রেললাইনে শুয়ে পড়েছিলেন তিনি৷ ট্রেন ছুটে গেল ওপর দিয়ে৷ তারপর অক্ষত অবস্থায় উঠে দাঁড়ালেন তিনি৷ এক কাশ্মীরির এমন এক ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল৷অনেকেই অবশ্য এমন কীর্তিকে বোকামিই বলছেন৷
বিজ্ঞাপন
ইন্টারনেটের যুগে যে কোনো ধরনের বোকামো ‘ট্রেন্ড' হতে বেশি সময় লাগে না – কাজেই এই অসমসাহসী বা বিষমসাহসী গাঁয়ে-মানে-না-আপনি-হিরোর বিরুদ্ধে রীতিমতো পুলিশি ব্যবস্থা নেবার ডাক দিয়েছেন অনেকে৷ সহজ কারণ: নিজের জীবন বিপন্ন করাটা বোকামো হতে পারে, কিন্তু পরের জীবন বিপন্ন করাটা একটা অপরাধ৷ আরো অনেকে যদি রেললাইনের মাঝখানে এভাবে শুয়ে মাথার ওপর দিয়ে চলন্ত ট্রেন পার পার করতে যান, তবে অনেকের কিন্তু প্রাণও যেতে পারে৷ তাই জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ পর্যন্ত টুইটারে বলেছেন, ‘‘এ ধরণের রোমাঞ্চ খোঁজার মধ্যে অতীব খারাপ কিছু আছে৷ আমি এই সব তরুণের বোকামি বিশ্বাস করতে পারি না৷''
মুশকিল এই যে, সময়-তারিখ না দেওয়া ভিডিওটা সন্ধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠতে না উঠতে তা শেয়ার হতে শুরু করে৷ এক সময় একাধিক হোয়াট্সঅ্যাপ গোষ্ঠীর অ্যাডমিন তাদের সদস্যদের প্রতি ভিডিওটি প্রচার না করার অনুরোধ জানাতে বাধ্য হন৷ সরকারি তরফে অবশ্য এখনও কোনো প্রতিক্রিয়ার কথা জানা যায়নি৷
এসি/এসিবি
বিশ্বের দ্রুততম ট্রেন
চলুন জেনে নেয়া যাক নতুন এবং পুরোনো সব ঝোড়োগতির ট্রেনের কথা৷
ছবি: picture-alliance/AP/Yomiuri Shimbun
‘ভাসমান রাজা’
জাপানের সেন্ট্রাল রেলের ‘ম্যাগলেভ ট্রেন’ নতুন রেকর্ড গড়ে বিশ্বের দ্রুততম হবার গৌরব অর্জন করেছে৷ জাপানের এই ট্রেনই প্রথম ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটার, অর্থাৎ ৩৭৩ মাইল বেগে ছুটে দেখালো৷ ম্যাগলেভ নামটা এসেছে ‘ম্যাগনেটিক’ শব্দের ‘ম্যাগ’ এবং ‘লেভিটেশন’ শব্দের ‘লেভ’ নিয়ে৷ ম্যাগনেটিক লেভিটেশনের জাদুতেই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সামলে রেল লাইনের ওপরে অনেকটা ভেসে চলে ম্যাগলেভ ট্রেন৷
ছবি: picture-alliance/AP/Yomiuri Shimbun
‘ট্রেন নয়, যেন প্লেনে চড়েছি’
জাপানের ম্যাগলেভ ট্রেনটি এখনো পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছে৷ টেস্ট সেন্টারের প্রধান ইয়াসুকাজু এন্ডো জানালেন, এ পর্যন্ত হাতে গোনা যে ক’জন ট্রেনটিতে চড়ার সুযোগ পেয়েছেন তাঁদের সবাই ফিরেছেন মুগ্ধ হয়ে৷ তাঁর ধারণা প্রশ্ন করলে সবাই বলতেন, ‘‘কী গতি! মনে হলো ট্রেনে নয় যেন প্লেনে চড়েছি৷’’ জাপানের এই ট্রেন সাধারণ জনগণের জন্য পুরোদমে চলতে শুরু করবে ২০২৭ সালে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এখনো সেরা.....
৬০০ কিলোমিটার বেগে চালালেও পুরোদমে যখন যাত্রীসেবায় নামবে তখন ৫০০ কিলোমিটার বেগে চলবে জাপানের ম্যাগলেভ৷ তার আগ পর্যন্ত হয়তো যাত্রীসেবায় নিয়োজিত ট্রেনগুলোর মধ্যে দ্রুততম থাকবে চীনের শাংহাই শহরে জার্মান প্রযুক্তি দিয়ে গড়ে তোলা ট্রেন ট্রান্সরাপিড৷ শাংহাই কেন্দ্রীয় রেল স্টেশন থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ঘণ্টায় ৪৩০ কিলোমিটার বেগে ছুটে যায় ট্রেনটি, সাড়ে ৩০ কিলোমিটার দূরত্ব যেতে লাগে মাত্র ৮ মিনিট!
ছবি: picture-alliance/dpa
ফ্রান্সের গর্ব
জাপান আর চীনের ট্রেন দুটো আসলে ম্যাগনেটিক লেভিটেশন প্রযু্ক্তির উজ্জ্বলতম নিদর্শন৷ এই দুটোর বাইরে প্রথাগত চাকার ট্রেনগুলির মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত ফ্রান্সের ‘ত্র্যাঁন-আ-গ্রঁ-ভিতেস’ (টিজিভি)৷ ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫৭৪ কিলোমিটার৷ তবে ব্যয় কম রাখতে টিজিভির গতিবেগ ৩২০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়৷
ছবি: Sebastien Bozon/AFP/Getty Images
বেইজিং থেকে শাংহাইয়ের পথে গতির ঝড়
হারমোনি সিআরএইচ ৩৮০এ পুরোপুরি বিদ্যুৎ চালিত৷ ২০১০ সালে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়ে দেখার সময় এটি ঘণ্টায় ৪৮৬ কিলোমিটার বেগে ছুটেছিল৷ তবে স্বাভাবিক অবস্থায় বেইজিং-শাংহাই রুটে ৩৮০ কিলোমিটার বেগে চলে ট্রেনটি৷
ছবি: imago/UPI Photo
জার্মানিও আছে...
হাই-স্পিড ট্রেনের জগতে সেই ১৯৮৮ সালে সাড়া জাগিয়েছিল জার্মানি৷ সেবার আইসিই ট্রেন হ্যানোফার থেকে ভ্যুরৎসবুর্গের পথে ৪০৬ দশমিক ৯ কিলোমিটার গতি তুলে তাক লাগিয়েছিল৷ পরে ব্যয় কমানোর জন্য অবশ্য সর্বোচ্চ গতি ২৫০ কিলোমিটারে বেঁধে দেয়া হয়৷