1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘অ্যান্টি ব়্যাগিং স্কোয়াড’

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১২ জানুয়ারি ২০২০

দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিন মাসের মধ্যে এন্টি ব়্যাগিং স্কোয়াড ও কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট৷ র‌্যাগিংকে ‘ছাত্রদের জীবন ধংসের' মত ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে৷

Bangladesch Mord an Student Abrar Fahad
ছবি: bdnews24

হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ একইসঙ্গে সরকারের ওপর এ নিয়ে একটি রুল জারি করেছেন৷ রুলে র‌্যাগিংয়ের হাত থেকে শিক্ষার্থীদের মর্যাদা রক্ষায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে৷

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের এক রিট আবেদনে জবাবে হাইকোর্ট এসব আদেশ দেয়৷ চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে৷

রিটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান শিক্ষা সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে৷
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানীও করেন রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গত বছরের ৯ অক্টোবর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব়্যাগিং বন্ধে আমি একটি লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলাম৷ কিন্তু তারপরও দীর্ঘ সময়ে ব্যবস্থা না নেয়ায় আমি রিট করি৷''

তিনি জানান, ‘‘আদালত তিন মাসের মধ্যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এন্টি ব়্যাগিং স্কোয়াড ও এন্টি ব়্যাগিং কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন৷ স্কোয়াড গঠন করা হবে র‌্যাগিং প্রতিরোধে আগাম ব্যবস্থা নেয়ার জন্য৷ আর কমিটি গঠন করা হবে অভিযোগ নেয়ার জন্য৷ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজেদের বিবেচনায় তা করবে৷ আর যদি মনে হয় আদালতের আরো পরামর্শ প্রয়োজন তাহলে আদালতের কাছে তা চাইতে পারবে৷ এছাড়া কমপক্ষে একজন করে সার্বক্ষনিক ওয়ার্ডেন নিয়োগ করতে হবে৷ যারা ছাত্রাবাসে বা যখন ক্লাস থাকবেনা তখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থা নেবেন৷

‘আবরার হত্যা ব়্যাগিং-এর চূড়ান্ত, করুণ পরিণতি’

This browser does not support the audio element.

বুয়েটের আবরার হত্যা ব়্যাগিং-এর চূড়ান্ত, করুণ পরিণতি উল্লেখ করে এই আইনজীবী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব়্যাগিং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে৷ যা র‌্যাগিং-এর শিকার শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিকভাবে পর্যুদস্ত করছে৷ এই কারণে লেখাপড়া ছেড়ে দেয়া ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে দেয়ার মত পরিস্থিতিও তৈরি হয়৷ তারা কেউ কেউ এত ট্রমাটাইজড হয়ে যায় যে বাবা-মাকেও চিনতে পারেন না৷

তিনি আরো জানান, র‌্যাগিং-এর নেপথ্যে থাকে ফাইনাল ইয়ারের বা সিনিয়র স্টুডেন্টরা৷ র‌্যাগ দেয় সেকেন্ড বা থার্ড ইয়ারের স্টুডেন্টরা৷ আর এর শিকার হন ফার্ষ্ট ইয়ারের স্টুডেন্টরা৷

‘‘বুয়েটের আবরার হত্যার পর আমরা আরো অনেক নির্মম ঘটনা জানলাম৷ কিন্তু শাস্তি পায় শুধু যারা সরাসরি জড়িত তারা৷ কিন্তু তারা র‌্যাগ দিতে বাধ্য হয় সিনিয়রদের নির্দেশে৷ তারাও এক সময় র‌্যাগিং-এর শিকার হয়েছেন৷ তাদের বাধ্য করে সিনিয়র ছাত্ররা৷ কিন্তু যারা বাধ্য করে তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়৷তার মতে, এই ব়্যাগিং বছরের পর বছর চলছে ছাত্রদের একটি আধিপত্য বলয় তৈরির জন্য৷ কিন্তু বড় কোন অঘটন না ঘটলে সেটা আমরা জানতেও পারিনা৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘কেউ ব়্যাগিং-এর কারণে মারা গেলে বা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়লে প্রচলিত আইনে প্রতিকারের ব্যবস্থা আছে৷ কিন্ত অহরহ র‌্যাগিং-এর শিকার হয়ে যে মর্যাদা হানির শিকার হচ্ছে, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে তার কোনো প্রতিকার নেই৷ এটা পুরোপুরি বন্ধ করা প্রয়োজন৷''

আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, ‘‘র‌্যাগিং বন্ধে এই ধরণের ব্যবস্থা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আগেই নেয়া উচিত ছিলো৷ দেরিতে হলেও হাইকোর্টের নির্দেশে এখন গঠন করা উচিত৷ এটা খুবই জরুরি৷ এর আগেও হাইকোর্ট যৌণ নিপীড়ন প্রতিরোধের ব্যাপারে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছিল৷ কিন্তু তার বাস্তবায়ন দেখিনা৷ এবার যেন সেরকম না হয়৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘এতদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর গাফিলতি, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতার অভাব ও এড়িয়ে যাওয়ার মানসিকতার কারণে ব়্যাগিং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে৷ কেউ দায়িত্ব নেন না বা নিতে চান না৷ তারা শুধু চাকরিই করেন৷''
র‌্যাগিং ছাড়া বুলিং আছে৷ এই বুলিং রেসিজম, সেক্স, বডি শেমিং নানা দিক দিয়ে হয়৷ এটা বন্ধেও একটা নীতিমালা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন শিক্ষা বিজ্ঞানের এই শিক্ষক৷

‘আগেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিলো’

This browser does not support the audio element.

আর আইনজীবী ইশরাত জাহান বলেন, ‘‘বুলিংও বন্ধ হওয়া প্রয়োজন৷ কারন বুলিং-এর চূড়ান্ত রূপ র‌্যাগিং৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ