1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শস্যের ফলন বাড়াতে হাইটেক স্ক্যানার

মার্টিন রিবে/এসবি২৭ অক্টোবর ২০১৪

খেতে শস্যের ফলন বাড়াতে নতুন ধরনের বীজ বা সারের কথা ভাবা যেতে পারে৷ কিন্তু তার খুব বেশি ফল পাওয়া যায় না৷ এবার জার্মান বিজ্ঞানীরা হাইটেক স্ক্যানার ও সফটওয়্যার দিয়ে নতুন ধরনের শস্যের প্রজনন ঘটানোর উদ্যোগ শুরু করেছেন৷

Sudan Weizen Hand
ছবি: picture-alliance/dpa

আগামী দশকগুলিতেও বেড়ে চলা জনসংখ্যার জন্য খাদ্যের সংস্থান করতে হলে কৃষি উৎপাদন আরও অনেক বাড়াতে হবে৷ কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি করে কৃষিজমি বাড়ানোও চলবে না৷ অতএব চাই এমন শস্য, যার উৎপাদন ক্ষমতা বেশি৷ বন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাইনার গল্ডবাখ বলেন, ‘‘আমাদের ধারণা, ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ৯০০ কোটি মানুষের খাদ্যের জোগান দিতে হবে৷ তার জন্য বছরে গড়ে কমপক্ষে ১.৫ শতাংশ হারে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে৷''

উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন শস্য ব্রিড বা প্রজনন করতে আজকাল হাইটেক প্রযুক্তি কাজে লাগানো হয়৷ কারণ এমন শস্য শনাক্ত করতে হয়, যেগুলি সুস্থ অথবা তাদের স্ট্রেস সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে৷ শুধু সেগুলিই বেছে নিয়ে আরও প্রজনন করতে হবে৷

বন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি-বায়োলজিস্ট হাইনার গল্ডবাখ এই লক্ষ্যে ইঞ্জিনিয়ার, তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও কৃষিবিজ্ঞানীদের নিয়ে একটি টিম তৈরি করেছেন৷ তাঁদের উদ্দেশ্য এমন এক সেন্সর তৈরি করা, যার সাহায্যে ‘প্লান্ট ব্রিডিং' আরো দক্ষ ও দ্রুত করে তোলা সম্ভব৷ অধ্যাপক গল্ডবাখ বলেন, ‘‘প্রজননের সময় সেন্সর বৈশিষ্ট্যগুলি দ্রুত ও সঠিকভাবে চিনতে পারে৷ মানুষও সেটা পারে বটে, কিন্তু ঘণ্টা দুয়েক পর সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে৷ তখন ভুলের অবকাশ বেড়ে যায়, শস্যগুলির মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ত্রুটি ঘটে৷ কিন্তু সেন্সর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে সেই কাজ সঠিকভাবে করে চলে৷ ফলে প্রজননের গতি বেড়ে যায়৷''

পাতার রোগ যত দ্রুত সম্ভব শনাক্ত করতে গবেষকরা এক হাইপার স্পেকট্রাল ক্যামেরা ব্যবহার করেন৷ সেটি স্ক্যানারের মতো পাতার উপর প্রতিফলিত আলো বিশ্লেষণ করে৷ ২১০টি আলাদা তরঙ্গদৈর্ঘ্য থেকে তথ্য নিয়ে স্পেকট্রাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট তৈরি করা হয়৷ কৃষিবিজ্ঞানী ড. আনে-কাটরিন মালাইন বলেন, ‘‘এখন পর্দার ডানদিকে হাইপার-স্পেকট্রাল ফলাফল দেখা যাক৷ ‘ফল্স কালার ডিসপ্লে'-তে হলুদ রংয়ের মাধ্যমে সুস্থ টিস্যু দেখা যাচ্ছে৷ অন্যদিকে নীল-সবুজ রংয়ের অংশে পাতার রোগগ্রস্ত অংশ দেখা যাচ্ছে৷''

সফটওয়্যারের মাধ্যমে পাতার নানা রোগ পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করা যায়৷ ভবিষ্যতে মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে শস্যখেতেও তা কাজে লাগানো যাবে৷ অধ্যাপক গল্ডবাখ বলেন, ‘‘এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করে আমরা প্রজননের অগ্রগতি আরও দ্রুত করে তুলতে পারি৷ অর্থাৎ এই মুহূর্তে নতুন করে কোনো প্রজাতির প্রজনন যদি ১০ থেকে ১২ বছর লাগে, সেখানে আমরা সময়টা ২ বছর কমিয়ে দিতে পারি৷ ফলে আরও দক্ষতার সঙ্গে আমরা কাজ করতে পারবো৷''

বায়োলজিস্ট বির্গিট ফ্রিকে এক হাইপার স্পেকট্রাল সেন্সর দিয়ে উদ্ভিদের ভিতরের অবস্থাও দেখতে পারেন এবং সুগার বিটের মেটাবলিজম ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে তথ্য পান৷ বায়োলজিস্ট বির্গিট ফ্রিকে বলেন, ‘‘পরিমাপের পদ্ধতি খুব সহজ৷ সূর্যের আলো পাতার উপর পড়ে, তারপর তার প্রতিফলন ঘটে৷ উদ্ভিদ অসুস্থ হলে তার মেটাবলিজম বদলে যায়, যার ফলে প্রতিফলনের চরিত্রও বদলে যায়৷ সেন্সর তখন এই পরিবর্তিত প্রতিফলন ধরতে পারে৷''

বেড়ে চলা জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা মেটাতে হলে কৃষি উৎপাদন অনেক বাড়াতে হবেছবি: picture-alliance/ZB

তখন শুধু সুস্থ উদ্ভিদ নিয়েই প্রজনন চালানো হয়৷ তাদের সহ্যশক্তি বাড়ানো হয়৷ বার্লি ও ধানের ক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা সম্ভব৷ উদ্ভিদের আকার বা একই জায়গায় কত উদ্ভিদ আছে, এক টেরেস্ট্রিয়াল লেজার-স্ক্যানার তা মেপে দেখে৷

সেটি খেতের এক ত্রিমাত্রিক ছবি ফুটিয়ে তোলে৷ কোলোন বিশ্ববিদ্যালয়ের নোরা টিলি বলেন, ‘‘বীজ রোপণ করার সময় থেকেই স্ক্যানিং শুরু হয়৷ তখনও কিন্তু চারা গজায়নি৷ এর মাধ্যমে গোটা এলাকার একটা হাই-ডেফিনিশন মডেল পাওয়া যায়৷ প্রতি দুই সপ্তাহ অন্তর স্ক্যান করা হয়৷ এভাবে বিভিন্ন অবস্থার মধ্যে তুলনা করে উদ্ভিদের বৃদ্ধির হার স্পষ্ট বোঝা যায়৷''

সত্যি, বিষয়টি একেবারে নিখুঁতভাবে মাপা সম্ভব৷ এর জন্য বিজ্ঞানীদের খেতের চারপাশে মাত্র চারটি বিন্দুর প্রয়োজন, যেখান থেকে পরিমাপ চালানো হবে৷ উচ্চতা বিচার করে সেরা উদ্ভিদ বাছা যাবে, যার উৎপাদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি৷

খেতে হাইটেক সেন্সর উদ্ভিদের প্রজনন প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করতে তুলতে পারে৷ কোটি কোটি মানুষের খাদ্যের সংস্থান করতে এমন উৎপাদনশীল উদ্ভিদের প্রয়োজন পড়বে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ