শিকাগোর শহরতলিতে স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডে গুলি চললো। মৃত ছয়, আহত অন্ততপক্ষে ৩০ জন।
বিজ্ঞাপন
অ্যামেরিকায় গুলি-কাণ্ড অব্যাহত। শিকাগোর শহরতলিতে স্বাধীনতা দিবসের প্যারেড শুরু হতেই একটি দোকানের ছাদ থেকে গুলি চালায় এক বন্দুকধারী। প্যারেড তখন তার ঠিক নীচ দিয়ে যাচ্ছিল।
অভিযুক্ত বন্দুকধারীর নাম রবার্ট ক্রিমো, বয়স ২২ বছর। এক ঘণ্টা ধরে খোঁজ করে তাকে ধরা হয়। এই ঘটনা ঘটেছে হাইল্যান্ড পার্ক নামে একটা অঞ্চলে, সেখানে মূলত বিত্তবানেরা থাকেন।
অ্যামেরিকায় এখন গুলিচালনা কার্যত জীবনের অঙ্গ হয়ে গেছে বলে এবিসি নিউজ জানাচ্ছে। সম্প্রতি স্কুলে, শপিং মলে, চার্চে, দোকানে গুলি চলেছে। এবার স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডে গুলি চললো। এতকিছুর পরেও অস্ত্র আইনের সামান্য সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু তা যথেষ্ট কড়া করা হয়নি। প্রেসিডেন্ট বাইডেন চাইলেও অত্যন্ত কড়া অস্ত্র আইনে মার্কিন কংগ্রেস সায় দেয়নি।
ইলিনয়ের গভর্নর জে বি প্রিটজকার বলেছেন, ''ভয়ংকর ঘটনা। উৎসবেও গুলি চললো। গুলিচালনার ঘটনা প্লেগের মতো ছড়াচ্ছে।'' তিনি জানিয়েছেন, ''আমি অসম্ভব ক্ষুব্ধ। এরকম হওয়ার ছিল না। আমরা যখন স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান পালন করছি, সেখানেও গুলি চললো। গুলি করে মানুষের মৃত্যু তো সাপ্তাহিক ঘটনা হয়ে গেছে।''
কী হয়েছিল
প্যারেড শুরু হওয়ার পরেই গুলি চলে। সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বাজনা বাজাতে বাজাতে যাচ্ছেন প্যারেডে সামিল মানুষ। অনেকে রাস্তার ধারে বসে মোবাইলে ছবি নিচ্ছেন। এমন সময় গুলি চলতে শুরু করে। মানুষ দৌড়ে পালাতে থাকেন।
পুলিশ প্রধান ক্রিস ও'নিল বলেছেন, ''সঙ্গে সঙ্গে অন্তত দুই ডজন মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ছয়জনকে মৃত বলে জানানো হয়।''
শিকাগোর এই অঞ্চলে স্বাধীনতা দিবস পালনের সব অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, তিনি ও তার স্ত্রী জিল এই সহিংসতায় শোকস্তব্ধ।
একের পর বন্দুক হামলায় বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র৷ অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবিতে ‘মার্চ ফর লাইভস’-এ অংশ নিলেন হাজারো মার্কিন নাগরিক৷
ছবি: REUTERS
সন্তানকে আঁকড়ে
টেক্সাসের ইউভ্যালডিতে প্রাথমিক স্কুলে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালায় এক বন্দুকধারী৷ তাতে প্রাণ হারায় ১৮ শিশু-সহ ২১ জন৷ সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকরা ৷ মিছিলেও দেখা গেল সেই ছবি৷ সন্তানের হাত আঁকড়ে অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবি জানালেন মা-বাবারাও৷
ছবি: REUTERS
প্রতিবাদের স্বর
২০১৮ সালে ডগলাসে বন্দুক হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন এক্স গঞ্জালেজ৷ ‘মার্চ ফর আওয়ার লাইভস’-এর সহ-উদ্যোক্তা তিনি৷ ওয়াশিংটন ডিসিসহ সারা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন তারা৷
ছবি: REUTERS
চোখে জল, লক্ষ্যে অবিচল
সমাবেশে পা মিলিয়েছেন গঞ্জালেজ৷ বক্তৃতাও দিয়েছেন৷ সেই সময় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তিনি৷ এতগুলো মানুষকে হারিয়ে ফেলার দুঃসহ স্মৃতি আজো তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে ৷
ছবি: REUTERS
হাজারো মানুষের প্রতিবাদ
নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন ব্রিজে হাজারো মানুষ হাঁটলেন অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবিতে৷ ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ডেও দেখা গেছে এমন সমাবেশ৷
ছবি: REUTERS
ন্যাশনাল মলে..
মানুষের মাথা ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছিল না ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মলের সমাবেশে৷ ১১ জুনের বিপুল সমাবেশে অংশ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আপামর সাধারণ নাগরিকেরা৷
ছবি: REUTERS
স্মৃতির ভার
খোসে বাদিও নামে এক ব্যক্তি বন্দুক হামলায় নিহত শিশুদের ছবির সামনে প্রতিবাদের পতাকা জুড়ে দিচ্ছেন৷ ছবিটি টেক্সাসের অস্টিনের৷
ছবি: REUTERS
ঝরে যাওয়া প্রাণ
স্কুলে পড়াশোনা করতে এসে আর বাড়ি ফেরেনি ইভা মিরেলেস৷ তার মতো অনেক শিশুই আর বেঁচে নেই৷ ক্রুশ আর গোলাপে তাদের স্মরণ করা হয়েছে৷
ছবি: REUTERS
ফিরবে না বোন
তুতো বোন জ্যাকি কাজারেস আর ফেরেনি৷ টেক্সাসের ইউভ্যালডির স্কুলে নিহত পড়ুয়াদের মধ্যে সে-ও একজন৷ বড় বোন ক্রিস্টেলা মেনডোজা বোনের হাসিখুশি মুহূর্তের একটি ছবি হাতে নিয়ে কঠোর অস্ত্র আইনের দাবিতে অস্টিনের সমাবেশে অংশ নিয়েছেন৷
ছবি: REUTERS
বুলেট নয়, বই চাই
যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষকরাও অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবিতে পথে নেমেছেন৷ ‘অ্যামেরিকান ফেডারেশন অফ টিচার্স’-এর প্রেসিডেন্ট রান্ডি ওয়েইনগার্টেন৷ ‘মার্চ ফর আওয়ার লাইভস’-এ বক্তব্য রেখেছেন তিনিও৷
ছবি: Joshua Roberts/REUTERS
পুলিশের সঙ্গে
সমাবেশে এক প্রতিবাদীর সঙ্গে কথা বলছেন এক পুলিশকর্মী৷ বিপুল সমাবেশে যাতে কোনোরকম গন্ডগোল না হয়, সে দিকে কড়া দৃষ্টি ছিল প্রশাসনের৷ অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজেও অস্ত্র আইন কঠোর করার পক্ষেই৷
ছবি: Ken Cedeno/REUTERS
আর কেউ যেন সন্তান না হারায়
পার্কল্যান্ডে বন্দুক হামলায় প্রাণ হারিয়েছিল জোয়াকিন অলিভার৷ তার বাবা ম্যানুয়েল অলিভার এবং মা প্যাট্রিসিয়াও প্রতিবাদ মঞ্চে ছিলেন৷ এছাড়াও ছিলেন ডগলাসে বন্দুক হামলায় বেঁচে যাওয়া ডেভিড হগ৷
ছবি: Jonathan Ernst/REUTERS
ফুলে স্মৃতিচারণ
অজস্র পড়ুয়া পা মেলান এই সমাবেশে৷ তেমনই নিহত পড়ুয়াদের স্মৃতিতে সারি সারি ফুলের মাধ্যমে পড়ুয়াদের স্মৃতিচারণ করা হয়েছে৷ তেমনভাবেই অজস্র নোটবুক, ভেঙে যাওয়া পেনসিলের টুকরো রেখেও স্মরণ করা হয়েছে পড়ুয়াদের৷
ছবি: Allison Bailey/NurPhoto/IMAGO
শিশু হত্যা ও বন্দুক
এক ব্যক্তির হাতে একটি পোস্টার ছিল৷ তাতে একটি বন্দুকের ছবি৷ বন্দুকের পাশে লেখা ‘বেবি কিলার’ অর্থাৎ শিশু হত্যাকারী৷
ছবি: Jonathan Ernst/REUTERS
13 ছবি1 | 13
অ্যামেরিকার অবস্থা
গান ভায়োল্ন্স আর্কাইভ ওয়েবসাইটের হিসাব হলো, অ্যামেরিকায় প্রতি বছর গুলিতে ৪০ হাজার মানুষ মারা যান। গত মে মাসে নিউ ইয়র্কের সুপারমার্কেটে গুলি চালিয়ে ১০ জনকে মারা হয়। টেক্সাসে স্কুলে গুলি চালানোর ফলে ২১ জন মারা যান। অধিকাংশই বাচ্চা। অস্ত্র আইনে সংশোধনী অনুমোদন করে কংগ্রেস। বাইডেন তাতে সইও করেছেন। জুন মাস থেকে সেই সংশোধনী চালু হয়েছে। কিন্তু তখনই বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছিল, যতটা কড়া আইন করা দরকার তা হয়নি।