1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শাহবাগ আন্দোলনের বর্ষপূর্তি

৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের কর্মকাণ্ডকে রাজনৈতিক মনে করেন ব্লগার আরিফ জেবতিক৷ ভবিষ্যতে জনগণ যেভাবে চাইবে, পরিচালনা করবে সেভাবেই বাড়বে মঞ্চের কর্ম পরিধি৷ শাহবাগ আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে একথা বলেন আরিফ৷

Bagladesch Demo Urteil Abdul Quader Mollah
শাহবাগ আন্দোলনছবি: Reuters

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম বড় ঘটনা শাহবাগ আন্দোলন৷ একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি নিয়ে গত বছরের পাঁচ ফেব্রুয়ারি এই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল৷ ব্লগার এবং ইন্টারনেট অ্যাক্টিভিস্টদের ফেসবুক আহ্বানে সেদিন শাহবাগে জড়ো হন কয়েক হাজার মানুষ৷ এরপর অল্প সময়ের মধ্যে শাহবাগ পরিণত হয় জনসমুদ্রে৷

সেই জনসমুদ্রের প্রাথমিক লক্ষ্য পূরণ হয়েছে৷ কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়েছে গত ১২ ডিসেম্বর৷ কিন্তু শাহবাগ আন্দোলনের লক্ষ্য কি শুধু এটাই ছিল? নিশ্চয়ই নয়৷ গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে শুরু থেকে সম্পৃক্ত আছেন ব্লগার এবং ইন্টারনেট অ্যাক্টিভিস্ট আরিফ জেবতিক৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘গত এক বছর ধরে আমরা রাস্তায়ই ছিলাম৷ মূলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে লড়াই সেটি আমরা চালিয়ে যাচ্ছি৷ বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এবং বিভিন্ন সময়ে আমাদের কর্মসূচিতে ভিন্নতা এসেছে৷ কিন্তু আমরা সেই সংগ্রামে আছি এবং স্বল্পমেয়াদি আমাদের কিছু সাফল্যও আছে৷''

‘জনগনের ইচ্ছায় চলবে মঞ্চ’

This browser does not support the audio element.

খুন, নাস্তিক, গ্রেপ্তার

শাহবাগ গণজাগরণের মঞ্চের গত এক বছরের পথচলা মোটেই সহজ ছিল না৷ বরং আন্দোলনের এক পর্যায়ে খুন হন ব্লগার রাজিব হায়দার৷ এরপর ঢালাওভাবে ব্লগারদের নাস্তিক এবং ইসলাম ধর্মবিরোধী আখ্যা দিয়ে তাঁদের শাস্তির দাবিতে রাজপথে নামে হেফাজতে ইসলাম৷ এক পর্যায়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ব্লগে ‘ইসলাম ধর্ম নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্য ও কটূক্তির' অভিযোগে চার ব্লগারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, যাঁরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শাহবাগ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷

আরিফ জেবতিক মনে করেন, যুদ্ধাপরাধীদের দোসরদের ব্লগার বিরোধী প্রচারণা কিংবা সরকারের গ্রেপ্তারের ফলে গণজাগরণ মঞ্চের প্রতি জনসমর্থনে কোনো ভাটা পড়েনি৷ এছাড়া সময়ের সাথে সাথে শাহবাগে জনস্রোত কমে যাওয়ার কারণও ভিন্ন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের শুরুতে যে জনসমর্থন ছিল, আজকেও সেই একই জনসমর্থন আছে৷ এবং আমি চ্যালেঞ্জ করি যে কোনো মিডিয়া এটা জরিপ চালিয়ে দেখতে পারে৷''

‘‘বাস্তবতা হচ্ছে, (শাহবাগ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত) কেউই প্রফেশনাল পলিটিশিয়ান না৷ আমরা প্রত্যেকেই সমাজের ভিন্নভিন্ন জায়গার মানুষ৷ ফেব্রুয়ারির পাঁচ তারিখ আমরা যখন শাহবাগে সমবেত হই, আমরা পেছনে আমাদের সংসার, আমাদের ছাত্রজীবন, আমাদের চাকুরিজীবন, ব্যবসায়ী জীবনকে ফেলে রেখে এসেছিলাম৷ আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের পক্ষে দীর্ঘসময় রাজপথে অবস্থান সম্ভব হয় না৷ এর মানে এই নয় যে, শাহবাগের জনসমর্থন কমে গেছে বা শাহবাগকে মানুষ ভুলে গেছে৷''

তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি?

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলন ছাড়াও গত এক বছরে আরো অনেক ইস্যুতে সক্রিয় হয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ৷ গত এপ্রিলে সাভারের রানা প্লাজায় ভবন ধসের পর আহতদের জন্য দ্রুত রক্ত সংগ্রহের উদ্যোগ নেয় এই মঞ্চ৷ সেসময় উদ্ধার কাজেও সহায়তা করে মঞ্চের কর্মীরা, তৈরি করে অস্থায়ী ফিল্ড হাসপাতাল৷ সর্বশেষ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তাও এগিয়ে আসে গণজাগরণ মঞ্চ৷ তাদের এ সংক্রান্ত রোড মার্চও জনসমর্থন অর্জনে সক্ষম হয়৷

সামগ্রিকভাবে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকে রাজনৈতিক আন্দোলন মনে করেন আরিফ জেবতিক৷ স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, ভবিষ্যতে তৃতীয় কোন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে এই মঞ্চের উত্থানের কি কোনো সম্ভাবনা রয়েছে? এই ব্লগার অবশ্য মঞ্চকে কোনোভাবেই তৃতীয় শক্তি হিসেবে মানতে নারাজ৷ বরং তাঁর কথায়, ‘‘আমার সাধারণ মানুষই প্রথম রাজনৈতিক শক্তি৷ শাহবাগ কখনো তৃতীয় শক্তি হওয়ার জন্য সৃষ্টি হয় নাই৷ এবং এখন পর্যন্ত তৃতীয় শক্তি হওয়ার কোনো চিন্তাভাবনা নেই৷''

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের শক্তি হিসেবে শাহবাগ নিজেকে সবসময় প্রথম শক্তি হিসেবে দাবি করে৷''

‘জনগণের ইচ্ছায় চলবে মঞ্চ'

আন্দোলন রাজনৈতিক হলেও গণজাগরণ মঞ্চ শীঘ্রই রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের সম্ভাবনা আপাতত দেখছেন না আরিফ জেবতিক৷ তবে ভবিষ্যতে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী চলার কথা জানিয়েছেন তিনি৷ বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলো যদি জনগণের প্রত্যাশা পূরণে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের উপর চাপ সৃষ্টিতে ‘বিভিন্ন পদ্ধতি' বিবেচনা করবে মঞ্চ৷

শাহবাগে ব্লগার আরিফ জেবতিকছবি: Arif Jebtic

শাহবাগ আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা আরিফ জেবতিক বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে মানুষ আমাদের যেভাবে চাইবেন, যেভাবে পরিচালনা করবেন, আমরা সেভাবে – অতীতেও কাজ করেছি, বর্তমানেও করছি এবং – ভবিষ্যতে হয়ত আরো বেশি আকারে কাজ করার চেষ্টা করবো৷''

সাক্ষাৎকার: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ