গত বুধবার ইংলিশ চ্যানেলে নৌকাডুবিতে ১৭জন পুরুষ সাত নারী এবং তিনজন শিশুর মৃত্যু হয়। ইংলিশ চ্যানেলে এত বড় দুর্ঘটনা এর আগে হয়নি। তারপরেই বিষয়টি নিয়ে জরুরি আলোচনার ডাক দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অন্যদিকে যুক্তরাজ্যও বিষয়টি নিয়ে আলোচনার প্রয়োজনের কথা জানায়। রোববারের বৈঠকে জার্মানি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলেরও যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে যুক্তরাজ্য বৈঠকে যোগ দিতে অস্বীকার করে। এর মূল কারণ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁকে লেখা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের খোলা চিঠি।
ইংলিশ চ্যানেলে একইদিনে দুটি ভিন্ন ঘটনা
বুধবার ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ফ্রান্স থেকে ব্রিটেনে পৌঁছতে গিয়ে নৌকা ডুবে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ একই দিন আরেক নৌকায় করে নিরাপদে ব্রিটেনে পৌঁছেছে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটি দল৷
ছবি: Henry Nicholls /REUTERS
মন ভালো করা ছবি
বুধবার ব্রিটেনের ডাঞ্জিনেস সৈকতে ছবিটি তোলা হয়েছে৷ শিশুটি তার পরিবারের সঙ্গে ডিঙ্গি নৌকা করে ফ্রান্স থেকে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনে পৌঁছেছে৷
ছবি: Henry Nicholls /REUTERS
পরিবার
এই ছবিতে পরিবারের সঙ্গে শিশুটিকে দেখা যাচ্ছে৷ সঙ্গে একজন ব্রিটিশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যকেও দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Henry Nicholls/REUTERS
ফ্রান্স থেকে যাত্রা শুরুর প্রস্তুতি
বুধবার ভোরে ফ্রান্স থেকে ডিঙ্গি নৌকা করে ৪০ জনের একটি দল (যার মধ্যে ছয় শিশুও ছিল) ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়া শুরু করেছিল৷ ছবিতে তাদের নৌকায় উঠতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Gonzalo Fuentes/REUTERS
যাত্রা শুরু
চ্যানেল পাড়ি দেয়ার যাত্রা শুরুর পর অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রতিক্রিয়া৷
ছবি: Gonzalo Fuentes/REUTERS
ব্রিটিশদের সঙ্গে দেখা হওয়া
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকাটি ব্রিটিশ উপকূলের কাছে পৌঁছলে তাদের সঙ্গে ব্রিটিশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের দেখা হয়৷
ছবি: Henry Nicholls/REUTERS
উদ্ধার
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধার করে ডোভা বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়৷
ছবি: Henry Nicholls/REUTERS
সবার ভাগ্য এক নয়
বুধবারই ফ্রান্স থেকে রওনা হওয়া একটি ডিঙ্গি নৌকা ডুবে ২৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ ২০১৮ সালে এভাবে চ্যানেল পাড়ি দেয়া শুরু হওয়ার পর এটাই একদিন সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা৷
ছবি: Dan Kitwood/Getty Images
টেলিফোন আলাপ
প্রাণহানির ঘটনার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ৷ এই সময় তারা প্রাণহানি ঠেকাতে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে আরও শক্ত ব্যবস্থা নিতে একমত হন৷
ছবি: Reuters/G. Fuentes
চারজন গ্রেপ্তার
বুধবারের প্রাণহানির সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে চারজন মানবপাচারকারীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানা৷
ছবি: Oliver Pinel/AP/picture alliance
তিনগুন
ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বছর এখন পর্যন্ত ২৫ হাজারের বেশি মানুষ অবৈধ পথে ব্রিটেনে ঢুকেছে৷ গতবছরের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় তিনগুন বেশি৷
ছবি: Dan Kitwood/Getty Images
10 ছবি1 | 10
চিঠিতে এই দুর্ঘটনার জন্য কার্যত ফ্রান্সকেই এককভাবে দোষী করেছেন বরিস। দুইপাতার চিঠিতে ইংলিশ চ্যানেলে শরণার্থীদের যাতায়াত নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। বরিস জনসনের খোলা চিঠি পেয়ে স্বভাবতই প্রত্যাঘাত করেছে ফ্রান্স। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে মাক্রোঁর মন্তব্য, ''বরিস সিরিয়াস নন।'' এরপরেই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন শুরু হয়। প্যাটেল বৈঠকে যোগ দিতে অস্বীকার করেন।
রোববারের বৈঠকে ফ্রান্স ছাড়াও উপস্থিত ছিল জার্মানি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলি। সকলেই একটি বিষয়ে একমত হয়েছেন, যেভাবে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে শরণার্থীরা ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিচ্ছেন, তা বন্ধ করতে হবে। ওই অঞ্চলে গড়ে ওঠা পাচারকারী সংস্থাগুলির উপর নজরদারি চালাতে হবে। দেখতে হবে, যাতে একটিও নৌকা চ্যানেলে নামানো না হয়। এর জন্যই ফ্রনটেক্সকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের বিমান দিবারাত্র ইংলিশ চ্যানেলের উপর টহল দেবে বলে ঠিক হয়েছে।
বৈঠকে বলা হয়েছে, প্রাণের দায়, পেটের দায়ে শরণার্থীরা ইউরোপে ঢুকতে চাইছেন। আফগান, ইরাকি, সিরিয়ান, সুদানের শরণার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। কিন্তু ইংলিশ চ্যানেলে আর প্রাণহানি হতে দেওয়া যাবে না। ফলে যারা শরণার্থীদের ছোট ছোট নৌকায় তুলে দিচ্ছে, তাদের উপর নজরদারি চালাতে হবে। অবৈধভাবে ইউরোপে আর শরণার্থী ঢোকানো যাবে না।