শারীরিক অবস্থা বিশ্লেষণে টাচ ফ্লোর
২৬ অক্টোবর ২০১০সহায়তা করতে পারে বৃদ্ধ নিবাসে বসবাস পরিস্থিতি নির্ণয়েও৷ সেই ১৯৭০-এর দশকে টাচ স্ক্রিন ডিভাইসের উন্নয়ন ঘটানো হয়েছিল, এটি কল্পনা করা কষ্টকর৷ কিন্তু ২০০৭ সালে অ্যাপেলের আই ফোন বাজারে আসো৷ এর মধ্যে দিয়েই টাচ স্ক্রিন কারিগরি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে বাজারে৷ আর আজকাল তো বাজারে টাচ স্ক্রিন ডিভাইসের ছড়াছড়ি৷ টাচ ফোন থেকে শুরু করে স্ক্রিন এবং টেবিল পর্যন্ত পাওয়া যায়৷ একদল গবেষক জার্মানিতে মাল্টি টাচ ফ্লোর নিয়ে কাজ করছেন৷ এই গবেষণা প্রকল্প এগিয়ে যাচ্ছে৷ নকশা তৈরি করা হচ্ছে৷ সম্ভবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে, টাচ সেনসিটিভ ফ্লোর বা সংবেদনশীল মেঝের৷
জার্মানির রাজধানী বার্লিনের ঠিক প্রান্তে পটসডাম৷ সেখানেই হাসো প্লাটনার ইন্সটিটিউট৷ হিউম্যান কম্পিউটার ইন্টাব়অ্যাকশান গ্রুপের প্রধান অধ্যাপক প্যাট্রিক বাউডিশ৷ তিনি একটি কফি টেবিলের সমান টাচ স্ক্রিন নকশার ওপরে দাঁড়িয়ে ছিলেন৷ অর্থাৎ একটি টাচ স্ক্রিন মেঝের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি৷ মেঝেটির মাপ লম্বাতে এক মিটার আর প্রস্থে আধ মিটার৷ মোটা কাঁচ দিয়ে মেঝেটি তৈরি করা হয়েছে৷ এবং ওপরে রয়েছে কালো এক খন্ড তন্তু৷ আর এর নীচে রয়েছে একটি ক্যামেরা৷ তিনি এই মেঝের ওপরে দাঁড়ালেই তাঁর জুতোর সোলের ছবিটি জ্বলে উঠছিল৷
প্যাট্রিক বাউডিশ বললেন,‘‘আমি যখন আমার জুতো নিয়ে এই মেঝের ওপর দিয়ে হাঁটছি, তখন এই মেঝেতে আমার পায়ের ছাপ ফুটে উঠছে৷ আর এর মাধ্যমেই আমরা জানতে পারবো, যে মানুষটি হেঁটে গেছেন, তিনি কোথায়৷ আর একই সঙ্গে জানা যাবে যে, মানুষটি কী ধরণের জুতো পড়েছেন৷ কারণ এই মেঝেটি মানুষের জুতোর সোলকে মনে রাখতে পারে৷''
গবেষকদল এমন একটি কারিগরি প্রযুক্তি ব্যাবহার করছে যেটিকে বলা হচ্ছে, ফ্রাস্ট্রেটেড টোটাল ইন্টারনাল রিফ্লেকশন৷ নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেফ হ্যান মাল্টি টাচ ডিসপ্লে-তে এটি ব্যাবহারের আগে, এটি হাতের ছাপের স্ক্যানার উন্নয়নে ব্যবহার করা হয়েছিল৷ বাউডিশ এবং তাঁর দল, আশা করছে, বিশ্ব মানচিত্র এবং কম্পিউটার গেমের মত বড় ধরণের ভিজুয়াল ডাটার মিথস্ক্রিয়ার ক্ষেত্রে এই মাল্টি টাচ মেঝে কার্যকর হবে৷
একটা মজার ব্যপার হচ্ছে এই মাল্টি টাচ ফ্লোরে লগ ইন করা যায় অর্থাৎ ঢোকা যায় ঠিক কম্পিউটারের মতো৷ কারণ বিভিন্ন ধরণের জুতোর নকশার ওপরে ভিত্তি করে এটি মানুষকে স্মরণ করতে পারে৷ এই প্রকল্পে কাজ করছেন টোমাস আউগুস্টেন৷ তিনি একজন ছাত্র৷ তিনি মাল্টি টাচ মেঝেতে পা ফেলা মাত্রই তাঁর জুতোর সামনে ফুটে উঠলো এই প্রশ্ন - হু আর ইউ? অর্থাৎ তুমি কে?
টোমাস আউগুস্টেনের ভাষায়, ‘‘মেঝেটি আমাকে চিনতে পারছিল না৷ এবং আমি বললাম, আমি একজন নতুন লোক৷ তখন মেঝে আমার জুতো স্ক্যান করলো এবং আমি একটি রঙ পেলাম৷''
এই সময় মেঝের ওপর একটা কী-প্যাড ফুটে উঠলো এবং টোমাস মেঝে টাচ করে জুতো দিয়ে তার নিজের নামটি লিখলেন৷ এবং তার পর থেকেই তিনি একজন তালিকাভুক্ত ব্যবহারকারীতে পরিণত হলেন৷ এটি দেখতে খুব মজা লাগলেও, পা দিয়ে লেখার ব্যাপারটা খুব কঠিন৷ তবে নতুন এই প্রযুক্তি সত্যিই আগ্রহ উদ্দীপক৷
প্রতিবেদক: ফাহমিদা সুলতানা
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক