শিক্ষামন্ত্রীর ফেসবুক বন্ধের পরিকল্পনায় তোলপাড় ফেসবুকে
২৮ নভেম্বর ২০১৪ঢাকার সচিবালয়ে এক সভায় বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন,‘‘...প্রয়োজনে পরীক্ষার দিন মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেব৷ প্রয়োজনে ফেসবুকও বন্ধ করে দেব৷'' সম্প্রতি বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা তথ্য প্রমাণসহ প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম৷ শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন৷
ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের ফেসবুক পাতার অনুসারীদের কাছে শুক্রবার জানতে চাওয়া হয়েছিল শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া৷ মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে সেখানে মন্তব্য জমা পড়েছে ৩০০-রও বেশি৷ মোহাম্মদ জাকারিয়া শাহনাগরি লিখেছেন, ‘‘পাবলিক পরীক্ষার সময় ‘প্রয়োজনে' মোবাইল ফোন ও ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়া – বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়৷ এক্ষেত্রে মন্ত্রী-এমপিদের চরিত্র সংশোধন করতে পারলেই এ ধরণের সকল অনৈতিক কর্মের অবসান হবে বলে মনে করি৷''
ফেসবুক ব্যবহারকারী আশরাফুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘শুধুমাত্র একটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে এত বড় একটা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা ঠিক হবে না৷ সমস্যা সমাধানে বিকল্প চিন্তা করা উচিত৷'' আর এম. এ. বারিক মনে করেন, ‘‘চোর না ধরে এসব আবোল তাবোল কথা একজন মন্ত্রী মুখে শোভা পায় না৷ বেড়া যদি গাছ খায় এতে ছাগলের কোনো দোষ নেই৷ কতিপয় ব্যক্তি প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত কিন্তু ফেসবুক ব্যবহারকারী সবাই তো নয়৷''
ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় আব্দুল্লাহ আল-জুম্মার একটি মন্তব্য লাইক করেছেন অনেকে৷ তিনি ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ‘‘সাবেক সরকারের শিক্ষামন্ত্রী খুব অসুস্থ৷ তাঁর অপারেশন প্রয়োজন৷ নিয়ে যাওয়া হলো দেশের সবচেয়ে দামি ক্লিনিকে৷ অপারেশন থিয়েটারে ঢোকানোর পরে ডাক্তার আর ওনার অ্যাসিস্টেন্ট ডাক্তার এলেন অপারেশন করাতে৷ কিন্তু একি, শিক্ষামন্ত্রীকে ইঞ্জেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে অপারেশন শুরু না করে তাঁরা মেডিকেল গাইড খুলে পড়া শুরু করেছেন কেন?''
তিনি লিখেছেন, ‘‘মৃত্যু ভয়ে ভীত শিক্ষামন্ত্রী আর না পেরে জিজ্ঞেস করলেন, বাবারা তোমরা অপারেশন না করে এ কী করছো?
- জি স্যার,একটু ওয়েট করুন৷ এই অপারেশনটা কিভাবে করতে হয় একটু পড়ে নিই৷
- মানে কি? তোমরা পড়ালেখা না করেই ডাক্তার?
- স্যার, আপনি আমাদের না পড়ে গোল্ডেন পাওয়ার কত সুন্দর চান্স করে দিচ্ছেন৷ পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি এমনকি মেডিকেলের এক্সামেও পড়তে হয়নি আমাদের৷ আর কেউ হলে তো স্যার, এমনিতেই মৃত ঘোষণা করে দিতাম৷ আপনার এই অবদান ভুলিনি বলেই তো বাঁচানোর চেষ্টা করছি৷ ওয়েট স্যার৷''
বলাবাহুল্য, ডয়চে ভেলের পাতায় মন্তব্যকারীদের কেউ মন্ত্রীর এই বক্তব্যকে সমর্থন করেননি৷ শফিক খান লিখেছেন, ‘‘নিজের ঘরের চোরকে না ধরে, যে চুরি করতে দেখল তাকে কিনা শাস্তি পেতে হবে? আজব দুনিয়া!!''
সংকলন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ