স্বনামধন্য চিত্রগ্রাহক শহীদুল আলমকে সোমবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে৷ তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উস্কানির অভিযোগ আনা হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
বার্তা সংস্থা এএফপিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ পুলিশ৷ ডিবি পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মশিউর রহমানের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, রোববার তাঁকে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) কোর্টে নেয়া হলে আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন৷
এদিকে, শহীদুলের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের কাছে দাবি করেছেন, সোমবার তাঁকে কোর্টে তোলার কথা ছিল, কিন্তু তা না করে একদিন আগেই তা করা হয়েছে৷ তবে মশিউর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, রিমান্ডের পর মেডিকেল চেকআপ করে নির্ধারিত সময়েই শহীদুলকে আদালতে তোলা হয়েছে৷
শহীদুলের বিরুদ্ধে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা ও সামাজিক গণমাধ্যমে অসত্য ও উস্কানিমূলক তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে৷ বিতর্কিত তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মুক্তচিন্তা বিরোধী, নিপীড়নমূলকতাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ৷
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় গত ৫ আগষ্ট তাঁকে তাঁর ধানমণ্ডির বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়৷
এরপর পুলিশ তাঁর দশ দিনের রিমাণ্ড চাইলে আদালত সাত দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন৷ পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগও আনেন ৬৩ বছর বয়সি এই প্রথিতযশা ফটোগ্রাফার৷
ঢাকার সড়কে ফের অনিয়ম
ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে নিয়মে ফিরেছিল ঢাকার রাজপথ৷ মন্ত্রী, পুলিশ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সড়কে চলতে বাধ্য হয়েছিলেন ট্রাফিক আইন মেনে৷ আন্দোলন শেষে সেই ঢাকা আবার ফিরে গেছে চিরচেনা রূপে৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
ফুটওভার ব্রিজের নিচ দিয়ে রাস্তা পারাপার
ঢাকার বেশিরভাগ জায়গাতেই ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করছেন না পথচারীরা৷ ঝুঁকি নিয়ে নীচ দিয়েই রাস্তা পার হচ্ছেন তাঁরা৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে সড়ক পারাপার
গাড়ি চলছে কি চলছে না, তা দেখার সময় কোথায়? সড়ক পারাপারে চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়েই রাস্তা পার হচ্ছেন তাঁরা৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
চলন্ত গাড়িতে ওঠানামা
ঢাকার রাস্তায় চলন্ত গাড়িতে ওঠানামার সাধারণ দৃশ্য এটি৷ বাস চালকরা আগের মতোই যাত্রীদের অনেকটা বাধ্য করছেন এভাবে ওঠানামা করতে৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
রাস্তার মাঝখানে বাস থামানো
যাত্রী তুলতে চালকরা নির্ধারিত জায়গার বদলে বরাবরের মতোই সড়কের মাঝখানে বাস থামিয়ে যাত্রী তুলছেন৷ ঢাকায় যানজটের এটি একটি অন্যতম কারণ৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
বাসের প্রতিযোগিতা
ঢাকায় চলমান ট্রাফিক সপ্তাহের মধ্যে বাসে বাসে প্রতিযোগিতা বন্ধের কথা বলা হলেও তা মানছেন না চালকরা৷ বেশি যাত্রী তোলার জন্য ঢাকার বাস চালকরা প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হচ্ছেন৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
মোবাইল কানে সড়ক পারাপার
মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে অনেককেই সড়ক পার হতে দেখা যায় ঢাকায়, যার ফলে অনেক সময় মারাত্মক দুর্ঘটনারও শিকার হন তাঁরা৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
ফুটপাথে মোটরবাইক
যানজটের শহর ঢাকায় মোটরসাইকেল আরোহীরা সুযোগ পেলেই ফুটপাথকে বেছে নিচ্ছেন তাঁদের চলার পথ হিসেবে৷ ফলে বিপাকে পড়ছেন পথচারীরা৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
বেপরোয়া মোটরবাইক
ঢাকার রাস্তায় মোটরবাইক চালকদের অনেকেই বেপরোয়াভাবে চলাচল করেন৷ বেশিরভাগ সময়ই তাঁদেরকে ট্রাফিক আইন অমান্য করতে দেখা যায়৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
পুলিশের মোটরবাইক
পুলিশের অনেক মোটরবাইকও ঢাকায় চলাচল করে বেপরোয়াভাবে৷ ট্রাফিক সপ্তাহের মধ্যেই ঢাকার ইস্কাটনে হেলমেট ছাড়া বিপরীত দিকে চলতে দেখা গেল এই পুলিশ সদস্যকে৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
বন্ধ হয়নি বাদুড় ঝোলা
ঢাকার রাস্তায় বাসে চলতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় চলাচল বন্ধ করার কথা বলা হলেও ট্রাফিক সপ্তাহের মধ্যেই দেখা গেল সে দৃশ্য৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
আছে লক্কর ঝক্কর বাসও
ট্রাফিক সপ্তাহে পুলিশের পক্ষ থেকে লক্কর ঝক্কর বাস চলাচল বন্ধের কথা বলা হলেও থেমে নেই তা৷ অনেক ক্ষেত্রে লক্কর ঝক্কর বাসকে রঙের সামান্য প্রলেপ দিয়ে চালানো হচ্ছে সড়কে৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
বেপরোয়া ভিআইপি
ছাত্র আন্দোলনে অনেক নাজেহাল হওয়ার পরও বেপরোয়া থেকেই গেছেন অনেক ভিআইপি৷ রং সাইডে এখনো বীরদর্পে চলাচল করতে দেখা যায় তাঁদের৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
পুলিশ কী আইনের উর্ধে?
ঢাকার রাস্তায় ভিআইপিদের পাশাপাশি সবেচেয়ে বেশি ট্রাফিক আইন না মেনে চলাচল করছে পুলিশের গাড়ি৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
বাসে উঠতে সড়কের মাঝে
ঢাকার রাস্তায় বাসে উঠতে পথচারীরা সড়কের অর্ধেকেরও বেশি দখল করে দাঁড়িয়ে আছেন৷ ফলে অনেক সময়ই দুর্ঘটনায় পড়েন অনেকে৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
লেন অমান্য
ঢাকার রাস্তায় চলাচল করতে বিভিন্ন ধরনের বাহনের চালকরা ‘লেন’ মানেন না৷ ফলে সবসময়েই সড়কে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়৷ কয়েকদিনের ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে ঢাকার সড়কে লেন মানতে বাধ্য হয়েছিলেন চালকরা৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
15 ছবি1 | 15
উচ্চ আদালত তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দিলে গত বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হয়৷ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে দুপুরে আবার গোয়েন্দা হেফাজতে ফিরিয়ে আনা হয়৷
এদিকে, জেনেভায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে শহীদুলকে মুক্তির জন্য বাংলাদেশের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা৷ এছাড়া, পুলিশের হেফাজতে তাঁর ওপর যেসব নির্যাতনের অভিযোগ এসেছে সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানিয়েছেন৷
শহীদুল আলমের তোলা ছবি পৃথিবীর বিখ্যাত সব পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে৷ তিনি গ্যালারি দৃক এবং ফটোগ্রাফির স্কুল পাঠশালা'র প্রতিষ্ঠাতা৷
প্রসঙ্গত, ঢাকায় ২৯ জুলাই সড়ক দুর্ঘটনায় দুই স্কুলশিক্ষার্থী নিহতের ঘটনার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে বিভিন্ন স্কুল এবং কলেজের শিক্ষার্থীরা৷ এরপর কয়েকদিন রাজপথে বিভিন্ন গাড়িচালকের লাইসেন্স পরীক্ষাসহ নানা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে তারা৷ এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ এবং ‘সরকার দলের কর্মীরা' চড়াও হলে ছাত্র বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়৷ স্কুল শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রাজপথে বিক্ষোভ শুরু করে৷
হেলমেট পরা দুষ্কৃতিকারীরা সাংবাদিকদের ওপরও হামলা চালায়৷ কয়েকদিনের এই বিক্ষোভে কয়েকশত শিক্ষার্থীর পাশাপাশি সাংবাদিক, পুলিশ এবং ছাত্রলীগের কর্মীরা আহত হন৷ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারেরও ঘটনা ঘটে৷