শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘দ্রুত’ খুলতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
২ সেপ্টেম্বর ২০২১
করোনার প্রকোপ কমায় খুব দ্রুত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ সবাইকে সচেতন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায় বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপনের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন৷
তিনি বলেন, ‘‘আমরা খুব তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি৷ সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷ শিক্ষকদের টিকা দেওয়া হয়েছে৷ শিক্ষকদের সাথে স্কুলে কর্মরত যারা, তাদের পরিবারসহ যাতে টিকা দেওয়া হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷’’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের ছেলেমেয়েদের… যেহেতু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কতগুলি নির্দেশনা আছে৷ সেই নির্দেশনা মেনেই স্কুলের ছেলেমেয়েদেরও টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি৷ ফাইজারের কিছু টিকা পৌঁছেছে, আরো পৌঁছাবে৷ মডার্নার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি৷ অন্যান্য টিকাও আসছে৷ ইতোমধ্যে টাকাও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ প্রায় ছয় কোটি টিকার জন্য টাকা দিয়ে দিয়েছি৷’’
করোনায় স্কুল বেশি দিন বন্ধ রাখা দেশের তালিকায় বাংলাদেশ
করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বের ১৬ কোটিরও বেশি শিশুর স্কুল এক বছর ধরে পুরোপুরি বন্ধ৷ ইউনিসেফের প্রতিবেদনে এক বছর ধরে স্কুল বন্ধ রাখা ১৪টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে৷
ছবি: Chris Farber Productions Inc./UNICEF/Getty Images
১৬ কোটি ৮০ লাখ শিশুর স্কুল বন্ধ
এ বছরের ৩ রা মার্চ জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) স্কুল বন্ধ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে৷ সেখানে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের ১৬ কোটি ৮০ লাখেরও বেশি শিশুর স্কুল এক বছর ধরে পুরোপুরি বন্ধ৷
ছবি: Chris Farber Productions Inc./UNICEF/Getty Images
১৪টি দেশের বেশিরভাগ স্কুল বন্ধ
প্রতিবেদনের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ‘‘বিশ্বব্যাপী ১৪টি দেশের বেশির ভাগ স্কুল গত বছরের মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে৷ দেশগুলোর দুই-তৃতীয়াংশ দক্ষিণ অ্যামেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের৷ এসব দেশে প্রায় ৯ কোটি ৮০ লাখ স্কুলগামী শিশুর ওপর এর প্রভাব পড়েছে৷ এই ১৪ দেশের মধ্যে পানামাই সবচেয়ে বেশি দিন স্কুল বন্ধ রেখেছে।’’
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/S. Ramany
শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত
বিশ্বব্যাপী তিন-চতুর্থাংশের বেশি, প্রায় ২১ কোটি ৪০ লাখ বা প্রতি সাতজনের মধ্যে একজন শিশু ব্যক্তিগত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ হারিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে৷
ছবি: bdnews24.com
দক্ষিণ এশিয়ার ২২ শতাংশ
প্রতিবেদনে যে পরিসংখ্যান দেখানো হয়েছে তাতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ২২ শতাংশ শিশুর শিক্ষা করোনাকালে বাধাগ্রস্ত হয়েছে৷
স্কুলগুলো আবার খোলার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার প্রতি বিভিন্ন দেশের সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘প্যান্ডেমিক ক্লাসরুম’ উদ্বোধন করেছে ইউনিসেফ৷
ছবি: Chris Farber Productions Inc./UNICEF/Getty Images
বাংলাদেশে এখনো বন্ধ
পানামার পর এল সালভাদর, বাংলাদেশ ও বলিভিয়ার স্কুল বেশি দিন বন্ধ আছে৷ মার্চে স্কুল খুলে দেয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশে এখনো বন্ধ সব স্কুল৷
ছবি: Abdullah Al Momin/bdnews24.com
‘প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুদের চরম মূল্য দিতে হচ্ছে’
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেছেন, ‘‘বিশ্বব্যাপী শিক্ষাক্ষেত্রে লকডাউন ভয়াবহ জরুরি অবস্থার সৃষ্টি করেছে৷ যতই দিন যাচ্ছে, শিশুরা স্কুলে যাওয়ার সুযোগ না পেয়ে ততই পিছিয়ে পড়ছে৷ প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকা শিশুদের চরম মূল্য দিতে হচ্ছে৷’’
ছবি: Indranil Mukherjee/AFP/Getty Images
স্কুল বন্ধের পরিণতি
শিশুদের স্কুল বন্ধ রাখার পরিণতি ধ্বংসাত্মক বলে মনে করছে ইউনিসেফ৷ সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে থাকা এবং যারা দূরশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায় না, তারা আর কখনো ক্লাসরুমে ফিরতে না পারার এবং এমনকি বাল্যবিয়ে বা শিশুশ্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকিতে রয়েছে৷ ইউনেসকোর সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, পুরোপুরি ও আংশিকভাবে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে বিশ্বব্যাপী ৮৮ কোটি ৮০ লাখের বেশি শিশুর পড়াশোনা অব্যাহতভাবে বাধার মুখে পড়েছে৷
ছবি: Chris Farber Productions Inc./UNICEF/Getty Images
8 ছবি1 | 8
তবে টিকা দেওয়ার পরও যে করোনা সংক্রমণ হতে পারে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সবাইকে সাবধানে থাকার অনুরোধ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘‘সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার, করে যাচ্ছি৷ হ্যাঁ জানি, অনেকের বক্তব্য, অনেক কিছুই বলেন৷ কিন্তু বাস্তব চিত্রটা দেখেন, যদি অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করেন, আমাদের এই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, সেই জায়গায় করোনা নিয়ন্ত্রণে আমরা যেভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি, অনেক উন্নত দেশও কিন্তু নিতে পারেনি, এটা হলো বাস্তবতা৷’’
এ সময় কোভিড মহামারির মধ্যে ডেঙ্গুর প্রকোপের কথাও তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখন ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় মানুষ অসুস্থ হচ্ছে৷ সবাই যেন নিজের ঘর-বাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখে এবং কোথাও যেন পানি জমে না থাকে৷ আশপাশের জায়গায় যেন মশা জন্ম নিতে না পারে, সেভাবে যেন পরিচ্ছন্ন করে রাখেন৷ মশারি ব্যবহার করবেন৷ শুধু মশার ওষুধ দিলে হবে না৷ নিজেদেরও একটু উদ্যোগ নিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে৷’’