রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা নিয়ে আশার কথা শোনালেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানালেন, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা এখন অনেক বেশি বাস্তবসম্মত জায়গায় এসেছে। তবে আলোচনা সফল হতে এখনো কিছুটা সময় লাগবে।
মঙ্গলবার তার শেষ ফেসবুক ভিডিও ভাষণে জেলেনস্কি বলেছেন, ''রাশিয়ার বিরুদ্ধে জয় পেতে গেলে ইউক্রেনের সব নাগরিককে কাজ করতে হবে। যে আলোচনাকারী দল রাশিয়ার সঙ্গে এখন কথা বলছেন, তাদেরও কাজ করে যেতে হবে।''
এই আলোচনা বুধবারও চলবে। আলোচনাকে এখন অনেক বেশি বাস্তবসম্মত বললেও জেলেনস্কি তার কোনো বিশদ ব্যাখ্যা দেননি।
রাশিয়া দাবি করেছে, ইউক্রেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে হবে, তারা ন্যাটোতে যোগ দেবে না। এছাড়া দনেৎস্ক, লুহানস্ক ও ক্রাইমিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে ন্যাটোকে।
জেলেনস্কি এর আগে একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তিনি আর ন্যাটোতে যোগ দিতে ইচ্ছুক নন।
ইউক্রেন রাশিয়ার স্বাভাবিক সম্পর্কের অতীত
রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের সম্পর্কের টানাপোড়েন দীর্ঘদিনের৷ তারপরও দুই দেশের মানুষের মধ্যে ছিল যোগাযোগ, কখনও কখনও সরকারের মধ্যেও ছিল স্বাভাবিক সম্পর্ক৷ দেখুন তেমনই কিছু ছবি৷
ছবি: Alexei Nikolsky/TASS/picture alliance
ইয়ানুকোভিচের সময়
চার মাসের রাজনৈতিক সংকটের অবসান ঘটিয়ে ২০০৬ সালে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী হন ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ৷ পরে ২০১০ সালে নির্বাচিত হন প্রেসিডেন্ট৷ তার সঙ্গে ছিলে পুটিন সরকারের নিবিড় সম্পর্ক৷ ছবিতে ২০১০ সালে রাশিয়ার তখনকার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের সঙ্গে বন্দর সংক্রান্ত একটি চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে দেখা যাচ্ছে তাকে৷ ২০১৪ সালে বিক্ষোভের মুখে ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতা ছেড়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন৷
ছবি: AP
ইউক্রেনে পুটিন
২০০৯ সালে রাশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুটিন ও ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া টিমোশেঙ্কোকে করমর্দন করতে দেখা যাচ্ছে৷ রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট পুটিন সেসময় জ্বালানি সংক্রান্ত এক আলোচনার জন্য ইউক্রেনে আসেন৷
ছবি: AP
জ্বালানি চুক্তি
২০০৯ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গ্যাজপ্রমের সঙ্গে চুক্তি করে ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাফগ্যাজ৷ ছবিতে মস্কোতে প্রতিষ্ঠান দুইটির তখনকার দুই প্রধানকে চুক্তিপত্র বিনিময় করতে দেখা যাচ্ছে৷ পেছনে দাঁড়িয়ে রাশিয়ার তখনকার প্রধানমন্ত্রীর ভ্লাদিমির পুটিন ও ইউক্রেনের ইউলিয়া টিমোশেঙ্কো৷
ছবি: AP
খেলার ময়দান
খেলাধুলায় রাশিয়া আর ইউক্রেনের অ্যাথলিটরা মুখোমুখি হয়েছেন বারবার৷ এই ছবিটি ২০০৯ সালের৷ ইউরোপীয়ান ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে ইউক্রেনের স্বর্ণজয়ী ইহর শেমেচকো হাত ধরে আছেন রুশ ব্রোঞ্জজয়ী ইভগেনি পিসারেভ (ডানে) এবং জার্মানির সিলভারজয়ী আলমির ফেলাগিকের (বামে)৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অলিম্পিকে প্রতিপক্ষ
২০১৮ সালের শীতকালীন অলিম্পিকে ফ্রিস্টাইল স্কিয়ার ইভেন্টে স্বর্ণপদক জয় করেন ইউক্রেনের আলেক্সান্ডার আব্রামেঙ্কো৷ ছবিতে তার সঙ্গে ইউক্রেনের পতাকা জড়িয়ে ফটোসেশনে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে ব্রোঞ্জজয়ী রাশিয়ার ইলিয়া বুরোভকে৷
ছবি: picture-alliance/Sputnik/R. Sitdikov
জেলেনস্কির সঙ্গে পুটিন
বর্তমান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ভালো নয়৷ যুদ্ধ থামাতে সম্প্রতি তিনি পুটিনকে তার সঙ্গে বৈঠকে বসার আহ্বান জানালেও সাড়া পাননি৷ তবে দুই নেতা এর আগে এক টেবিলে বসেছেন৷ যেমনটা এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে৷ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পূর্ব ইউক্রেন সংকট নিয়ে ফ্রান্সে চতূর্থ নরমান্ডি বৈঠক শেষের সংবাদ সম্মেলনে ফরাসী প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ ও জার্মানির তখনকার চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের সঙ্গে জেলেনস্কি ও পুটিন৷
ছবি: Alexei Nikolsky/TASS/picture alliance
6 ছবি1 | 6
ইউক্রেনের তরফে আলোচনাকারী পডোলিয়াক জানিয়েছেন, ''আলোচনার ক্ষেত্রে কিছু মৌলিক বিরোধ আছে। তবে সমঝোতার জন্য জায়গাও আছে।''
মর্কিন কংগ্রেসে ভাষণ
জেলেনস্কি বুধবার মার্কিন কংগ্রেসেও ভিডিও-ভাষণ দেবেন। এই নিয়ে একমাসের মধ্যে মার্কিন কংগ্রেসে এটা হবে তার দ্বিতীয় ভাষণ। সেখানে জেলেনস্কি কী বলেন, তার দিকে তাকিয়ে আছে গোটা বিশ্ব।
জেলেনস্কির ভাষণের পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে ৮০ কোটি ডলারের অতিরিক্ত সাহায্যের কথা ঘোষণা করতে পারেন। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই ঘোষণা হলে, এক সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনকে একশ কোটি ডলারের সাহায্য দেয়ার কথা জানাবে অ্যামেরিকা।
এদিকে মার্কিন সেনেট রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিনকে সর্বসম্মতভাবে যুদ্ধাপরাধী বলে ঘোষণা করেছে। বলা হয়েছে, পুটিন যে ইউক্রেন আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা নিয়ে হেগে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিন্যাল কোর্টের তদন্ত করা উচিত।