1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিক্ষকেরা এখন শুধু প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চান

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৩ জুলাই ২০২৩

জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনে থাকা এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষকেরা এখন শুধু পাঁচ মিনিটের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চান। হাসিনা যা বলবেন তা মেনে নিয়ে শিক্ষকেরা বাড়ি চলে যাবেন বলে ডয়চে ভেলেকে জানায় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি।

আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা এখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান
আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা এখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চানছবি: PID Bangladesh government

গত ১১ জুলাই থেকে এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষকেরা তাদের জাতীয়করণ বা সরকারি করার দাবীতে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষকরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই অবস্থান করছেন। কয়েকজন শিক্ষক টানা অবস্থানের কারণে অসুস্থও হয়ে পড়েছেন। কিন্তু সরকারের দিক থেকে দাবি মানার ব্যাপারে কোনো ইতিবাচক সাড়া মিলছে না। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি জানিয়ে দিয়েছেন নির্বাচনের আগে তাদের দাবিদাওয়া বিবেচনায় নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই  আন্দোলনরত শিক্ষকেরা এখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান। সেটা না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেছেন।

'প্রধানমন্ত্রী যা বলবেন, মেনে নেবো'

This browser does not support the audio element.

বাংলাদেশে মোট মোট ২০ হাজারের মতো মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬৮৪টি সরকারি। বাকিগুলো এমপিওভুক্ত। তাদের মূল বেতনও সরকার দেয়। মাধ্যমিক স্তরের স্কুলের ৯৬ ভাগেরও বেশি বেসরকারি এমপিওভুক্ত। আর তাদের শিক্ষক সংখ্যা তিন লাখেরও বেশি।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মূল বেতন সরকার দেয়। কিন্তু তাদের কথায়, "মূল বেতন সরকার দিলেও বাড়ি ভাড়া দেয়া হয় মাসিক মাত্র এক হাজার টাকা। উৎসব ভাতা দেয়া হয় মূল বেতনের শতকরা ২৫ ভাগ। চিকিৎসা ভাতা দেয়া হয় মাসে মাত্র ৫০০ টাকা। পেনশন নেই। আর কল্যাণ তহবিলের নামে মূল বেতনের শতকরা ১০ ভাগ কেটে রাখা হয়। কিন্তু অবসরের পর সেই টাকাও ঠিকমত শিক্ষকরা পান না।”

তারা আরো বলেন," এমপিওভুক্ত একজন শিক্ষককে চাকরির শুরুতে মূল বেতন দেয়া হয় ১২ হাজার ৫০০ টাকা। আর সরকারি শিক্ষককে দেয়া হয় ১৬ হাজার টাকা। এখানেও বৈষম্য। এখন যে বাজার দর তাতে এই বেতনে আমাদের জন্য টিক থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।”

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির(বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওসার আহমেদ বলেন," আমরা শুধু শিক্ষক নয়, মাধ্যমিক স্কুল এবং ছাত্র সবই জাতীয়করণের দাবি করছি। সরকারি স্কুলে শিক্ষার্থীরা ২০ টাকা বেতনে পড়তে পারে। কিন্তু বেসরকারি স্কুলে মাসে পাঁচ হাজার টাকাও বেতন আছে। আমরা চাই শিক্ষার বৈষম্য দূর হোক। আমরা একই ক্যারিকুলাম পড়াই। মাধ্যমিক শিক্ষা বলতে গেলে পুরোটাই আমাদের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু আমরা বৈষম্যের শিকার।”

আন্দোলন শুরুর পর আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এবং শিক্ষামন্ত্রী দুই দফা বৈঠক করেছেন। শিক্ষামন্ত্রী বৈঠকে জানিয়েছেন নির্বাচনের আগে তাদের দাবী বিবেচনায় নেয়া সম্ভব নয়।  জাতীয় নির্বাচনের পর দেখা যাবে। 

তিনি বলেছেন," যারা আন্দোলন করেছেন তারা এমপিওভুক্ত। তারা আগে বেসরকারি ছিলেন। গত সাড়ে চার বছরে সাড়ে পাঁচ হাজার মাধ্যমিক স্কুল এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। এখন তারাই জাতীয়করণ বা সরকারি হতে চাইছে। কিন্তু এটা অনেক জটিল কারণ এখানে যোগ্যতার প্রশ্ন আছে। এখানে নিয়োগ প্রক্রিয়ার ভিন্নতা আছে। শিক্ষার মান নিয়ে কথা আছে। সবার যোগ্যতা এক নয়। যারা শিক্ষা ক্যাডারের তারা নন-ক্যাডারের সঙ্গে  এক জায়গায় আসবেন কি না। তাই দুইটি কমিটি করা হয়েছে পুরো বিষয়টি নিয়ে কাজ করার জন্য। তারা দেখবেন কীভাবে কী করা যায়। তবে এতে অনেক সময় লাগবে। ”

তিনি আরো বলেন," দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় সরকারের খরচের দিকটাও দেখতে হবে।”

'শিক্ষামন্ত্রীর গড়া দুটি কমিটি এগুলো দেখুক'

This browser does not support the audio element.

অভিযোগ উঠেছে যে নির্বানের আগে সরকারকে চাপে ফেলে শিক্ষকরা দাবি আদায় করতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা এখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকশেখ কাওসার আহমেদ বলেন, "আমরা আসলে আরো আগে থেকেই আন্দোলন করছি। আন্দোলন চলতে চলতে নির্বাচন চলে এসেছে। আমাদের মাথায় নির্বাচন নাই। আমরা আমাদের বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টার সঙ্গেও দেখা করেছি। এখন আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই। পাঁচ মিনিটের জন্য হলেও। তিনি যা বলবেন আমরা তা মেনে নিয়ে বাড়ি চলে যাবো। তা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।”

তবে শিক্ষকদের আরেকাট সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) আন্দোলন প্রত্যাহার করেছে। বাশিস-এর সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি বলেন," আমাদের দাবি দাওয়া যৌক্তিক। আমরা বৈষম্যের শিকার। এটা নিয়ে আগেও আন্দোলন করেছি। কিন্তু আমাদের যে দাবি তা এক সঙ্গে পূরণ হবেনা। অনেক সময় লাগবে। ধাপে ধাপে করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী দুইটি কমিটি করেছেন। তারা দেখুক।আর প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা কবির বিন আনোয়ারের সঙ্গে আমরা দেখা করেছি। তিনিও বলেছেন নির্বাচনের পরে যে সরকার আসবে তারা দেখবে।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী তো দেশের বাইরে(ইটালি) চলে গেছেন। তাই এখন আর আন্দোলনে থেকে লাভ দেখছিনা।”

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ