শুধু দারিদ্র্য নয়, যুদ্ধ ও সন্ত্রাসের কারণেও মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় বা হচ্ছে৷ এ কারণে সহায়তা কখনও কূটনীতির বিকল্প হতে পারে না৷ রাজনীতিবিদদের এটা স্বীকার করতে হবে বলে মনে করেন ডিডাব্লিউর আসট্রিড প্রাঙ্গা৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Kilic
বিজ্ঞাপন
একটা সময় ছিল যখন জার্মানির রাজনীতিবিদরা প্রতি রাতে টেলিভিশনে বলতেন, তাঁরা অর্থ দিয়ে শরণার্থীদের সহায়তা করতে চান৷ যেসব দেশের নাগরিক শরণার্থী হতে চায়, সেসব দেশে স্কুল ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে অর্থ সহায়তা দেয়ার কথা বলতেন তাঁরা৷ গত প্রায় ২০ বছর ধরে জার্মান রাজনীতিবিদদের এমন সব কথাই আমরা শুনে এসেছি৷ কিন্তু অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দিন দিন সহযোগিতার পরিমাণ বাড়ালেও বর্তমানে সারা বিশ্বের প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ ঘর ছাড়া – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সংখ্যাটা এখনই সবচেয়ে বেশি৷
আসট্রিড প্রাঙ্গা, ডয়চে ভেলে
এটা প্রমাণিত, যেসব সমস্যার কারণে মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় সেগুলো সমাধান করার মাধ্যমে শরণার্থী সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়৷ সিরিয়ায় বর্তমানে যে গৃহযুদ্ধ চলছে, কিংবা নব্বইয়ের দশকে বলকান অঞ্চলে যে যুদ্ধ হয়েছিল, অর্থ সহায়তার মাধ্যমে সেগুলো প্রতিহত করা সম্ভব ছিল না৷ ইতিহাস থেকেই এটা আমরা জানি যে, অর্থের মাধ্যমে হয়ত একটি শান্তি প্রক্রিয়াকে সহায়তা দেয়া সম্ভব, কিন্তু এর মাধ্যমে এমন কোনো রাজনৈতিক ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা সম্ভব নয়, যেটা শান্তি প্রক্রিয়াকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে পারে৷ এর জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা৷ চলমান শরণার্থী সংকট সমাধানে জার্মানি ও ইউরোপকে একটি শরণার্থী নীতি গ্রহণ করে সেই সদিচ্ছার প্রমাণ দিতে হবে৷
প্রাণের মায়া না করে ইউরোপে আসার প্রচেষ্টা
লিবিয়ার উপকূলে আটশো’র বেশি উদ্বাস্তু নড়বড়ে জাহাজে ইউরোপে আসার চেষ্টা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন৷ এই ঘটনা ইউরোপের মানুষদের গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে, কিন্তু ট্র্যাজেডির বোধহয় এখানেই শেষ নয়৷...
ছবি: REUTERS
প্রাণে বাঁচা
২০শে এপ্রিল, ২০১৫: একটি ছোট পালের নৌকা গ্রিসের রোডোস দ্বীপের কাছে চড়ায় আটকালে সীমান্তরক্ষী আর স্থানীয় মানুষেরা বেশ কিছু উদ্বাস্তুকে উদ্ধার করেন৷ তা সত্ত্বেও এই দুর্ঘটনায় তিনজন উদ্বাস্তু জলে ডুবে মারা যান৷
ছবি: REUTERS/Argiris Mantikos/Eurokinissi
সীমান্তরক্ষীদের ডিঙিতে
১৩ই এপ্রিল, ২০১৫: উদ্বাস্তুরা কোস্ট গার্ডের ইনফ্ল্যাটেবল বোটে চড়ে সিসিলি-র একটি বন্দরে পৌঁছচ্ছে৷ সীমান্তরক্ষীরা লিবিয়ার উপকূলে একটি ডোবা নৌকা দেখতে পেয়ে ১৪৪ জন উদ্বাস্তুকে উদ্ধার করেন – এবং যুগপৎ ন’টি মৃতদেহকে সাগরের জলে ভাসতে দেখেন৷ আবহাওয়া ভালো থাকায় এপ্রিলের শুরু থেকে উদ্বাস্তুরা আরো বেশি সংখ্যায় আফ্রিকা থেকে ভূমধ্যসাগর পার হয়ে ইউরোপে আসার চেষ্টা করছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/C. Montanalampo
বাহন
১২ই এপ্রিল, ২০১৫: ওপিয়েলক অফশোর ক্যারিয়ার কোম্পানির ‘জাগুয়ার’ নামধারী মালবাহী জাহাজের অতি কাছে ডুবে যায় একটি উদ্বাস্তু বোট৷ এই কোম্পানির জাহাজগুলি গত ডিসেম্বর মাস যাবৎ দেড় হাজারের বেশি উদ্বাস্তুকে সমুদ্রবক্ষ থেকে উদ্ধার করেছে৷
ছবি: Opielok Offshore Carriers/dpa
হাঁটাপথে
২৮শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫: পশ্চিম আফ্রিকা থেকে আসা উদ্বাস্তুরা ম্যাসিডোনিয়া সীমান্তের দিকে হেঁটে চলেছেন৷ আশা, এইভাবে ‘খিড়কির দরজা’ দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশ – যদিও সে প্রচেষ্টা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হয়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/D. Bennett
ব্রিটেন যাওয়ার শেষ পন্থা
১৭ই ডিসেম্বর, ২০১৪: ফ্রান্সের ক্যালে বন্দর-শহরের কাছের হাইওয়েতে ব্রিটেনগামী লরিতে ওঠার সুযোগের অপেক্ষায় উদ্বাস্তুরা৷ সে আমলে ক্যালে-র পাঁচ-পাঁচটি বেআইনি ক্যাম্পে প্লাস্টিকের ঝুপড়িতে বাস করছিল তিন থেকে পাঁচ হাজার উদ্বাস্তু, শুধুমাত্র ইংল্যান্ড যাবার আশায়৷
ছবি: Reuters/P. Wojazer
‘সেভ আওয়ার সোলস’
২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪: ভূমধ্যসাগরে সাইপ্রাসের কাছে একটি শরণার্থী নৌকা বিপদ সঙ্কেত পাঠানোর পর সাগরে ভাসতে থাকে – ৩০০ উদ্বাস্তু নিয়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
যারা কোনো বাধা মানে না
১৭ই মে, ২০১৪: আফ্রিকান উদ্বাস্তুরা মরক্কোর উপকূলে স্পেনের এক্সক্লেভ মেলিলা-র চারপাশের উঁচু তারের বেড়া পার হওয়ার চেষ্টা করছে৷ প্রায় ৫০০ মানুষ সীমান্ত পার হবার চেষ্টা করে, তাদের মধ্যে জনা ত্রিশেক সফলও হয়, কিন্তু পরে তাদের আবার মরক্কোয় ফেরৎ পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷