গত ১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর ব্রাত্য বসুর একটি অনুষ্ঠান ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয়। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় শিক্ষার্থীরা। তার গাড়ি ভাঙচুর হয় বলেও অভিযোগ। সেই মামলায় হিন্দোল মজুমদারের যোগ আছে বলে পুলিশের দাবি। স্পেনে বসে ওই হামলার ছক সে করেছিল বলে পুলিশের অভিযোগ। সেই মতো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং বর্তমানে স্পেনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত হিন্দোল মজুমদারের নামে লুক আউট নোটিস জারি করেছিল কলকাতা পুলিশ।
যাদবপুরে প্রতিবাদ চলছে, শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও তার গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে এফআইআর হলো।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধে এফআইআর
বৃহস্পতিবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, তার গাড়ির চালক এবং অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্রর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে পুলিশ। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশের পরেই তারা এই এফআইআর করে। আহত পড়ুয়া ইন্দ্রানুজ রায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করা হয়। এনিয়ে হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখেও পড়ে পুলিশ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিক্ষোভ-মিছিল চলছে
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ চলছে। শুক্রবার বিক্ষোভকারী ছাত্রছাত্রীরা মিছিলও করেন। বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয় মিছিল।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কারা ছিলেন মিছিলে
বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, এটা হলো নাগরিক মিছিল। সেখানে বাম এবং অতি বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ছাড়াও ছিলেন বেশ কিছু মানুষ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
পড়ুয়াদের দাবি
এই বিক্ষোভ-মিছিলের অন্যতম দাবি হলো, ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে। দিন কয়েক আগে ওয়েবকুপার বৈঠকে যারা অবৈধভাবে ঢুকেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে ইত্যাদি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
রোববার জোড়া মিছিল
রোববারও দুইটি মিছিলের ডাক দেয়া হয়েছে। একটি মিছিল শুরু হবে ধর্মতলা থেকে, অন্যটা হাজরা রোড থেকে। দুইটি মিছিল একাডেমি অফ ফাইন আর্টসে গিয়ে শেষ হবে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
আন্দোলনকারীদের হুমকি
বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠক করে পড়ুয়ারা। তাদের দাবি, সোমবারের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলকে বৈঠকে বসতে হবে। তারা দাবি মেনে কোনো পদক্ষেপ না নিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থাকেই অচল করে দেয়া হবে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
হাইকোর্টে বিচারপতি বনাম কল্যাণ
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে ওঠে। সেখানে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল সাংসদ ও আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচারপতি বলেন, মন্ত্রীর উপর জনতা ঝাঁপিয়ে পড়লো। এটা পুলিশের ব্যর্থতা। কল্যাণের দাবি, বিশ্ববিদ্য়ালয়ে ঢুকলে রক্ষীদের বাইরে রেখে ঢোকা হয়। এটা আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যর্থতা।
ছবি: Satyajit Shaw /DW
সওয়াল করবেন না কল্যাণ
বিচারপতি বলেন, মন্ত্রীর প্রটোকল মানা উচিত। কল্যাণ জানান, তাদের পক্ষে সবসময় প্রটোকল মানা সম্ভব নয়। বিচারপতি জানান, কল্যাণ এমনভাবে কথা বলছেন, আদালত তাতে নিজেকে অসম্মানিত বোধ করছে। কল্যাণ জানান, তিনি যদি আদালতকে অসম্মান করে থাকেন, তাহলে তিনি দুঃথিত। তিনি আর এই আদালতে সওয়াল করতে আসবেন না।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
8 ছবি1 | 8
বুধবার স্পেন থেকে দিল্লি বিমানবন্দর হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন হিন্দোল। কিন্তু অভিবাসনের সময় তাকে আটকে দেওয়া হয়। অভিবাসনের অফিসে দীর্ঘক্ষণ তাকে বসিয়ে রাখার পর গবেষককে দিল্লি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। দিল্লি পুলিশ কলকাতা পুলিশকে খবর দেয়। দিল্লি গিয়ে কলকাতা পুলিশ গবেষককে নিজেদের হেফাজতে নেয়। লুক আউট নোটিস জারি হয়েছিল বলেই অভিবাসনের সময় তাকে আটক করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে হিন্দোলের গ্রেপ্তার নিয়ে রীতিমতো আলোড়ন শুরু হয়েছে। স্পেনে বসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় হিন্দোল কীভাবে যুক্ত হলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পুলিশের দাবি, হিন্দোল ওই ঘটনার মূল চক্রী। তার নির্দেশেই সম্পূর্ণ ঘটনার ব্লু প্রিন্ট তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ছাত্রদের অভিযোগ, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে হিন্দোলকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলির ডাকে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজনও হয়েছিল। ছাত্ররা জানিয়েছে, দ্রুত হিন্দোলকে মুক্তি দেওয়া না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে।