অজ্ঞাতনামা ব্রিটিশ স্ট্রিট আর্টিস্ট ব্যাঙ্কসির পেইন্টিং ‘ডিভলভড পার্লামেন্ট' নিলামে বিক্রি হয়েছে৷ শিম্পাঞ্জিদের পার্লামেন্ট হিসেবে পরিচিত ছবিটির দাম পড়েছে প্রায় একশ কোটি টাকা৷
বিজ্ঞাপন
লন্ডনে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয় এই নিলাম৷ বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সোদেবি'স আয়োজন করেছিল এই নিলামের৷ তারা বিশাল পেইন্টিংটি দেড় থেকে দুই মিলিয়ন পাউন্ডে বিক্রি করার আশা করছিল৷ কিন্তু ১৩ মিনিটের ঝড়ো নিলাম যুদ্ধে দাম সাড়ে আট মিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছে যায়৷ ফি-সহ এর দাম পড়েছে প্রায় এক কোটি পাউন্ড (৯,৮৭৯,৫০০ পাউন্ড)৷
সোদেবি'স জানায়, ব্যাঙ্কসির সৃষ্টিগুলোর মধ্যে এ পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছে৷
পালিয়েই গেল সুবোধ!
খাঁচাবন্দি সূর্য হাতে পালিয়ে বেড়ানো ‘সুবোধ’ ঢাকাবাসীর পরিচিত চরিত্র৷ কে এই ‘সুবোধ’? কেন সে পালাচ্ছে? উত্তর মেলেনি এখনও৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
তবুও, রাখিস সূর্য ধরে
রাজধানীর শেরই-বাংলা নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের যাত্রী ছাউনির দেয়ালে খাঁচাবন্দি লাল সূর্য নিয়ে পালাতে উদ্যত সুবোধকে দেখা যায়৷ পাশে লেখা আছে ‘তবুও সুবোধ রাখিস সূর্য ধরে’৷ নীচে ইংরেজি হরফে লোগোর মতো হরফে লেখা আছে HOBEKI (হবেকি?)৷ ‘সুবোধ’ -এর প্রায় সব দেয়ালচিত্রেই ব্যবহার হয়েছে HOBEKI?
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
তোর ভাগ্যে কিছুই নেই
খাঁচাবন্দি টকটকে লাল সূর্য হাতে দাঁড়িয়ে আছে সুবোধ৷ পাশে লেখা ‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা, তোর ভাগ্যে কিছুই নেই’৷ ‘সুবোধ’-এর এই গ্রাফিতিটি দেখা যায় আগারগাঁও-মহাখালী লিংক রোডে পুরনো বিমানবন্দরের দেয়ালে৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
পালা, এখন সময় পক্ষে না
অনেকের মতোই সময়টা ঠিক পক্ষে যাচ্ছে না ‘সুবোধ’-এর৷ তাই দৌঁড়ে পালাচ্ছে ‘সুবোধ’৷ তবে এবার খাঁচাবন্দি সূর্যটার রং লাল নয়, হলুদ৷ এ দেয়াল চিত্রটিও আছে আগারগাঁও-মহাখালী লিংক রোডে পুরনো বিমানবন্দরের দেয়ালে৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
খাঁচাবন্দি সূর্য
এই গ্রাফিতিতে ‘সুবোধ’ নিজে অনুপস্থিত থাকলেও তার সার্বক্ষণিক সঙ্গী সূর্যকে ঠিকই দেখা যাচ্ছে৷ এখানেও খাঁচাবন্দি সূর্য ঝুলছে একটি তারে৷ আগারগাঁও-মহাখালী লিংক রোডে পুরাতন বিমানবন্দরের দেয়ালের শোভা বাড়াচ্ছে এই দেয়ালচিত্রটি৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
কি হয়েছে সুবোধ?
এই গ্রাফিতিতে খাঁচাবন্দি সূর্য পাশে রেখে তীব্র যন্ত্রণায় মাথা চেপে বসে আছে সুবোধ৷ লেখা আছে ‘তুই পালিয়ে যা, তোর ভাগ্যে কিছুই নেই’৷ পাশে যথারীতি HOBEKI? এ গ্রাফিতিটিও দেখা গেছে আগারগাঁও-মহাখালী লিংক রোডে পুরাতন বিমানবন্দরের দেয়ালে৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
ভুলেও তুই ফিরে আসিস না!
মাটিতে রাখা খাঁচাবন্দি সূর্য, এলোমেলো চুলের সুবোধ তাকে তুলে দৌড়াতে উদ্যত৷ লেখা রয়েছে, ‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা, ভুলেও আর ফিরে আসিস না!’ এ দেয়ালচিত্রটিও আগারগাঁও-মহাখালী লিংক রোডে পুরাতন বিমানবন্দরের দেয়ালে৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
মানুষ ভালবাসতে ভুলে গেছে
‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা, এখন মানুষ ভালোবাসতে ভুলে গেছে’৷ কিন্তু মানুষের সান্নিধ্য এড়িয়ে কোথায় যাবে সুবোধ? আগারগাঁও থেকে শিশুমেলা যেতে সড়কের বাম পাশে আছে সুবোধের এই দেয়ালচিত্রটি৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
মুছে ফেলা গ্রাফিতি
রাতের আঁধারে ঢাকার দেয়ালে একের পর এক গ্রাফিতি একে চলছেন ‘সুবোধ’৷ তবে নিশ্চয়ই সুবোধকে খুঁজে বেড়াচ্ছে কেউ৷ সুবোধের চিহ্ন মুছে ফেলতে সেই গ্রাফিতি রং দিয়ে মুছে ফেলার চেষ্টাও হচ্ছে রাতের আঁধারেই৷ আক্রমণে বিপর্যস্ত ‘সুবোধ’-এর এমনই একটি গ্রাফিতি রয়েছে আগারগাঁও-মহাখালী লিংক রোডের পুরনো বিমানবন্দরের দেয়ালে৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
সুবোধ কি ধরা পড়ে গেছে!
সুবোধ কি পালাতে পারেনি? সুবোধ কেন কারাগারে? খাঁচাবন্দি সূর্যটাই বা নিয়ে গেল কে? উত্তর মেলেনি এখনও৷ আগারগাঁও এ শেরেবাংলা নগর বালক উচ্চবিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব কোণের পাওয়ার হাউসের দেয়ালে শোভা পাচ্ছে জেলবন্দি ‘সুবোধ’৷ লেখা রয়েছে, ‘সুবোধ এখন জেলে, পাপবোধ নিশ্চিন্তে করছে বাস মানুষের হৃদয়ে’৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
কোথায় সুবোধ? কোথায় সূর্য?
আগারগাঁও থেকে শিশুমেলা যেতে সড়কের বাম পাশে আছে ‘সুবোধ’ এর আরেকটি দেয়াল চিত্র৷ সাদার মধ্যে লাল হরফে বড় করে লেখা HOBEKI? নীচে আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে থাকা দু’টি কাক৷ এই গ্রাফিতিতে সুবোধ বা তার বন্ধু খাঁচাবন্দি সূর্য, কেউই নেই৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
10 ছবি1 | 10
‘‘আজ রাতে ব্যাঙ্কসির পেইন্টিংয়ের দামের রেকর্ড তৈরি হলো৷ অথচ এটার মালিক আমি নই,'' ইনস্টাগ্রামে লেখেন ব্যাঙ্কসি৷
শিল্প সমালোচক রবার্ট হিউজেস ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ‘‘...শিল্পকর্মের নতুন একটা কাজ জুটেছে৷ তা হলো দেয়ালে ঝুলে থাকা এবং নিজের দাম বাড়ানো৷ অথচ একটা বইয়ের মতো এটিও সাধারণ মানুষের সম্পদ হতে পারে৷ অথচ শুধু যার সামর্থ্য আছে, তিনিই এর মালিক হন৷''
এক বছর আগে ব্যাঙ্কসির আরেকটি ক্যানভাস ‘গার্ল উইথ বেলুন' নিলামে বিক্রির ঘোষণা হবার পরপরই নিজে নিজে নষ্ট হয়ে যায়, যা অনেককেই অবাক করেছিল৷ পরে ব্যাঙ্কসি জানান, তিনি ক্যানভাসটি এমনভাবে তৈরি করেছিলেন যে, যদি চিত্রকর্মটি নিলামে তোলা ও বিক্রি করা হয়, তাহলে যেন তিনি সেটি নষ্ট করে দিতে পারেন৷
চার মিটার দীর্ঘ ‘ডিভলভড পার্লামেন্ট' প্রায় এক দশক আগে আঁকা৷ ব্রিস্টল মিউজিয়াম গেল মার্চে ব্রেক্সিট উপলক্ষে আবার প্রদর্শন করে৷
ব্যাঙ্কসি তাঁর পরিচয় গোপন রাখেন৷ তাঁর কাজে রাজনৈতিক ও সামাজিক বক্তব্য থাকে৷
Artist Banksy opens hotel next to wall in Bethlehem