অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ইউরোপের উত্তরের দেশগুলোতে পৌঁছাতে শরণার্থীরা বলকান অঞ্চলের দেশগুলো পার হয়৷ তবে এখন থেকে এই পথ কঠিন করে তুলেছে স্লোভেনিয়া আর ক্রোয়েশিয়া৷
বিজ্ঞাপন
রাষ্ট্র দু'টি বুধবার থেকে তাদের দেশে বিদেশিদের প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করেছে৷ ফলে যে বিদেশিরা স্লোভেনিয়ায় প্রবেশের শর্ত পূরণ করবে শুধু তাদেরই প্রবেশ করতে দেয়া হবে৷ আর যারা আশ্রয় পেতে আগ্রহী কিংবা অভিবাসী হতে আগ্রহী তাদের প্রবেশাধিকার দিতে মানবিক কারণ ও শেঙেনের নিয়মকানুন মানবে স্লোভেনিয়া৷ ক্রোয়েশিয়াও একই নীতি অনুসরণ করছে৷
স্লোভেনিয়ার এই সিদ্ধান্ত অনুপ্রাণিত করেছে সার্বিয়াকে৷ মেসিডোনিয়া ও বুলগেরিয়ার সঙ্গে তাদের যে সীমান্ত রয়েছে সেদিক দিয়ে বিদেশিদের প্রবেশের ক্ষেত্রে তারাও একই নীতি অনুসরণ করার ঘোষণা দিয়েছে৷
এদিকে, গ্রিস ও তুরস্কের মধ্যে মঙ্গলবার একটি চুক্তি সই হয়েছে৷ এর ফলে ইউরোপ যেসব অভিবাসীদের (যারা ইতিমধ্যে ইউরোপে পৌঁছে গেছে) না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেবে তাদেরকে ফিরিয়ে নেবে তুরস্ক৷ বিনিময়ে তুরস্কের কয়েকটি শর্ত মেনে নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ যেমন তুরস্কে যে ২৭ লক্ষ সিরীয় শরণার্থী রয়েছে তাদের জন্য ইইউ আরও তিন বিলিয়ন ইউরো দেবে৷ এর আগেও তিন বিলিয়ন ইউরো দেয়ার অঙ্গীকার করেছিল ইইউ৷ এছাড়া ইইউ তুরস্কের নাগরিকদের ভিসা ছাড়াই তাদের অঞ্চলে প্রবেশের সুবিধা দেবে এবং সেটি জুন মাস থেকেই শুরু হবে৷
The Q&A on refugee summit
02:17
২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সোয়া লক্ষের বেশি শরণার্থী ইউরোপে প্রবেশ করেছে৷ এই সংখ্যা কমাতে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে ইইউ৷ তুরস্কের সঙ্গে চুক্তি তারই একটি অংশ৷ ইইউ এই চুক্তিকে স্বাগত জানালেও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার প্রধান চুক্তির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও এর সমালোচনা করেছে৷ ডয়চে ভেলের বারবারা ভেসেল মনে করছেন, ইউরোপের সবাই ক্রমেই যেন ‘দুর্গ ইউরোপ'-এর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন৷
তুরস্কের ইজমিরে বসবাসরকারী সিরিয় শরণার্থীর সংখ্যা ৮৫ হাজারের মতো৷ তাদের সেখানে স্থির হতে সহায়তা করেছে কয়েকটি দাতা গোষ্ঠী এবং স্বেচ্ছাসেবীরা৷
ছবি: DW/D. Cupolo
শরণার্থীদের দোকান, রেস্তোরাঁ
ইজমিরের বাসমানি জেলা মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের এলাকা হিসেবে পরিচিত৷ সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে শরণার্থীদের দোকান-পাটের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে৷ অনেক সিরীয় এখানে বসবাস করেন৷ এদের অনেকে আবার তুর্কী বন্ধুদের নামে দোকান খোলেন, জানান রিলিফ সোসাইটির এক সদস্য৷
ছবি: DW/D. Cupolo
বেকার এবং অবহেলিত
শরণার্থীদের জন্য নিত্যদিনের বিল পরিশোধ অনেক সমস্যার মধ্যে একটি সমস্যা৷ তারা তাদের বেকার জীবনের অধিকাংশ সময় কাটান ক্যাফেতে বসে৷ অনেকেই সাধারণ স্বাস্থ্য সেবাও পান না৷ জার্মান মেডিক্যাল শিক্ষার্থী লিয়া ভিল্মসেন সেখানে অনেক শরণার্থীকে বিনা খরচায় চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন৷
ছবি: DW/D. Cupolo
দোভাষীর সহায়তা
দোভাষীর সহায়তায় শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন ভিল্মসেন৷ তাদের বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা করেন তিনি৷ ছবির শিশুটির শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ ভিল্মসেন মনে করেন, দু’টি ছোট্ট রুমে ১৪ জন মানুষ বসবাস করছেন৷ ফলে এই সমস্যা৷
ছবি: DW/D. Cupolo
পথশিশুরা
লাইফ জ্যাকেটের দোকানের পাশে খেলছে এক শিশু৷ ইজমিরে থাকা অধিকাংশ শরণার্থী শিশু কিশোর নিয়মিত স্কুলে যায় না৷ তারা বরং বাড়িভাড়া জোটাতে ছোটখাট কাজ করে৷
ছবি: DW/D. Cupolo
শরণার্থী শিবির তৈরি
শরণার্থীদের জন্য কমিউনিটি সেন্টার তৈরির লক্ষ্যে একটি পরিত্যাক্ত ভবন সংস্কার করছেন ইউনিয়ন আয়োজক ইয়ালচিন ইয়ানিক৷ তিনি বলনে, ‘‘আমি শরণার্থীদের সেভাবে সহায়তা করছি, যেভাবে একসময় শ্রমিকদের সহায়তা করতাম৷’’
ছবি: DW/D. Cupolo
নির্ভরশীল করা নয়
আরেক স্বেচ্ছাসেবী ক্রিস ডাউলিং জানান, শরণার্থীদের এমনভাবে সাহায্য করা হয় যাতে তারা সাহায্যের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে না যান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের সমাজের সঙ্গে একীভূত করা, তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা এবং কাজে পেতে কিংবা নিজের মতো কিছু করতে সাহায্য করা৷’’
ছবি: DW/D. Cupolo
গৃহায়ন সমস্যা
মানবিক সাহায্য সংস্থা মার্সি কর্পস ইউরোপীয় অনুদানে চলে৷ সংস্থাটি সম্প্রতি ইজমিরে কাজ শুরু করেছে৷ মূলত শরণার্থীদের গৃহায়ন সমস্যা সমাধানে কাজ করে তারা৷