বাংলাদেশের একটি আদালত ঢাকার হাজারীবাগের একশ'রও বেশি ট্যানারি অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন৷ ট্যানারিগুলোর বিরুদ্ধে শহরের একমাত্র নদীতে বিপুল পরিমানে বিষাক্ত বর্জ্য ফেলার অভিযোগ রয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশের পরিবেশবিদদের এক পিটিশনের ভিত্তিতে এই নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট৷ ইতোপূর্বে একাধিকবার ট্যানারিগুলো সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হলেও সরকার তা বাস্তবায়নে সমর্থ হয়নি বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা৷ বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবীদের অ্যাসোসিয়েশন বেলা'র রেজওয়ানা হাসান এই বিষয়ে বলেন, ‘‘আদালত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ট্যানারিগুলো বন্ধের এবং সেখানে থাকা বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্নের নির্দেশ দিয়েছেন৷''
তিনি বলেন, ‘‘ট্যানারিগুলোর মালিকদের হাজারিবাগ ছেড়ে যেতে কয়েক বছর আগেই বলা হয়েছিল৷ কিন্তু তারা ইচ্ছাকৃতভাবে গড়িমসি করছে৷''
প্রসঙ্গত, ঢাকা শহরের অদূরে সাভারের হেমায়েতপুরে ট্যানারি শিল্পের জন্য চামড়া শিল্পনগর গড়ে তুলেছে সরকার৷ তা সত্ত্বেও সেখানে যেতে ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করেছে ট্যানারি মালিকরা, এমনটাই দাবি পরিবেশবিদদের৷ তবে ট্যানারি মালিকরা বলছেন, শিল্পনগরে তাদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এখনো নিশ্চিত করা হয়নি৷ ট্যানারি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র টিপু সুলতানা বলেন, ‘‘পানি পরিশেধান প্ল্যান্ট এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট এখনো প্রস্তুত হয়নি৷''
ট্যানারি শিল্পে স্বাস্থ্য ঝুঁকি
ক্রমেই হাজারিবাগের চামড়া শিল্পে দূষণের মাত্রা বাড়ছে৷ পরিবেশ দূষণ ছাড়াও ট্যানারি শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের রয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি৷ পানি ও বাতোসে রাসায়নিকের উপস্থিতির কারণে নানারকম অসুখে ভুগছেন এলাকার বাসিন্দারা৷
ছবি: DW
একটি ট্যানারির ভেতরের চিত্র
হাজারিবাগে কমপক্ষে ২০০টি ট্যানারি রয়েছে, যাতে ২৫ হাজারেরও বেশি শ্রমিক কাজ করেন৷ এ সব ট্যানারিতে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে ব্যবহৃত হয় ক্রোম পাউডার, কপার সালফেট, সোডিয়াম, অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড, অ্যাসিড, ব্লিচিং পাউডারসহ নানারকম রাসায়নিক৷ শ্রমিকরা নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়া খালি হাত-পায়ে ঝুঁকিপূর্ণ এ কাজ করার ফলে চর্মরোগ তাঁদের নিত্যসাথী৷ এছাড়া রাসায়নিকের প্রভাবেও অন্যান্য রোগে ভোগেন নিম্ন আয়ের শ্রমিকরা৷
ছবি: DW
হুমকির মুখে শ্রমিকদের নিরাপত্তা
চামড়া শিল্পে কাজকরা এ সব শ্রমিকদের শতভাগই অশিক্ষিত৷ তাই এ শিল্পে কাজ করা শ্রমিকদের কাজের জন্য বেশিরভাগ ট্যানারিতেই নেই কোনো চুক্তিপত্র৷ ফলে নিম্ন আয়ের এ সব শ্রমিকদের পেশাগত নিরাপত্তাও মারাত্মক হুমকির মুখে৷
ছবি: DW
আজও সচেতন নন শ্রমিকরা
ট্যানারিতে কাজ করা শ্রমিকদের বেশিরভাগই স্বাস্থ্য সচেতনও নন৷ তবে বড় ট্যানারি কারখানাগুলোতে কাজের পরিবেশ ভালো৷ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জামও রয়েছে এ সব ট্যানারিতে৷ তারপরও শ্রমিকরাই নাকি এ সব সরঞ্জাম ব্যবহার করতে চান না, অভিযোগ এমনটাই৷
ছবি: DW
‘দীপ নিভে গেছে মম...’
দীর্ঘ সময় ধরে যাঁরা ট্যানারি শিল্পে কাজ করেছেন, তাঁদের বেশিরভাগের জীবনপ্রদীপ ৫০ বছরেই নিভে গেছে৷
ছবি: DW
অকাল মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে চামড়া শিল্প
ট্যানারি শিল্পে কাজ করা শ্রমিকরা একরকম মৃত্যুকূপের বাসিন্দা৷ স্বাস্থ্য ঝুঁকি জেনেও বছরের পর বছর এ শিল্পে কাজ করে চলছেন বাংলাদেশের হাজার হাজার শ্রমিক৷
ছবি: DW
নেই কোনো স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা
ট্যানারি শিল্পে কাজ করা শ্রমিকদের বড় একটা অংশ কাজ করেন দৈনিক ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা৷ মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও এ সব শ্রমিকদের জন্য মালিকদের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যসেবার কোনো ব্যবস্থা নেই বললেই চলে৷
ছবি: DW
এলাকাবাসীরাও দূষণের কবলে
শুধু শ্রমিকরাই নন, ট্যানারি শিল্পের দূষণের ছোবলে আক্রান্ত হাজারিবাগ এলাকার কয়েক লাখ বাসিন্দা৷ এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে হাজারিবাগ থেকে এ সব ট্যানারি শিল্প সাভারে স্থানান্তর হওয়ার কথা থাকলেও, এ খাতের সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন ‘‘নানান জটিলতার কারণে এ স্থানান্তর আগামী দু’বছরেও সম্ভব হবে না৷’’
ছবি: DW
শিশুশ্রম – এখনও বাস্তব হাজারিবাগে
দুঃখের খবর, তবুও এটাই সত্য৷ ট্যানারি শিল্পের শ্রমিকদের বড় একটা অংশ ১৮ বছরের কম বয়সি শিশু৷ শিশুদের মজুরি যেমন কম, তেমনই দুর্ঘটনার শিকার হলে তাদের কোনো ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয় না৷
ছবি: DW
প্রতিদিন ৭৫ মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য!
হাজারিবাগের ২০০টি চামড়াশিল্প থেকে গড়ে প্রতিদিন ৭৫ মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য (লবণ, হাড়, চামড়ার বর্জ্য) নির্গত হয়৷ নির্গত হয় ২১ হাজার ৬০০ ঘনমিটার তরল বর্জ্য, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর৷ এই বর্জ্যের মধ্যে আছে ক্রোমিয়াম, সীসা, অ্যামোনিয়া, সালফিউরিক অ্যাসিড প্রভৃতি৷ কিন্তু কোনো কারখানাতেই এই বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা নেই৷ ফলে এ সব বর্জ্য আশেপাশের জলাশয় দূষণ করা ছাড়াও গিয়ে মেশে বুড়িগঙ্গা ও ভূগর্ভের পানিতে৷
ছবি: DW
মৃত্যুকূপের বাসিন্দা নারীরাও
ট্যানারিতে কাজ করা শ্রমিকদের মধ্যে আছেন নারীরাও৷ ট্যানারির বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিকের প্রভাবে এ সব নারী শ্রমিকরাও আক্রান্ত হচ্ছেন নানা রোগে৷
ছবি: DW
10 ছবি1 | 10
‘‘কারখানা বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ পালন করা হলে অনেক মানুষ চাকুরি হারাবেন৷ আদালতের উচিত এই সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনা করা,'' বলেন তিনি৷
চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য হচ্ছে তৈরি পোশাকের পর বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি পণ্য৷ হাজারিবাগের ট্যানারিগুলোতে ত্রিশ হাজারের মতো শ্রমিক কাজ করেন৷ তবে সরকারের হিসেব অনুযায়ী, ট্যানারিগুলো প্রতিদিন গড়ে ২২,০০০ কিউবিক লিটার বিষাক্ত বর্জ্য বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলছে, যার মধ্যে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে এমন বিষাক্ত পদার্থও রয়েছে৷ নিউইয়র্ক ভিত্তিক ব্ল্যাকস্মিথ ইন্সটিটিউট ২০১৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দশটি এলাকার মধ্যে হাজারিবাগকেও রেখেছিল৷ ওই এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই চর্মরোগ ও শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন রোগে ভুগছেন৷
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশের ট্যানারিশিল্পে এগারো বছর বয়সি শিশুদেরও কাজ দেয়া হচ্ছে৷ অনেকেই এই খাতে কাজ করতে গিয়ে বিষাক্ত কেমিক্যালের সংস্পর্শে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট ২০০৯ সালে ট্যানারিগুলোকে প্রথম হাজারিবাগ থেকে সরিয়ে সাভারে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়৷ পরবর্তীতে ট্যানারি মালিকদের ২০১১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হলেও এখন অবধি ১৫২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৩৫টি হাজারীবাগ ছেড়েছে৷
এআই/এসিবি (এএফপি)
পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত দশটি স্থানের মধ্যে হাজারিবাগ
দূষিত মাটি, রাসায়নিক বর্জ্য আর ইলেকট্রনিক আবর্জনার মধ্যে বাস করছেন পৃথিবীর প্রায় বিশ কোটি মানুষ৷ গ্রিন ক্রস ফাউন্ডেশনের পরিবেশ দূষণ প্রতিবেদন বলছে একথা৷ চলুন দেখা যাক, পৃথিবীর কোন স্থানগুলো সবচেয়ে দূষিত?
ছবি: Blacksmith Institute
জীবনযাপন কোথায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ?
পৃথিবীর বিশ কোটি মানুষ প্রতিদিন সরাসরি পরিবেশ দূষণের ক্ষতি মোকাবিলা করছেন৷ ভারী ধাতুর কারণে দূষিত হচ্ছে মাটি, রাসায়নিক বর্জ্য উড়ে বেড়াচ্ছে বাতাসে আর ইলেকট্রনিক আবর্জনা জমছে নদীতে৷ গ্রিন ক্রস ফাউন্ডেশনের পরিবেশ বিষয়ক প্রতিবেদনে এরকম অনেক বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে৷
ছবি: picture alliance/JOKER
ঘানার আবোব্লশি ভাগাড়
ঘানার রাজধানী আক্রায় পশ্চিম আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহৎ ইলেকট্রনিক আবর্জনার ভাগাড়ে রয়েছে অসংখ্য পুরনো স্যাটেলাইট ডিশ এবং ভাঙা টেলিভিশন৷ গ্রিন ক্রস ফাউন্ডেশনের ‘দ্য এনভায়রনমেন্টাল টক্সিন রিপোর্ট’ অনুযায়ী এটি পৃথিবীর অন্যতম দূষিত স্থান৷ আবোব্লশি-র আশেপাশের মাটি পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, মাটিতে বিষাক্ত পদার্থের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৫ গুণ বেশি৷
ছবি: Blacksmith Institute
চিতারুম নদী, ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়ার চিতারুম নদীর পানি সাধারণ পানীয় জলের তুলনায় এক হাজার গুণ বেশি দূষিত৷ এই পানিতে বিপুল পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম এবং আয়রনের মিশ্রণ রয়েছে৷ প্রায় দু’হাজার ফ্যাক্টরি এই নদীর পানি ব্যবহার করে এবং একইসঙ্গে শিল্প বর্জ্য এই নদীতেই ফেলে৷ অথচ চিতারুম নদী কয়েক কোটি মানুষের পানির মূল উৎস৷
ছবি: Adek Berry/AFP/Getty Images
জ্যারজিনস্ক শিল্প কেন্দ্র, রাশিয়া
রাশিয়ার রাসায়নিক শিল্পের অন্যতম কেন্দ্র জ্যারজিনস্ক৷ ১৯৩০ থেকে ১৯৯৮ সাল সময়ের মধ্যে এই এলাকার প্রায় তিন লাখ টক রাসায়নিক বর্জ্য ঠিকভাবে বিনাশ করা হয়নি৷ ফলে সেগুলো ভূগর্ভস্থ পানি দূষিত করেছে এবং বাতাসে মিশে গেছে৷
ছবি: Blacksmith Institute
চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্র, ইউক্রেন
এখন অবধি পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক পারমাণবিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল চেরনোবিলে৷ ১৯৮৬ সালের ২৫শে এপ্রিল সেই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলের ত্রিশ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা সব জীব মারা গেছে৷
ছবি: Blacksmith Institute
হাজারিবাগের চামড়া কারখানা, বাংলাদেশ
বাংলাদেশের মধ্যে হাজারিবাগে সবচেয়ে বেশি চামড়া কারখানা রয়েছে৷ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিন ২৭০টি কারখানা থেকে ২২ হাজার ঘন লিটার দূষিত আবর্জনা বের হয় হাজারিবাগে৷ এই আবর্জনায় হেক্সাভ্যালেন্ট ক্রোমিয়াম রয়েছে, যার কারণে ক্যানসার হতে পারে৷ অথচ এই সব বর্জ্যই ঢাকার প্রধান নদী বুড়িগঙ্গায় গিয়ে মেশে৷
ছবি: Blacksmith Institute
কাবওয়ের সীসা খনি, জাম্বিয়া
জাম্বিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কাবওয়ের শিশুরা শরীরের রক্তে অতিরিক্ত সীসা সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছে৷ গত এক শতক ধরে এখানকার সীসা খনিগুলো থেকে ‘ধূলি কণা’ মাটি এবং শহরের আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ছে৷
ছবি: Blacksmith Institute
কালিমান্তানের সোনার খনি, ইন্দোনেশিয়া
বোর্নিও দ্বীপের ইন্দোনেশিয়ার অংশে অবস্থিত কালিমান্তান৷ সোনার খনির জন্য এই এলাকা বিশেষভাবে পরিচিত৷ সোনা খুঁজে পেতে অনেক খনি মার্কারি ব্যবহার করে যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর৷
প্রায় পাঁচ হাজার ফ্যাক্টরির আবর্জনা গিয়ে পড়ে আর্জেন্টিনার মাতানসা-রিয়াচুয়েলো নদীতে৷ এই নদীর দূষণের পেছনে অন্যতম ভূমিকা রাখছে রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদনকারীরা৷
ছবি: Yanina Budkin/World Bank
নাইজার ডেল্টা, নাইজেরিয়া
নাইজার নদীর বদ্বীপ নাইজেরিয়ার অন্যতম জনঅধ্যুষিত এলাকা হিসেবে বিবেচিত৷ সে দেশের মোট জনগোষ্ঠীর আট শতাংশের বাস এখানে৷ দুর্ঘটনা এবং তেল চুরির ঘটনার কারণে প্রতি বছর গড়ে ২৪০,০০০ ব্যারেল পেট্রল নাইজার বদ্বীপে গিয়ে পৌঁছায়, যা পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে৷
ছবি: Terry Whalebone
শিল্প শহর নোরিলস্ক, রাশিয়া
রাশিয়ার শিল্প শহর নোরিলস্কে প্রায় ৫০০ টন কপার এবং নিকেল অক্সাইড ও দুই মিলিয়ন টন সালফার অক্সাইড বাতাসে মিশে গেছে৷ এখানকার বাতাসে দূষণের তীব্রতা এত বেশি যে ফ্যাক্টরির কর্মীদের আয়ু রাশিয়ার গড় আয়ুর চেয়ে দশ বছর কমে গেছে৷