় তখন৷ ইটালি ও ফ্রান্স সীমান্তের এই এলাকটি অভিবাসন প্রত্যাশীদের খুব পরিচিত রুট৷
ছবি: DW/F.Scoppa
ওই দেখা যায়..
৩০০ মিটার দূরেই ‘ডেথ পাস’-এর শীর্ষ বিন্দু৷ সেদিকেই তাকিয়ে আছে সদ্য কৈশোর উত্তীর্ন তিন অভিবাসন প্রত্যাশী৷ এখানে অনেকেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে৷ পুলিশ ধরলেই ফিরিয়ে দেয় ইটালিতে৷
ছবি: DW/F.Scoppa
7 ছবি1 | 7
গিনি বিসাউ এবং মিশরের তিন ব্যক্তি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে প্রথমে ইটালির লাম্পেদুসায় যান, সেখান থেকে যান সিসিলিতে৷ সেখানেই গ্রেপ্তার করা হয় তাদের৷ গ্রেপ্তার করার আগে ইটালির বিভিন্ন শিবিরে থাকা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়৷
অভিবাসনপ্রত্যাশীরা পুলিশকে জানান, টাকা দিতে না পারলে লিবিয়ার ডিটেনশন ক্যাম্পে তাদের লাঠি, বৈদ্যুতিক তার, রাইফেলের বাট দিয়ে পেটানো হতো৷ অনেক সময় ইলেক্ট্রিক শকও দেয়া হতো তাদের৷ নির্যাতনের ফলে অনেক মানুষকে মৃত্যু বরণ করতে দেখেছেন বলেও জানান তাঁরা৷ পালাতে গেলে গুলি করে মেরে ফেলা হতো৷ এছাড়া নারীদের সুপরিকল্পিতভাবে ধর্ষণ করা হতো বলেও জানিয়েছেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা৷ এসব কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ইটালির পুলিশ৷