বাংলাদেশে বিখ্যাত চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর মারা গেছেন৷ তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে৷
বিজ্ঞাপন
শনিবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান৷ বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই তথ্য জানিয়েছেন তার মেয়ে মুনীরা বশীর৷
বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে একাধিকবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে গুণী এই চিত্রশিল্পীকে৷ ফুসফুস ও কিডনি জটিলতার পাশাপাশি তার হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি৷ শুক্রবার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় নমুনা পরীক্ষায় তিনি করোনা ভাইরাস সংক্রমিত বলে জানা যায়৷
মুর্তজা বশীরের জন্ম ১৯৩২ সালের ১ ৭ আগস্ট৷ ঢাকার নবকুমার ইনস্টিটিউশ, বগুড়ার করোনেশন ইনস্টিটিউশন, ঢাকা গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব আর্টস (বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ) ও কলকাতা আশুতোষ মিউজিয়ামে তিনি শিক্ষা গ্রহণ করেছেন৷ ইতালির ফ্লোরেন্স একাডেমি দেল্লে বেল্লে আরতিতে চিত্রকলা ও ফ্রেস্কো বিষয়ে ও পরে প্যারিসের ইকোলে ন্যাশিওনাল সুপিরিয়র দ্য বোজার্ট এবং আকাদেমি গোয়েৎসে মোজাইক ও ছাপচিত্রে অধ্যয়ন করেন মুর্তজা বশীর৷ চিত্রশিল্পের আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি৷ ১৯৭৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আমন্ত্রণে এক মাসের জন্য দেশটির ৮টি রাজ্যের বিভিন্ন জাদুঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রদর্শন করেন তিনি৷ ‘মন্দির টেরাকোটা শিল্প’ বিষয়ে তিনি ভারতে গিয়ে গবেষণা করেন৷
তার কর্মজীবনের শুরু ১৯৫৫ সালে ঢাকার নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ড্রইং শিক্ষক হিসেবে৷ ১৯৭৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পদে যোগ দেন৷ ১৯৯৮ সালে অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন৷
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছিল তার সক্রিয় ভূমিকা৷
‘দেয়াল', ‘শহীদ শিরোনাম’, ‘কালেমা তাইয়্যেবা’, ‘পাখা’ শিল্পী মুর্তজা বশীরের আঁকা উল্লেখযোগ্য সিরিজ৷ চিত্রকলায় অবদানের জন্য ২০১৯ সালে স্বাধীনতা পদক, ১৯৮০ সালে একুশে পদক, ১৯৭৫ সালে শিল্পকলা একাডেমি পদক পেয়েছেন মুর্তজা বশীর৷
এফএস/এডিকে (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
শিল্পীদের নিয়ে সেরা চলচ্চিত্রগুলি
২০১৭ সালে চিত্রশিল্পী ভিনসেন্ট ফান গখকে নিয়ে তৈরি ছবি ‘লাভিং ভিনসেন্ট’ মুক্তি পায়৷ এই ছবি ছাড়াও বিভিন্ন চিত্রশিল্পীকে নিয়ে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু চলচ্চিত্র৷ বিস্তারিত ছবিঘরে...
ছবি: DW
‘লাস্ট ফর লাইফ’ (১৯৫৫)
বিখ্যাত ডাচ চিত্রশিল্পী ভিনসেন্ট ফান গখের জীবন, তাঁর মানসিক ব্যাধি ও শিল্পীজীবনের ওঠাপড়া নিয়ে পরিচালক ভিনসেন্ট মিনেলি তৈরি করেন ‘লাস্ট ফর লাইফ’ ছবিটি৷ ১৯৫৫ সালের এই ছবিতে অসাধারণ অভিনয় করেন কার্ক ডগলাস৷ তবে পল গগিন-এর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য অস্কার জেতেন অ্যান্থনি কুইন (ছবিতে ডানদিকে)৷
ছবি: picture-alliance/Mary Evans Picture Library
‘দা অ্যাগনি অ্যান্ড দা এক্সটাসি’ (১৯৬৫)
ভ্যাটিকানের বিখ্যাত ‘সিসটিন চ্যাপেল’ যার ছোঁয়ায় প্রাণ পায়, সেই মিকেলআঞ্জেলো’র লড়াকু জীবন তুলে ধরেন পরিচালক ক্যারল রীড৷ অসাধারণ নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে এই ছবিতে মিকেলআঞ্জেলোর জীবনের হতাশা ফুটিয়ে তোলেন অভিনেতা শার্লটন হেসটন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/United Archives/IFTN
‘মিস্টার টার্নার’ (২০১৪)
ব্রিটিশ রোমান্টিক চিত্রশিল্পী উইলিয়াম টার্নারের ব্যতিক্রমী জীবনের কাহিনি এই ছবির গল্প৷ টিমোথি স্পলের অসামান্য অভিনয় এই ছবিকে একাধিক পুরস্কার এনে দিলেও অস্কার রয়ে যায় অধরা৷
১৯২০-এর দশকে শিল্পজগতে পুরুষদের একাধিপত্য থামিয়ে দিয়েছিল মেক্সিকান এক নারী৷ ২০০২ সালে তাঁকে নিয়ে ছবি বানানো হলে ফ্রিডা কাহলো’র মতো শক্তিশালী নারী চরিত্রে অভিনয় করেন আরেক মেক্সিকান অভিনেত্রী সালমা হায়েক৷ প্রসঙ্গত, কাহলোর হাত ধরেই পশ্চিমা শিল্পজগতে নারীদের আগ্রহ বাড়তে শুরু করে৷
ছবি: Imago/United Archives
‘সেরাফিন’ (২০০৮)
পেশায় সাফাইকর্মী হলেও চিত্রশিল্পী হিসাবে ব্যতিক্রমী ছিলেন ফরাসী নারী সেরাফিন লুই৷ মার্টিন প্রোভোস্টের পরিচালনায় এই ছবিটি ফ্রান্সের ‘না-ইভ’ শিল্প আন্দোলনে সেরাফিনের সক্রিয় অংশগ্রহণকে অত্যন্ত সফলভাবে তুলে ধরে৷
ছবি: Arsenal Filmverleih
‘মডি’ (২০১৬)
সেরাফিনের মতোই ‘না-ইভ’ ধারার শিল্পে দক্ষ ছিলেন ক্যানাডিয়ান-আইরিশ নারী চিত্রশিল্পী মড লুইস৷ জীবনের বেশির ভাগ সময় দারিদ্র্যে কাটানো মড-এর ভাগ্যে খ্যাতি জোটে বেশ দেরিতেই৷ ছবিতে খ্যাতনামা এই শিল্পীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন স্যালি হকিনস৷
ছবি: Imago/ZUMA Press/Entertainment Pictures
‘লাভিং ভিনসেন্ট’ (২০১৭)
অভিনেতাদের অ্যানিমেশন চরিত্রে পরিবর্তন করে সিনেমায় এক নতুন ধারা আনেন পরিচালক ডোরোটা কবিয়েলা ও হিউ ওয়েলচম্যান৷ বিশেষ ধারায় তৈরি এই ছবিটি দেখলে মনে হয় যেন খোদ ফান গখের ছবিই পর্দায় জীবন্ত হয়ে উঠছে৷ এই ছবির সাথে সাথে তার আবহও দর্শকের নজর কেড়েছে৷
ছবি: La Belle Company
‘রঙ রসিয়া’ (২০০৮/২০১৪)
উনিশ শতকের ভারতীয় শিল্পী রাজা রবি বর্মাকে নিয়ে এই চলচ্চিত্রটি তৈরি করেন পরিচালক কেতন মেহতা৷ নামচরিত্রে রণদীপ হুডা ও পার্শ্বচরিত্রে নন্দনা সেন অভিনীত এই ছবিটি লন্ডনে মুক্তি পায় ২০০৮ সালে৷ কিন্তু ছবিতে কিছু সাহসী দৃশ্য থাকার ফলে ভারতে মুক্তি পেতে লেগে যায় ছয় বছর৷ অবশেষে ২০১৪ সালে মুক্তি পেলেও ভারতে সেভাবে চলেনি ছবিটি৷