ইউক্রেনের দখল করা জমি ফিরিয়ে দিলে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা সম্ভব। সোমবার রাতে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাজ্যের দাবি, ফ্রন্টলাইনে নতুন করে সেনা পাঠাচ্ছে রাশিয়া। নিজেদের ডিফেন্স লাইনও তারা শক্তি করছে। তারই মধ্যে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এখনো প্রতিদিনই নতুন নতু প্রক্রিয়ায় জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে রাশিয়া। পূর্ব এবং দক্ষিণ পূর্ব ইউক্রেনে এখনো তীব্র লড়াই চলছে। কিন্তু ইউক্রেনের সেনা রাশিয়াকে এক ছটাক জমিও দখল করতে দেয়নি। এরপরেই জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনায় বসতে তিনি প্রস্তুত। কিন্তু তার আগে ইউক্রেনের সার্বভৌম অঞ্চল ফিরিয়ে দিতে হবে। রাশিয়া ইউক্রেনের যে জমি দখল করেছে, তা ইউক্রেনকে দিয়ে দিতে হবে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, রাশিয়া মানুষের দাবি মেনেই কয়েকটি এলাকাকে প্রথমে স্বাধীন ঘোষণা করেছিল এবং পরে তা নিজেদের শাসনাধীনে নিয়ে এসেছে। ওই অঞ্চলে গণভোটের আয়োজন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ রাশিয়ার অংশ হওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তারপরেই রাশিয়া তা অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে সেই অঞ্চল ইউক্রেনকে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রশ্ন নেই।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনে
ডনবাস অঞ্চলকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর অন্য কয়েকটি ইউক্রেনীয় শহর দখলে রাশিয়া নতুন করে আক্রমণ শুরু করেছে৷ অন্যদিকে ইউক্রেনও ডনবাস পুনরুদ্ধারে নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে৷ ছবিঘরে থাকছে যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনের কিছু ছবি৷
ছবি: Vyacheslav Madiyevskyy/REUTERS
বিনা যুদ্ধে নাহি দিবো...
খারকিভকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়া৷ তবে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ অঞ্চলটি নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া ইউক্রেনও৷ খারকিভের ফ্রন্টলাইনে রুশ সৈন্যদের লক্ষ্য করে মর্টার নিক্ষেপ করতে দেখা যাচ্ছে এক ইউক্রেনীয় সৈন্যকে৷
ছবি: Vyacheslav Madiyevskyy/REUTERS
পর্যাপ্ত সরবরাহ কি আছে?
দিনের পর দিন রাশিয়া আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে৷ অ্যামেরিকাসহ ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে নিয়মিতই সরবরাহ হচ্ছে অস্ত্র ও গোলাবারুদ৷ তবে তা অব্যাহত না থাকলে রুশ সৈন্যদের ঠেকিয়ে রাখতে বেশ বেগ পেতে হবে ইউক্রেনকে৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক সৈন্য গাড়িতে রাখা মর্টার নিয়ে যাচ্ছেন রুশ সৈন্যদের ঠেকিয়ে রাখার অংশ হিসাবে৷
ছবি: Vyacheslav Madiyevskyy/REUTERS
বেসামরিক স্থাপনাও রক্ষা পাচ্ছে না
ছবিটি ইউক্রেনের মাইকোলাইভ শহরের৷ রাশিয়ার বোমা হামলায় একটি স্কুল ধ্বংস হয়েছে৷ তবে ইউক্রেনের সৈন্যরা এখনো শহরটি রাশিয়ার সৈন্যদের দখলে চলে যাওয়া থেকে ঠেকিয়ে রেখেছেন৷
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
মেরামত চলছে...
ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলের কুপিয়ানস্ক শহরে একটি ট্যাংকের ওপর এক ইউক্রেনীয় সৈন্যকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে৷ বোমার আঘাতে নষ্ট হওয়া ট্যাংক মেরামত করছেন তার সহকর্মী৷ রুশ সৈন্যরা খারকিভ দখলে নিলেও পরবর্তীতে ইউক্রেনের পালটা আক্রমণে দখল হারায় রাশিয়া৷ তবে এখনো এর দখল নিয়ে দুই পক্ষে ব্যাপক লড়াই চলছে৷
ছবি: Clodagh Kilcoyne/REUTERS
মুখোমুখি লড়াই
কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী মাইকোলাইভ অঞ্চলে লড়াই তীব্র হয়েছে৷ ইউক্রেনের সৈন্য মাইকোলা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন৷ অদূরে অবস্থান করছে রুশ সৈন্যরা৷ তাদের ঠেকিয়ে রাখতে একে-৪৭ হাতে পাহারা দিচ্ছেন মাইকোলা৷
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
মাতৃভূমি রক্ষার লড়াই
আরেক ইউক্রেনীয় সৈন্য ভালেরি একে-৪৭ হাতে পরিখার মধ্যে বসে রয়েছেন৷ তবে সতর্ক প্রহরার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে অন্যদিকেও নজর থাকছে তাদের৷ ফ্রন্টলাইনেই এক কুকুরকে দেখে ভালেরির হৃদয় আর্দ্র হয়ে উঠেছে৷
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
পালটা আক্রমণ
ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ঝাপোরিজঝিয়া রয়েছে রাশিয়ার দখলে৷ এর নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকার৷ শহরটি পুনর্দখলের জন্য লড়াই করছে ইউক্রেনের সৈন্যরা৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক ইউক্রেনীয় সৈন্যকে গাড়িতে মোতায়েন করা হাওয়িৎজার এফএইচ-৭০ প্রস্তুত করতে৷
ছবি: REUTERS
7 ছবি1 | 7
জেলেনস্কির দাবি, রাশিয়ার সঙ্গে তিনি একাধিকবার আলোচনায় বসতে চেয়েছেন। শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু রাশিয়া তাতে রাজি হয়নি। জেলেনস্কি ইউক্রেনের জমি ফেরতের যে দাবি করেছেন, তার মধ্যে ক্রাইমিয়াও আছে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখল করেছিল রাশিয়া।
লুক্সেমবার্গের সিদ্ধান্ত
লুক্সেমবার্গে সব মিলিয়ে রাশিয়ার ১৭ বিলিয়ন ইউরোর সম্পত্তি আছে বলে একটি হিসেব প্রকাশ করেছে সে দেশের সরকার। তার মধ্যে পাঁচ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ইউরোর সম্পত্তি ফ্রিজ করা হচ্ছে বলে তারা জানিয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ না করলে আরো নিষেধাজ্ঞা জারি হবে বলে সে দেশের সরকার জানিয়েছে। এখনো পর্যন্ত ইউক্রেনকে ৭২ মিলিয়ন ইউরোর অস্ত্র দিয়েছে লুক্সেমবার্গ।
ইটালির এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম
জার্মানির পর এবার ইটালির কাছ থেকে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম পাবে ইউক্রেন। নানা ধরনের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দেবে ইটালি। ফ্রান্স-ইটালির তৈরি এসএএমপি/টি এবং ইটালিয়ান অ্যাপাইড ইউক্রেনের হাতে তুলে দেবে ইটালি। এছাড়াও স্টিংগার মিসাইলও তাদের দেওয়া হবে। তবে ইটালি এই অস্ত্র কবে পাঠাবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ইটালির বিবৃতিতে এবিষয়ে কোনো তথ্য নেই।
তবে সোমবার ইউক্রেন জানিয়েছে, অ্যামেরিকার নতুন এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তারা ওই দিনই পেয়েছে।