1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হাবিবি সেন্টার

৪ জুন ২০১২

ইন্দোনেশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইউসুফ হাবিবি৷ ১৯৯৯ সালের নভেম্বরে জাকার্তায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন হাবিবি সেন্টার৷ গণতন্ত্র চর্চার পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করা হয়ে থাকে এই সেন্টারে৷

ছবি: Fotolila/Andres Rodriguez

১৯৩৬ সালের ২৫শে জুন সুলাওয়েসির পারেপারে জন্মগ্রহণ করেন বাচারুদ্দিন ইউসুফ হাবিবি৷ ১৯৯৮ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তিনি ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷ ১৯৫৪ সালে তিনি বৃত্তি নিয়ে জার্মানির আখেন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন প্রকৌশলী বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য৷ তিনি ডিগ্রি কোর্স শেষ করার পর ১৯৬৫ সালে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন৷ এরপর ১৯৭৪ সালে তিনি ফিরে যান ইন্দোনেশিয়ায়৷ ১৯৭৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সুহার্তো তাঁকে গবেষণা এবং প্রযুক্তি দপ্তরের মন্ত্রী করেন৷ প্রেসিডেন্ট সুহার্তো ক্ষমতা ছাড়ার পর ১৯৯৮ সালের মে মাসে হাবিবি এক বছরের জন্য ইন্দোনেশিয়ার তৃতীয় প্রেসিডেন্টের পদে অধিষ্ঠিত হন৷ তবে তা মাত্র এক বছরের জন্য৷ এর পরের বছরেই তিনি তার স্ত্রী এবং পুত্রদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন হাবিবি সেন্টার৷

ইন্দোনেশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাচারুদ্দিন ইউসুফ হাবিবিছবি: Bacharuddin Jusuf Habibie

ইন্দোনেশিয়া একসময় উপনিবেশ ছিল৷ তারপর স্বৈরতন্ত্রের কবলে ছিল অনেক দিন৷ বৈষম্য ছিল নিত্যদিনের ঘটনা৷ কিন্তু এরপরও ধীরে ধীরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে ইন্দোনেশিয়া৷ এ প্রসঙ্গে ইউসুফ হাবিবি জানান, ইন্দোনেশিয়ায় ২৪ কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস৷ দেশটি প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ৷ তাই এই দেশটিতে বেশ কয়েকবার হানা দিয়েছে ঔপনিবেশিক শক্তিগুলি৷ আর এসব আঘাতের কারণেই মানুষরা সবসময়ই এক হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে৷ এক জাতি, এক কণ্ঠ, এক গোষ্ঠী, এক ভাষা – এই প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়ার মানুষ স্বাধীনতার দাবিতে৷ যদিও বার বার আঘাত এসেছে, তারপরেও কয়েক'শো বছর সময় লেগেছে গণতন্ত্রের ছোঁয়া পেতে৷

গণতন্ত্র চর্চায় হাবিবি সেন্টার

জাকার্তার হাবিবি সেন্টারের গণতন্ত্রের জন্য মানুষদের উদ্বুদ্ধ করা হয়৷ রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়ানো হয় তরুণ প্রজন্মের মধ্যে৷ শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার বিষয়ে বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়৷ খেলার ছলে সব কিছু বোঝানো হয়, শেখানো হয়৷ আর ঠিক এই খানেই শিক্ষার সঙ্গে গণতন্ত্রকে জুড়ে দিয়েছেন ইউসুফ হাবিবি৷

তিনি জানান, বিশ্বায়নের এই যুগে উৎপাদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷ একটি সমাজ কী উৎপাদন করলো তা সবাই জানতে চায়, দেখতে চায়৷ আর ইতিবাচক উৎপাদন সবসময়ই একটি দেশের, একটি জাতির, সেই দেশের মানুষের মানসিকতা, সৃজনশীলতা, সংস্কৃতি, ধর্মের সুষম সমন্বয়কে উপস্থাপন করে৷ এর পাশাপাশি রয়েছে প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান৷ প্রথাগত শিক্ষা এবং পারিবারিক শিক্ষার প্রতিফলন হচ্ছে সুষম সমন্বয়৷ তবে এসব অর্জনের জন্য চাই স্বাধীনভাবে চিন্তা করা সুযোগ এবং ক্ষমতা৷ আর ঠিক এ কারণেই মানবাধিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পালন করে৷ মানবাধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের কারণেই বাক স্বাধীনতা, রাজনৈতিক দল গঠনের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা – এসব নিশ্চিত করতে হবে৷ আর তা করতেই ইউসুফ হাবিবি প্রতিষ্ঠা করেছেন হাবিবি সেন্টার৷

শিক্ষার জন্য প্রবল তৃষ্ণা

গণতন্ত্রের দাবিতে শিক্ষা বা গণতন্ত্রের প্রয়োজনে শিক্ষা – বিশ্বায়নের এই যুগে তা কতটা প্রয়োজনীয়? এ প্রশ্নের উত্তরে ইউসুফ হাবিবি বলেন, প্রযুক্তির কারণে শিক্ষা আগের চেয়ে এখন অনেক সহজ হয়েছে৷ অনেক দ্রুত মানুষের কাছে বিভিন্ন ধরণের তথ্য পৌঁছে যাচ্ছে৷ এখন জাতি, ধর্ম, বিশ্বাস – এগুলোর চেয়ে ন্যায়-বিচার, উন্নয়ন এবং অগ্রগতির দিকে সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেড়েছে৷ আমাদের চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে, না এলেও পরিবর্তন আনতে হবে৷ মানুষের আচার-আচরণেও পরিবর্তন এসেছে৷ ইন্টারনেট, গ্লোবাল টেলিভিশন প্রোগ্রামিং – এসব প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব ফেলছে৷ এছাড়া সুশিক্ষা এবং উন্নতমানের শিক্ষা ব্যবস্থা শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার আলোকিত পথ দেখায়৷ এর পাশাপাশি প্রভাবমুক্ত প্রচার মাধ্যমও একটি জাতিকে, একটি সমাজকে তথ্যে সমৃদ্ধ করতে পারে৷ প্রচার মাধ্যমগুলো যদি দয়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করে, তাহলে তারাও হয়ে উঠতে পারে শিক্ষা ব্যবস্থার আরেকটি অংশ৷

২০০৩ সালে ইন্দোনেশিয়ায় জাতীয় আইনে বলা হয়েছে, যে দেশের জাতীয় বাজেটের শতকরা ২০ শতাংশ শিক্ষার পেছনে ব্যয় করতে হবে৷ ২০০৯ সালে প্রথমবারের মত তা পূর্ণ করা সম্ভব হয়েছে৷ শতকরা ৯০ শতাংশ শিশু স্কুলে ভর্তি হয়েছে৷ এর পেছনে কাজ করেছে সাধারণ মানুষের সচেতনতা এবং শিক্ষার জন্য প্রবল তৃষ্ণা৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ