জার্মানিতে যারা আশ্রয়ের আবেদন করেন, প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের জনপ্রতি মাসে প্রায় সাড়ে তিনশ' ইউরো দেয়া হয়৷ এই সুযোগে একজন আশ্রয়প্রার্থী ১২টি ভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে প্রায় ৪৫ হাজার ইউরো নিয়েছেন বলে অভিযোগ৷
বিজ্ঞাপন
লোয়ার সাক্সনি রাজ্যের ব্রাউনশোয়াইগ শহর কর্তৃপক্ষের গঠিত একটি বিশেষ কমিশন এই তথ্য দিয়েছে৷ প্রতারণা করে কল্যাণ তহবিল থেকে টাকা নেয়ার ৩০০-র বেশি মামলার তদন্ত করছে কমিশন৷ আশ্রয়প্রার্থীরা এভাবে প্রায় ৩০ থেকে ৫০ লক্ষ ইউরো নিয়েছেন বলে অভিযোগ কমিশনের৷
জার্মান প্রচারমাধ্যম এনডিআর-এ প্রচারিত এক প্রতিবেদন বলছে, অভিযুক্ত আশ্রয়প্রার্থীদের বেশিরভাগই সুদানের৷ ২০১৫ সালে জার্মানিতে আসা আট লক্ষ আশ্রয়প্রার্থীর সঙ্গে তারাও এসেছেন বলে জানিয়েছেন কমিশন প্রধান ইয়র্ন মেমেঙ্গা৷ তিনি বলেন, অতিরিক্ত অর্থ পেতে অভিযুক্তরা বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে নিবন্ধিত হন৷ এভাবে একেকজন প্রায় তিন-চার ধরণের পরিচয় ব্যবহার করেন৷ ‘‘কখনো দাঁড়ি গজিয়ে, কখনো চশমা পরে, কখনো চুল ছোট করে একেক সময় একেক শেষ নাম ব্যবহার করেছে তারা,'' বলেন মেমেঙ্গা৷
জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন বেড়েছে
জার্মানির অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা বিএএমএফ বলছে, মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিলে রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা বেড়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Shkullaku
২.৩ শতাংশ বৃদ্ধি
জার্মানির অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা বিএএমএফ এর সবশেষ পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিল মাসে মোট ৫৯,৬৮০টি আবেদন পড়েছে৷ মার্চ মাসে সংখ্যাটি ছিল ৫৮,৩১৫, অর্থাৎ ১,৩৬৫টি কম৷
ছবি: Brian Leli
শীর্ষে সিরিয়া
সবচেয়ে বেশি আবেদন করেছেন সিরিয়ার নাগরিকরা৷ ২৫,৭৯১ জন৷ অবশ্য মার্চ মাসে সংখ্যাটি ছিল সাড়ে সাত শতাংশ বেশি৷ ২৭,৮৭৮ জন৷
ছবি: Fotolia
প্রথম চার মাসেও শীর্ষে সিরিয়া
২০১৬ সালের প্রথম চার মাসে এক লক্ষ ১৬ হাজার ৮২৬ জন সিরীয় নাগরিক জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন৷ আর সব দেশ মিলিয়ে আবেদনের সংখ্যা দুই লক্ষ ৪৬ হাজার ৩৯৩ জন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Nietfeld
ইরাকিদের সংখ্যা বেড়েছে
মোট হিসেবে সিরিয়ার পরেই আছে ইরাক৷ তবে সিরিয়ার ক্ষেত্রে আবেদনের সংখ্যা এপ্রিলের চেয়ে মার্চে বেশি হলেও ইরাকের ক্ষেত্রে হয়েছে উল্টো৷ অর্থাৎ মার্চের চেয়ে এপ্রিলেই বেশি ইরাকি আবেদন করেছেন৷ ৯,৫০৫ জন৷ মার্চে ছিল ৮,৯৮২ জন৷
ছবি: DW/R. Shirmohammadi
তৃতীয় স্থানে আফগানিস্থান
সিরিয়া ও ইরাকের পর তালিকায় তিন নম্বরে আছে আফগানিস্তান৷ এপ্রিলে ৮,৪৫৮ জন আফগান রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন৷ মার্চ মাসের চেয়ে সংখ্যাটি ১১.৮ শতাংশ বেশি৷
ছবি: DW/Omid
জাতীয়তা জানা নেই
জাতীয়তা ‘অস্পষ্ট’ এমন আবেদনের সংখ্যা এপ্রিলে ছিল ১,২৯৯ জন৷ সংখ্যাটি মার্চ মাসে ছিল আরও বেশি৷ ১,৮৬৯ জন৷
ছবি: Reuters/A.Konstantinidis
পাঁচ নম্বরে ইরান
১,৯৮১ আবেদন নিয়ে তালিকায় ইরানের নাম আছে পাঁচ নম্বরে৷ ছয়-এ আছে আলবেনিয়া (১,১৮৮ জন)৷ পাকিস্তানি আবেদনের সংখ্যা ১,০৩৮; আর ইরিত্রিয়ার ১,১৫২৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Shkullaku
7 ছবি1 | 7
একদিনে একসঙ্গে অনেক শরণার্থী নিবন্ধন করতে হওয়ায় সরকারি কর্মকর্তাদের পক্ষে সবকিছু যাচাই বাছাই করা সম্ভব হয়নি৷ মেমেঙ্গা জানান, এমনও সময় গেছে যখন একদিনে দুই হাজার শরণার্থীকে নিবন্ধন করতে হয়েছে৷ ‘‘তখন আমরা শুধু একটা বিষয়ই এড়াতে চেয়েছি - কেউ যেন গৃহহীন না থাকে,'' বলেন তিনি৷ সংকটের শুরুর দিকে অনেক শরণার্থীর শুধু ছবি তুলে নিবন্ধন করতে হয়েছে৷ ‘‘আঙুলের ছাপ নেয়া সম্ভব হয়নি,'' জানান মেমেঙ্গা৷
‘অ্যাসাইলাম সিকার অ্যাক্ট' অনুযায়ী, কোনো আশ্রয়প্রার্থীর দায়িত্ব যদি সরকার পুরোপুরি না নিতে পারে তাহলে তাকে ‘পকেট মানি' হিসেবে প্রতি মাসে ১৩৫ ইউরো আর ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে ২১৬ ইউরো দেয়া হয়৷ এই হিসেবে একেকজন অভিযুক্ত আশ্রয়প্রার্থী প্রতারণা করে হাজার হাজার ইউরো নিয়েছে৷ ‘‘এভাবে একজন অবৈধভাবে প্রায় ৪৫ হাজার ইউরো নিয়েছেন,'' বলেন মেমেঙ্গা৷
প্রতিবেদন: কেট ব্র্যাডি/জেডএইচ
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী
যেভাবে জার্মান শিখছেন উদ্বাস্তুরা
একদল রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী বন শহরের রাস্তা, বাজারঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন জার্মান ভাষাশিক্ষার কাজে৷ সেই সঙ্গে জার্মানির মানুষজন ও সংস্কৃতিও কিছুটা চেনা হয়ে যাচ্ছে৷ একেই বলে বোধ হয় ‘প্রোঅ্যাকটিভ’ পন্থায় ভাষা শেখা!
ছবি: DW/M. Hallam
উদ্বাস্তুদের জন্য ভাষাশিক্ষার পাঠক্রম
জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া এক কথা, এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করা আরেক কথা৷ কারণ তার জন্য প্রয়োজন জার্মান ভাষা শেখা৷ সেটা তো শুধু ক্লাসরুমের বেঞ্চিতে বসেই নয়, বাস্তব ও ব্যবহারিক জীবনেও জার্মান ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক কিছু শেখা যায় – যেমন বন শহরের পথেঘাটে৷
ছবি: DW/M. Hallam
‘ইন্টেগ্রেশন কোর্স’
বিদেশি-বহিরাগতকে সমাজে অন্তর্ভুক্ত করা, সমাজের অংশ করে তোলাকে জার্মানে বলে ‘ইন্টেগ্রেশন’৷ এসিবি লিঙ্গুয়া ল্যাঙ্গুয়েজ স্কুল রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য একটি বিশেষ ইন্টেগ্রেশন কোর্স চালু করেছে৷ সেই কোর্স অনুযায়ী পড়ুয়াদের মাঝেমধ্যে ক্লাসরুম ছেড়ে পথে বেরিয়ে অচেনা পথচারী বা দোকানিদের জার্মানে প্রশ্ন করতে বলা হয়েছে: ‘আচ্ছা, এটা কী ফল? ঐ সবজিটার নাম কী?’
ছবি: DW/M. Hallam
আনারসের আর্বি যেন কী?
দেখলে চিনতে পারার কথা৷ দামটা না লিখলেও চলে, কিন্তু ভবিষ্যতে কাজে লাগতে পারে...৷
ছবি: DW/M. Hallam
পরীক্ষায় নকল নয়, তবে শর্টকাট চলে
ছাত্রদের বলে দেওয়া হয়েছে মোবাইল ব্যবহার না করতে, বরং রাস্তা বা অন্যান্য খোঁজখবরের জন্য মানুষজনকে জার্মানে প্রশ্ন করতে৷ কিন্তু ধরুন যদি বাসাম-এর মতো কাউকে পাওয়া যায়, যে জার্মান আর আর্বি, দু’টো ভাষাই জানে, তাহলে তো পোয়াবারো!
ছবি: DW/M. Hallam
বেটোফেন যেন কবে জন্মেছেন?
লুডভিশ ফান বেটোফেন সম্ভবত বন শহরের সবচেয়ে বিখ্যাত সন্তান৷ জন্মেছিলেন ১৭৭০ সালে, শহরের মূল চত্বরের কাছের একটি গলিতে বেটোফেনের জন্মের বাড়ি না দেখলে, বন-এ কিছুই দেখা হলো না৷ রাদওয়ান আয়ুজ ও তাঁর ছেলে আলি অতিকষ্টে বেটোফেনের জন্মের তারিখটা খুঁজে বার করেছেন৷
ছবি: DW/M. Hallam
রাস্তাঘাট চেনা
টিমকে হয়ত বলে দেওয়া হয়েছে, ‘ফ্রিডেন্সপ্লাৎস’, মানে শান্তির চত্বরে যাও৷ অথবা ৬০৮ নম্বর বাস কোথায় যাচ্ছে? পরের বাসটা আসবে কখন? বাসটা আবার থামে একটি উদ্বাস্তু আবাসের কাছে, যেখানে দলের অনেকের বাস৷
ছবি: DW/M. Hallam
বন থেকে চিঠি
কোথাও বসে পোস্টকার্ড লেখা হলো ক্লাসের নতুন কাজ৷ তার জন্যে পোস্ট অফিসে গিয়ে স্ট্যাম্প কিনে, পোস্টকার্ডে সেঁটে পোস্ট করতে হবে৷ স্ট্যাম্পের ‘রিসিট’ রেখে দিতে হবে৷
ছবি: DW/M. Hallam
পয়েন্ট মানেই ‘প্রাইজ’
এরপরেও ডয়চে ভেলের রিপোর্টার যে দলটির সাথে ছিলেন, তাঁরা খুব ভালো ফলাফল করতে পারেনি – সম্ভবত রিপোর্টারের কচকচানি, তার ওপর আবার রিপোর্টারকে কোনো প্রশ্নের উত্তর জিগ্যেস করা চলবে না, এই কারণে৷