1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিক্ষিত তরুণ কৃষক, সংগঠক দেলোয়ারের কথা

২৮ নভেম্বর ২০১৬

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ভাল ফল করে ঢাকায় একটি পত্রিকায় কৃষি বিষয়ক সাংবাদিকতা করছেন দেলোয়ার জাহান৷ পাশাপাশি নিজে কৃষিকাজ করা ছাড়াও অন্যদের প্রাকৃতিক উপায়ে কৃষিকাজে উৎসাহিত করছেন৷

Bangladesch Biologische Landwirtschaft
ছবি: Delowar Jahan

অনার্সে দ্বিতীয় এবং মাস্টার্সে যৌথভাবে প্রথম হয়েছিলেন দেলোয়ার৷ এরপর সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে চাকরির সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু সেখানে না গিয়ে ঢাকায় সাংবাদিকতা করছেন, আর সার ও কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়া ফসল উৎপাদনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন৷ কারণ বাংলাদেশে ফসলের খেতে প্রতি মিনিটে ৭২ কেজি ‘বিষ' ছিটানো হয় বলে জানান তিনি৷

Delwar Krishi - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

দেলোয়ার নিজেও প্রাকৃতিক উপায়ে ফসলের চাষ করছেন৷ তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা (সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে দেলোয়ারের পরিচিত ছিলেন) মিলে ২০১৩ সালে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার আমতলি গ্রামে জমি লিজ নিয়ে গ্রীষ্মকালীন সবজি উৎপাদন শুরু করেন৷ বর্তমানে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার হাজীপুর গ্রামে দেড় একর জমিতে প্রায় ৪০ রকমের সবজি উৎপাদিত হয়ে বলে জানান তিনি৷ সম্প্রতি ঐ সবজি খামারে শাক তোলায় কিছুটা বিরতি দিয়ে টেলিফোনে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেন দেলোয়ার৷ উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত তিনি নিজে বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে জড়িত ছিলেন৷ আর তাঁর সঙ্গীদের পরিবারও কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত৷

কুষ্টিয়ার ছেলে হয়ে নিজের গ্রামে না গিয়ে মানিকগঞ্জে কাজ করার কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে দেলোয়ার জানান, সেটি সম্ভব ছিল না৷ ‘‘যখন পড়ালেখা করতাম তখন গ্রামে গেলে সবাই জানতে চাইতো কতদিন আছি কিংবা কবে যাব?'' সেই থেকে দেলোয়ারের মনে হয়েছে, গ্রামে যাওয়া যাবে না৷

দেলোয়ার আর তাঁর সঙ্গীরা মিলে ‘প্রাকৃতিক কৃষি' নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছেন৷ এর মাধ্যমে কৃষকদের পরিবেশবান্ধব উপায়ে কৃষিকাজে উৎসাহিত করা হয়৷ দেলোয়ার বলেন, ‘‘আমার খামারের আশেপাশে কৃষকরা কীটনাশক প্রয়োগ করে কৃষিকাজ করেন৷ তবে তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আমার খামারে এসে সব দেখেশুনে প্রাকৃতিক উপায়ে কৃষিকাজে আগ্রহী হচ্ছেন৷''

এখন পর্যন্ত মানিকগঞ্জ ছাড়াও ঝিনাইদহ, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও নওগাঁ জেলার অনেক কৃষক এভাবে ফসল উৎপাদন করছেন৷ তাঁদের উৎপাদিত সবজি, ফল ঢাকায় বিক্রির জন্য মোহাম্মদপুরের সলিমুল্লাহ রোডে ‘প্রাকৃতিক কৃষি বিপণন কেন্দ্র' চালু করা হয়েছে৷

বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে কেউ যদি উচ্চশিক্ষার পর চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষিকাজে জড়িত হয়ে জীবনযাপন করতে চায় তাহলে সেটি সম্ভব কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে দেলোয়ার জানান, তা সম্ভব এবং বাংলাদেশে এখন সেই পরিবেশ তৈরি হয়েছে৷ ‘‘কেউ যদি সমন্বিত খামার করেন, যেখানে মাছ চাষ থাকবে, গরু থাকবে, দুধের জন্য ছাগল থাকবে, হাঁস থাকবে, সবজি থাকবে৷ আপনি যদি একটি সমন্বিত চাষ পদ্ধতিতে যান, সার্কেলটা যদি নিজে মেইনটেন করেন, মানে যে শাক আপনি বিক্রি করতে পারছেন না, সেটি আপনি গরুকে খাওয়াচ্ছেন, গরু থেকে যে গোবর পাচ্ছেন সেটি কেঁচোকে খাওয়াচ্ছেন, কেঁচো আপনাকে সার দিচ্ছে, সেই সার আপনি মাঠে দিয়ে দিচ্ছেন৷ মানে, পুরো সার্কেলটা যদি আপনি নিজে মেইনটেন করেন তাহলে যে কোনো ছেলেমেয়ের পক্ষে কৃষিকাজ করেই সম্ভব জীবিকা নির্বাহ সম্ভব'', বলেন দেলোয়ার৷

তবে তিনি বলেন, সমস্যা হচ্ছে তরুণরা মনে করে কৃষিকাজ মানে অচ্ছুতের কাজ৷ তাই এটি কেউ করতে চায় না৷ ‘‘কারণ চারপাশে এত রং, এত প্রত্যাশা জীবনে যে, কেউ আসলে কৃষিকাজ করতে চায় না৷ প্রচুর ছেলেমেয়ে আমাদের কাছে (প্রাকৃতিক কৃষির কাজ দেখতে) আসে৷ যে পরিমাণ আগ্রহ নিয়ে আসে তার দ্বিগুণ পরিমাণ আগ্রহ নিয়ে চলে যায়'', নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানালেন দেলোয়ার৷

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ