মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প একটি প্রশাসনিক নির্দেশে সই করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষা দপ্তরকেই গুটিয়ে ফেলা হবে।
শিক্ষা দপ্তরই তুলে দিতে চান ডনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: Win McNamee/AFP/Getty Images
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার এই প্রশাসনিক নির্দেশে সই করার পর ট্রাম্প বলেছেন, ''আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষা দপ্তর বন্ধ করে দেব। এই দপ্তর ভালো কোনো কাজ করছে না।'' তবে প্রশাসনিক নির্দেশে বিস্তারিতভাবে বলা হয়নি, কোন প্রকল্প বন্ধ করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী লিন্ডা ম্যাকমোহনকে ট্রাম্প নির্দেশ দিয়েছেন, আইনি পদক্ষেপ নিয়ে এই দপ্তরকে বন্ধ করে দিতে। লিন্ডার প্রশংসা করে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ভালো কাজ করছেন। মনে হয়, তিনিই অ্যামেরিকার শেষ শিক্ষামন্ত্রী হবেন।
শিক্ষা দপ্তর যে সব গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চালাতো, তা অন্য এজেন্সির হাতে দিয়ে দেওয়া হবে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্তরে শিক্ষা দপ্তর তুলে দেওয়ার অর্থ হলো, শিক্ষা নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত এবার রাজ্যগুলি নেবে।
ট্রাম্প বলেছেন, শিক্ষাক্ষেত্রে অ্যামেরিকা অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি অর্থ খরচ করে। তা সত্ত্বেও সাফল্যের নিরিখে মার্কিন পড়ুয়ারা একেবারে নিচের দিকে থাকে।
কংগ্রেসকে অনুমোদন করতে হবে
এবার কংগ্রেস শিক্ষা দপ্তর বন্ধ করা নিয়ে প্রস্তাব অনুমোদন করবে। তবে এই আইন পাশ করার জন্য ট্রাম্পের কাছে যথেষ্ট সংখ্যক এমপি আছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে। সেনেটে রিপাবলিকানদের ৫৩ জন ও ডেমোক্র্যাটদের ৪৭ জন সদস্য আছে। এই সিদ্ধান্ত পাশ করানোর জন্য ৬০ জন সদস্যের সমর্থন দরকার।
ডনাল্ড ট্রাম্প: ব্যবসায়ী থেকে প্রেসিডেন্ট
রিয়েল স্টেট ব্যবসায়ী, জনপ্রিয় বইয়ের লেখক এবং রিয়েলিটি টিভি স্টার হিসেবে পরিচিত ডনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট৷ হোয়াইট হাউজে নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পরিবার, সাম্রাজ্য
তিনি যাদের ভালোবাসেন তাদের নিয়ে তোলা ছবি৷ এখানে রয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া, মেয়ে ইভানকা এবং টিফানি, ছেলে এরিক এবং ডোনাল্ড জুনিয়র এবং নাতি কাই ও ডোনাল্ড জন থ্রি৷ তাঁর তিন বড় সন্তান ট্রাম্প অরর্গানাইজেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মিলিয়নিয়ার থেকে বিলিয়নিয়ার
১৯৮৪ সালে তোলা এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে নিউ জার্সির ট্রাম্প প্লাজায় হারাহ’স ক্যাসিনো উদ্বোধন করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ এটা অন্যতম এক খাত যেখানে বিনিয়োগ করে বাপের টাকায় মিলিয়নিয়ার হওয়া ট্রাম্প নিজেকে বিলিয়নিয়ারে পরিণত করেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Images/M. Lederhandler
বাপের টাকায় ব্যবসা শুরু
রিয়েল স্টেট সাম্রাজ্যের শুরুটা ট্রাম্প করেছিলেন তাঁর বাবা ফ্রিডরিকের কাছ থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে৷ তিনি তাঁর ছেলেকে শুরুতে এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছিলেন৷ এবং তাঁর মৃত্যুর পর ট্রাম্প এবং তাঁর তিন ভাইবোন উত্তরাধিকার সূত্রে চার’শ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক হন৷
ছবি: imago/ZUMA Press
একটি নামের মধ্যে কী আছে?
ডোনাল্ড ট্রাম্প আগ্রাসীভাবে বিভিন্ন খাতে অর্থ বিনিয়োগ করেছেন এবং মার্কেটের উত্থান পতনের অভিজ্ঞতা পেয়েছেন৷ নিউ ইয়র্ক সিটির ট্রাম্প টাওয়ার তাঁকে দীর্ঘমেয়াদে সাফল্য এনে দিয়েছে৷ ট্রাম্প বলেছেন, তাঁর সম্পদের পরিমাণ দশ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ তবে কখনো তিনি তাঁর এই দাবির পক্ষে কোনো আর্থিক কাগজপত্র প্রকাশ করেননি৷ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, তাঁর সম্পদের পরিমাণ তিনি যা বলেন তাঁর এক-তৃতীয়াংশ মাত্র৷
ছবি: Getty Images/D. Angerer
‘খুব ভালো, খুব স্মার্ট’
ট্রাম্প নিজের সম্পর্কে নিজেই বলেন একথা৷ তিনি সুপরিচিত সুপরিচিত ‘ওয়ার্টন স্কুল অফ দ্য ইউনিভার্সিটি অফ পেনসেলভেনিয়ায়’ লেখাপড়া করেছেন এবং স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B.J. Harpaz
ক্যাপ্টেন ট্রাম্প
কলেজে পাঠানোর আগে ১৩ বছর বয়সে মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে নিয়মানুবর্তিতা শেখাতে পাঠানো হয়েছিল ট্রাম্পকে৷ স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের আগেই একাডেমি থেকে একটি অফিসার’স ব়্যাংক অর্জন করেন তিনি৷ নির্বাচনি প্রচারাভিযানকালে তিনি জানান যে, তিনি স্কুলে কাঠামো এবং সামরিক সংস্কৃতি উপভোগ করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/
ভিয়েতনাম যাওয়ার বদলে গোড়ালির চিকিৎসা
মিলিটারি শিক্ষা সত্ত্বেও ভিয়েতনাম যুদ্ধে যাননি ট্রাম্প৷ পড়াশোনা করার সময় তিনি চারবার কালহরণ করেছিলেন এবং গোড়ালির চিকিৎসার জন্য একবার বিরতি নিয়েছিলেন৷ ট্রাম্প হবেন প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি দায়িত্ব গ্রহণের আগ অবধি কোনো সরকারি কার্যালয় বা সামরিক বাহিনীতে কাজ করেননি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
প্রথম স্ত্রী: ইভানা জেলনিউকোভা
১৯৭৭ সালে তৎকালীন চেকোস্লোভাকিয়ার ইভানা জেলনিউকোভাকে বিয়ে করেন ট্রাম্প৷ তাঁদের তিন সন্তান হয়৷ ডোনাল্ড জন জুনিয়র, ইভানকা মারি এবং এরিক ফ্রেডরিক৷ তবে বিবাহবহিভূর্ত সম্পর্কসহ নানা জটিলতায় ১৯৯০ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়৷ ইভানা হচ্ছেন সেই নারী, যিনি ট্রাম্পের ডাক নাম দিয়েছিলেন ‘দ্য ডোনাল্ড৷’
ছবি: Getty Images/AFP/Swerzey
দ্বিতীয় পরিবার
ট্রাম্প পরবর্তীতে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মার্লা ম্যাপলসকে বিয়ে করেন৷ ১৯৯৩ সালে তাঁদের মেয়ে টিফানির জন্ম দেন ম্যাপেলস৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/J. Minchillo
অন্য নারীদের সঙ্গে ট্রাম্প
ট্রাম্প সম্ভবত নিজের স্ত্রীর বদলে অন্য নারীদের সঙ্গে ছবি তুলতে ভালোবাসেন৷ তিনি প্রায়ই সুন্দরী প্রতিযোগিতায় যেতেন এবং তরুণী মডেলদের সঙ্গে ছবি তুলতেন৷ ১৯৯৬ থেকে ২০১৫ অবধি আয়োজিত সব ‘মিস ইউনিভার্স’ প্রতিযোগিতার একজন অংশীদার ছিলেন তিনি৷ নির্বাচনের আগে আগে এক অডিও প্রকাশ হয় যেখানে ট্রাম্প বলেছিলেন, তাঁর খ্যাতি তাঁকে কোনোরকম পরিণতির ভয় ছাড়াই মেয়েদের ‘গায়ে হাত দেয়ার’ সুযোগ করে দিয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Lemm
বাণিজ্য এবং বিনোদনের মিশ্রণ
ট্রাম্প জানতেন কীভাবে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হয়৷ এই ছবিতে তাঁকে ‘ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্টের’ একটি শোতে দেখা যাচ্ছে৷ রিয়েলিটি টিভি শো ‘দ্য এপ্রেন্টিস’, যেখানে প্রার্থীদের নিয়োগ অথবা বাতিল করা হতো, ট্রাম্পকে খ্যাতি অর্জনে সহায়তা করেছে৷ শোতে ট্রাম্পের প্রিয় লাইন ছিলে, ‘ইউ আর ফায়ার্ড!’
ছবি: Getty Images/B. Pugliano
রাজনীতিতে ট্রাম্প
যদিও অতীতে রাজনীতির সঙ্গে তাঁর খুব কম যোগাযোগ ছিল, তারপরও ২০১৫ সালে সালের ১৬ জুলাই তিনি নিজেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন৷ রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে তিনি ব্যবহার করেছেন ‘মেক অ্যামেরিকা গ্রেট এগেইন৷’ নির্বাচনি প্রচারণা চালানোর সময় তিনি অভিবাসী, মুসলমান, নারী এবং তাঁর বিরুদ্ধে থাকা প্রত্যেককে অপমান করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Lane
ওয়াশিংটনের পথে
প্রেসিডেন্ট হিসেবেও হোয়াইট হাউসে একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ট্রাম্প৷ ৷ সবশেষ তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করল সে দেশের সংসদের নিম্নকক্ষ। অ্যামেরিকার ইতিহাসে ট্রাম্পই তৃতীয় প্রেসিডেন্ট যাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব আনা হয়েছে।
ছবি: Getty Images/AFP/M. Ngan
13 ছবি1 | 13
তবে শিক্ষা দপ্তর যদি আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ না-ও হয়, ট্রাম্প এখানে অর্থ দেয়া বন্ধ করতে পারেন, কর্মী কমাতে পারেন। ইউএসএইডের ক্ষেত্রেও তিনি সে কাজই করেছেন। যার ফলে তাদের অনেক কাজই বন্ধ হয়ে গেছে।
ফিলিস্তিনপন্থি ভারতীয় ছাত্রকে ফেরত পাঠানো বন্ধ
ফিলিস্তিনপন্থি ভারতীয় ছাত্র বদর খান সুরিকে ফেরত পাঠানো স্থগিত রাখলেন বিচারক। মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, সুরির সঙ্গে হামাসের যোগাযোগ আছে। সে সামাজিক মাধ্যমে হামাসের হয়ে প্রচার চালায় এবং ইহুদিবিদ্বেষ ছড়ায়। সে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির কাছে বিপদের কারণ। তাই তাকে দেশে ফেরত পাঠাতে চায় অ্যামেরিকা।
হামসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে অ্যামেরিকা, জার্মানি, ইসরায়েল-সহ কিছু দেশ।
বৃহস্পতিবার বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন, আদালত রায় না দিলে সুরিকে ফেরত পাঠানো যাবে না।
সুরি ছাত্র ভিসা নিয়ে অ্যামেরিকায় ফেলোশিপ পেয়ে গবেষণা করছে। সে গাজায় জন্মগ্রহণ করা এক মার্কিন নাগরিককে বিয়ে করেছে।
ইলন মাস্কের ডোজ সামাজিক সুরক্ষার রেকর্ড দেখতে পারবে না
মার্কিন জেলা বিচারক লিপটন হল্যান্ডার এই নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ব্যক্তিগত রেকর্ড দেখাটা নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করছে।
বিচারক বলেছেন, ডোজের এই সিদ্ধান্ত সন্দেহজনক। তারা খড়ের গাদায় ছুঁচ খুঁজতে চাইছে।