শিরশ্ছেদ করা ৮ বাংলাদেশির লাশ ফেরত দেবেনা সৌদি আরব
৮ অক্টোবর ২০১১ডাকাতি ও হত্যার অভিযোগে আদালতের রায়ের পর শুক্রবার তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে সৌদি আরবে বাংলাদেশি দূতাবাসের লেবার কাউন্সিলর হারুন অর রশীদ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন৷
২০০৭ সালে এক মিশরীয় নাগরিককে হত্যার অভিযোগে সৌদি আরবে ৮ বাংলাদেশির প্রকাশ্যে শিরচ্ছেদ করা হয়েছে৷ তারা হলেন, মামুন আব্দুল মান্নান, ফারুক জামাল, সুমন মিয়া, মোহাম্মদ সুমন, শফিকুল ইসলাম, মাসুদ শাসুল হক, আবু আল হোসাইন আহমেদ, মতিউর আল রহমান৷ ঐ ঘটনায় আরো ৩ বাংলাদেশিকে বেত্রাঘাতসহ কারাদণ্ড দেয়া হয়৷
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ২০০৭ সালে ঐ ৮ বাংলাদেশি ডাকাতি করতে গিয়ে এক মিশরীয় নিরাপত্তা কর্মীকে হত্যা করে৷ আর অ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল শিরশ্ছেদের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, সৌদি আরবে একটি নির্মাণাধীন কমপ্লেক্সে বৈদ্যুতিক তার চুরির সময় একদল বাংলাদেশি শ্রমিকের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় একজন মিশরীয় নাগরিক নিহত হন৷ সেখানে বাংলাদেশি শ্রমিকরা কর্মরত ছিলেন৷
এদিকে ৮ বাংলাদেশিকে শিরশ্ছেদের ঘটনা সৌদি সরকার এখনো বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি৷ তাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে কোনো তথ্য নেই৷ তবে সৌদি আরবে বাংলাদেশি দূতাবাসের লেবার কাউন্সিলর হারুন অর রশীদ ডয়চে ভেলেকে টেলিফোনে জানিয়েছেন, তারা তাদের সোর্সের মাধ্যমে শিরশ্ছেদের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন৷ আর দণ্ড কার্যকর করার আগেও বাংলাদেশি দূতাবাসকে জানানো হয়নি৷ দূতাবাস আনুষ্ঠানিকভাবে জানার পর বাংলাদেশে তাদের পরিবারকে শিরশ্ছেদের বিষয়টি জানাবে৷
তিনি বলেন যাদের শিরশ্ছেদ করা হয়েছে তাদের লাশ সৌদি আরবেই দাফন করা হয়েছে৷ সেখানকার আইন অনুযায়ী তারা এধরনের লাশ ফেরত দেয়না৷ তাই লাশ বাংলাদেশে পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই৷
লেবার কাউন্সিলর জানান সৌদি আদালত ৮ বাংলাদেশির মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষণা করে ২০০৮ সালে৷ এরপর থেকে তারা দণ্ড কমান বা মওকুফের নানা চেষ্টা করেছেন৷ এমনকি বাংলাদেশের সেময়ের রাষ্ট্রপতিও সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন৷ কিন্তু নিহতের পরিবার ছাড়া আর কারোর দণ্ড মাফ করার অধিকার সৌদি আইনে নেই৷ নিহতের পরিবারও দণ্ড মওকুফে রাজি হয়নি৷ তাই বাংলাদেশি দূতাবাসের আর কিছু করার ছিলনা৷
উল্লেখ্য, সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করেন৷ তাদের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ২০ লাখ৷
প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা
সম্পাদনা: জাহিদুল হক