জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়
২০ আগস্ট ২০১২বাংলাদেশের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র রবিউল হোসেন৷ সেখান থেকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশোনা করেছেন৷ এখন বন রাইনজিগ ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাপ্লাইড সায়েন্স'এ বায়োমেডিকেল সায়েন্স'এ মাস্টার্স করছেন৷ জার্মানিকে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় জার্মানি বাংলাদেশি ছাত্রদের জন্য একটি ভালো পড়াশোনার লক্ষ্যস্থল হতে পারে, কারণ এখানে পড়ার জন্য আপনার তেমন টাকা পয়সার প্রয়োজন নেই৷ একটু ভালো রেজাল্ট থাকলেই বিশ্বমানের যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি পড়তে পারবেন৷''
জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার আরও একটি বড় ইতিবাচক দিক হলো এখানকার শিক্ষার মান৷ বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের চেয়েও এখানকার পড়াশোনার মান ভালো৷ তাই সব জায়গাতেই এর স্বীকৃতি রয়েছে, জানালেন শেখ সানি আমান, যিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে অটোনমাস সিস্টেম নিয়ে পড়াশোনা করছেন৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও জার্মানির যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যায়ন করা হয়, ভালো বিশ্ববিদ্যালয় হলে তো অবশ্যই৷ অথচ ব্রিটেন কিংবা অস্ট্রেলিয়ার যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে সমমান দেওয়া হয় না৷ জার্মানির বেলায় এটা ব্যতিক্রম, কারণ সবাই জানে জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একটি ন্যুনতম মান বজায় রাখে৷''
বিদেশে পড়তে আসার আগে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার খরচ নিয়ে চিন্তা করে৷ এই জন্য তাদের জন্য রয়েছে নানা বৃত্তি৷ তবে এর বাইরেও তাদের সুযোগ রয়েছে৷ এই ব্যাপারে রোবটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র হাসান আল বান্না জানান, ‘‘শুরুতে ডিএএডি-র বৃত্তিগুলোর খোঁজ নেওয়া দরকার৷ এরপর যদি সেখানে না মেলে তাহলে ইউরোপের বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে বৃত্তির সুযোগ আছে৷ তাই তখন সেগুলো দেখা যেতে পারে৷ যেমন এরাসমুস মুন্ডুস'এর বৃত্তি আছে, একটু ভালো রেজাল্ট থাকলেই সেটা পাওয়া সম্ভব৷ আর যদি বৃত্তি পাওয়া না যায়, তাহলে প্রথম এক বছরের খরচটা নিয়ে আসা ভালো৷ কারণ প্রথম এক বছর পড়াশোনার মধ্যে ব্যস্ত থাকতে হবে৷ এরপর আস্তে আস্তে কাজ পাওয়া যাবে৷ আর জার্মান জানা থাকলে কাজের সুযোগ আরও বেশি৷''
জার্মানিতে যেসব ছাত্রের তথ্য প্রযুক্তি খাতে কাজ করার কিংবা পড়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের জন্য এখানে কাজ করার বেশ ভালো সুযোগ রয়েছে৷ তথ্য প্রযুক্তির ছাত্র আমান নিজেই একটি সংস্থার হয়ে কাজ করছেন৷ তিনি জানান, ‘‘জার্মানিতে তথ্য প্রযুক্তি খাতে দক্ষ লোকের অভাব আছে৷ বিশেষ করে সফটওয়্যার খাতে৷ এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যদি নজরে আসা যায় তাহলে সেখানে কাজের সুযোগ আছে৷''
জার্মানিতে পড়তে আসা অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা বৃত্তি ছাড়াই পড়াশোনা করছেন৷ একজন ছাত্রের পক্ষে পার্টটাইম কাজ করেই নিজের খরচ চালানো সম্ভব বলে জানালেন বাংলাদেশি ছাত্র রবিউল হোসেন৷ তিনি নিজেই পার্টটাইম কাজ করে নিজের খরচ চালাচ্ছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘জার্মানিতে একজন ছাত্র সপ্তাহে দু'দিন কাজ করেই নিজের খরচ চালাতে পারে৷ এটা তেমন কোনো চাপ হয় না৷ কারণ ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় জার্মানিতে থাকা-খাওয়ার খরচ কম৷''
মোট কথা, শিক্ষার মান আর স্বল্প খরচ এই দুইয়ের কারণে জার্মানি হয়ে উঠছে উন্নত শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্যস্থল৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: জাহিদুল হক