২০০৫ সালে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ১৯ হাজার শিশু ভূমিকম্পে নিহত হয়৷ এদের অধিকাংশেরই প্রাণহানি ঘটে স্কুলভবন ধসে পড়ার ফলে৷ এর তিনবছর পর, চীনের সিচুয়ানে দু’টি বড় ভূমিকম্পের আঘাতে মৃত্যু হয় ৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীর৷
বিজ্ঞাপন
এ সমস্ত পর্যবেক্ষণ থেকে এটা স্পষ্ট যে, ভূমিকম্পে শিশুরাই সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে৷ বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা৷
গত চারবছর ধরে বাংলাদেশ বারবার ভূমিকম্পের মুখোমুখি হয়েছে৷ আর এ মুহূর্তে একটা বড় ধরনের ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ৷ রিশটার (বানানভেদে রিখটার) স্কেলে একটি ৯ মাত্রার ভূমিকম্প বাংলাদেশে ভয়বহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ তাই সার্বিক প্রস্তুতির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভূমিকম্প প্রস্তুতির বিশেষ প্রকল্পের কাজ চলছে বাংলাদেশে৷
সর্বশেষ ঢাকার অদূরে সাভারের ইয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ রকমই একটি ভূমিকম্প প্রস্তুতির মহড়া অনুষ্ঠিত হয়৷ সেই মহড়ায় স্কুলের ঘণ্টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে হাঁটু গেঁড়ে বেঞ্চের নীচে বসে পড়ে ১৫ বছরের লাকি আখতারও৷ এরপর দ্বিতীয় ঘণ্টা বাজতেই বই ও ব্যাগ মাথায় নিয়ে আরও ৩০ জন শিক্ষার্থীসহ সে ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসে৷
আরো বড় ভূমিকম্পে বাঁচবে কিভাবে ঢাকা?
ভূমিকম্পে আবারো কেঁপে উঠেছিল বাংলাদেশ৷ ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছেন৷ ক্ষয়ক্ষতি কম হলেও রাজধানী ঢাকার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন রেখে গেছে সোমবার ভোরের এই ভূমিকম্প৷
ছবি: picture-alliance/Zuma Press/S. Islam
আতঙ্কেই মারা গেছেন পাঁচজন
ভোর ৫টার দিকে শুরু হয় ৬ দশমিক ৭ মাত্রার এই ভূমিকম্প৷ প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে ঘর-বাড়ি কেঁপে ওঠায় ঘুম থেকে উঠেই ঘর ছাড়ার চেষ্টা করে অনেক মানুষ৷ এ সময় আতঙ্কে ঢাকা, জামালপুর, রাজশাহী, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাটে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে৷ ছবিতে সন্তান হারানো এক নারীর কান্না৷
ছবি: picture alliance/landov/S. Islam
আহত শতাধিক
ভূমিকম্পে আহত হয়ে ২৯ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এবং ৩২ জন সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছে৷ সারা দেশে শতাধিক বলে অনুমান করা হচ্ছে৷
ছবি: picture alliance/dpa/A. Abdullah
আতঙ্কে পাঁচ তলা থেকে লাফ
নিহতদের সবাই-ই আতঙ্কে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে চিকিৎসক এবং নিহতদের স্বজনরা জানাচ্ছেন৷ আতঙ্কে কেউ কেউ ভবন থেকে ঝাঁপিয়েও প্রাণ রক্ষার চেষ্টা করেন৷ ঢাকায় আহতদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও রয়েছেন৷ তাঁদের মধ্যে একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যাদলয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে এবং পাঁচজন মহসিন ও কবি জসিম উদ্দীন হলের দোতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হন৷
ছবি: picture-alliance/Zuma Press/S. Islam
ভয়ংকর ঝুঁকির মুখে ঢাকা
ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা শহরের অন্তত ৭২ হাজার ছোট-বড় ভবনের ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছে৷ এ অবস্থায় ভূমিকম্পে অনেকের আতঙ্কিত হওয়াই স্বাভাবিক৷
ছবি: picture-alliance/Zuma Press/S. Islam
ভূমিকম্প মোকাবেলার প্রস্তুতি নেই
ভূমিকম্পের পরে উদ্ধারকাজ সুষ্ঠুভাবে না হলে ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা বাড়ে৷ সুষ্ঠু উদ্ধার কাজের জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের সমন্বিত প্রয়াস ও যুগোপযোগী নীতিমালা থাকা দরকার৷ এ সব অনেকাংশে থাকলেও মাঠপর্যায়ে এগুলোর প্রয়োগ ও চর্চা নেই৷
ছবি: Reuters
তাহলে বিপর্যয় রোখার উপায়?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকায় বড় রকমের ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ভয়াবহ হতে পারে৷ পরিকল্পনাহীন ভবন ও রাস্তাঘাট, ঘনবসতি, উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষায়িত মহড়ার অভাবের কারণেই এমন আশঙ্কা তাঁদের৷
ছবি: picture-alliance/Zuma Press/S. Islam
6 ছবি1 | 6
এরপর লাকি আখতার সংবাদমাধ্যমকে জানায়, ‘‘এ ধরনের মহড়াগুলো গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ এর ফলে বাস্তবে এমন ঘটনা ঘটলে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পারবো৷''
সাভারের ইয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেওয়ান মোহাম্মদ আবদুস সাত্তার বলেন, ‘‘গত তিনবছর ধরে প্রতিবছরই অন্তত একবার করে ভূমিকম্প হচ্ছে৷ চলতি বছর আমরা দু'বার কম্পন অনুভব করেছি৷''
তিনি বলেন, ‘‘একবার স্কুল চলাকালেই এ ধরনের কম্পন অনুভূত হয়েছিল৷ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে তখন৷ সোজা দৌড়ে শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে যায় অনেকেই৷ এরপর থেকে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে৷''
ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার এমনিতেই ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ৷ ‘নেচার জিও সায়েন্স'-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়ে, বাংলাদেশে ৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে জনগণের একটা বড় অংশ ঝুঁকির মুখে পড়বে৷
তাই ভূমিকম্পে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ইতিমধ্যেই নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, হচ্ছে৷ দুর্যোগ প্রস্তুতি নিয়ে বাংলাদেশে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবিক সাহায্য ও নাগরিক সুরক্ষা কার্যক্রম৷ তারা বাংলাদেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করছে৷ এর বাস্তবায়নে ২০১৫ সালের মে মাস থেকে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করছে ‘সেভ দ্য চিলড্রেন'৷
যে সাতটি এলাকায় ভূমিকম্প অস্বাভাবিক নয়
নেপালে সপ্তাহান্তে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর নিহতের সংখ্যা এখনো বেড়ে চলেছে৷ তবে ভূমিকম্প নতুন নয়, পৃথিবীর আরো কয়েকটি অঞ্চল বড় ভূমিকম্পের কবলে পড়েছে৷
ছবি: Reuters/N. Chitrakar
পৃথিবী যেখানে কাঁপে
সাতটি টেকটনিক বা গঠনমূলক প্লেট দিয়ে তৈরি হয়েছে আমাদের ভূপৃষ্ঠ৷ যেসব স্থানে এসব প্লেটের মিলন ঘটেছে, সেসব স্থান সবচেয়ে ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত৷ নেপালে ভূমিকম্পের কারণ হচ্ছে ইন্ডিয়ান প্লেটের সঙ্গে ইউরেশিয়ান প্লেটের সংঘর্ষ৷ পৃথিবীর সাতটি ভূমিকম্প প্রবণ এলাকার একটি নেপাল৷
ভক্তপুর, নেপাল (আগে)
কাঠমান্ডু উপত্যকায় অবস্থিত সাতটি বিশ্ব এতিহ্য অসংখ্য নেপালী এবং বিদেশি পর্যটককে আকর্ষণ করেছে৷ ২০১৪ সালের আগস্টে তোলা হয়েছে ছবিটি৷
ছবি: picture alliance/landov
ভক্তপুর, নেপাল (পরে)
ভূমিকম্পের পরের ছবি এটি৷ উদ্ধারকর্মীরা ভেঙ্গে পড়া বিভিন্ন মন্দিরের নিচে চাপা পড়া মানুষদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন৷ নেপালে ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছে চার হাজারের বেশি মানুষ৷ উদ্ধার তৎপরতা এখনো চলছে৷
ছবি: Reuters/D. Siddiqui
জাপানের উপকূল (এখন)
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত জাপান৷ সেখানকার বহুতল ভবনগুলোও এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে সেগুলো ভূমিকম্পের সময়ও টিকে থাকতে পারে৷ দেশটিতে বেশ কয়েকটি পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রও রয়েছে৷ ছবিটি সেরকম একটি বিদ্যুতকেন্দ্রের৷
ছবি: AFP/Getty Images/JIJI Press
জাপানের উপকূল (আগে)
জাপানের দূরত্ব নেপাল থেকে পাঁচহাজার কিলোমিটার৷ ২০১১ সালের মার্চে বড় ধরনের ভূমিকম্পের কবলে পড়ে জাপান৷ সেসময় আঠারো হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায় ফুকুশিমার পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রের রিঅ্যাক্টরগুলোও গলতে শুরু করে এবং রেডিওঅ্যাক্টিভ পদার্থ গিয়ে সমুদ্রে পানিতে মেশে৷ তা সত্ত্বেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে জাপান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আন্দামান সাগর, ভারত মহাসাগর (এখন)
আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ, যেটা কিনা ভারতের অংশ, ইন্ডিয়ান প্লেট এবং ইউরেশিয়ান কন্টিনেন্টাল প্লেটের সংযোগ স্থলের কাছাকাছি অবস্থিত৷ সেখানে ভূমিকম্প যে কোনো সময় হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আন্দামান সাগর, ভারত মহাসাগর (তখন)
সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প ঘটেছে ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর৷ এখন পর্যন্ত হিসেবে রাখা তৃতীয় শক্তিশালী ভূমিকম্প ছিল সেটি৷ ভূমিকম্প এবং পরবর্তীতে সুনামির কারণে সে সময় ২৩০,০০০ মানুষ প্রাণ হারায়৷
ছবি: AFP/Getty Images/Choo Youn Kong
ইয়ুনান, চীন (আগে)
চীনের ইয়ুনান প্রদেশ এরকম অসাধারণ ল্যান্ডস্কেপের জন্য পরিচিত৷ তবে এই অঞ্চলটিও ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে৷
ছবি: picture alliance/ZUMA Press
ইয়ুনান, চীন (পরে)
২০১৪ সালের আগস্টে ভূমিকম্পের পর তোলা ছবি এটি৷ ভূমিকম্পে ৪০০-র বেশি মানুষ মারা যায় এবং একলাখের মতো গৃহহীন হয়ে পড়ে৷ চীনে বড় ভূমিকম্প দুর্লভ নয়৷ ২০০৮ সালে অপর এক ভূমিকম্পে সেদেশে প্রাণ হারায় সত্তর হাজার মানুষ৷
ছবি: Reuters
লাকিলা, ইটালি (আগে)
যদিও ইউরোপ ঠিক ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত নয়, তবে ভূমিকম্প এখানে অস্বাভাবিক নয়৷ ইটালিতে আফ্রিকার প্লেট ইউরোপীয় মহাদেশের প্লেটের বিপরীতে চাপ সৃষ্টি করছে৷ ফলে দেশটি ভূমিকম্প প্রবণ এলাকার মধ্যে রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Barone
লাকিলা, ইটালি (পরে)
২০০৯ সালে ইটালির লাকিলা শহরে ভূমিকম্পে তিনশো মানুষ প্রাণ হারায়, গৃহহীন হয় দশ হাজারের মতো মানুষ৷ সেসময় ভূমিকম্প সম্পর্কে পূর্বাভাষ দিতে ব্যর্থতার দায়ে সাত বিজ্ঞানীকে অভিযুক্ত করা হয়৷ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এটির সমালোচনা হয়েছে কেননা বিজ্ঞান অনেক এগিয়ে গেলেও এখনো ভূমিকম্পের আগাম সতর্ক বার্তা দিতে সক্ষম নয়৷
ছবি: picture alliance/INFOPHOTO
সান ফ্রান্সিসকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
১৯০৬ সালে সান ফ্রান্সিসকোতে ভূমিকম্প থেকে শহরে আগুন ধরে যায়৷ ফলে তিন হাজার থেকে ছয় হাজার মানুষ প্রাণ হারায়৷ মার্কিন ইতিহাসের অন্যতম প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে একটি এটি৷
ছবি: picture-alliance/akg-images
ভালডিভিয়া, চিলি
ভূকম্পণের মাত্রা মাপা শুরু পর থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ভূকম্পণের ঘটনা ঘটেছে চিলিতে৷ ১৯৬০ সালে সেদেশে নয় দশমিক পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্প হয়৷ এতে চিলির দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ স্থাপনা ধ্বংস হয়, প্রাণ হারায় কমপক্ষে ১,৭০০ মানুষ৷
ছবি: AP
13 ছবি1 | 13
বাংলাদেশ এরইমধ্যে ৮৪টি প্রাথমিক এবং ৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মহড়া সম্পন্ন করেছে৷ এ সংক্রান্ত একটি ‘গাইডলাইন' চূড়ান্ত করতেও কাজ করছে সরকার৷ প্রায় ৬৬ হাজার প্রাথমিক এবং ৩২ হাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ধরনের মহড়া পরিচালনা করাই এই গাইডলাইনের লক্ষ্য৷
মূলত টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে ভূমিকম্প হয়৷ আর বাংলাদেশ এ ধরনের তিনটি প্লেটের মধ্যে অবস্থিত৷ ভারতীয়, ইউরেশীয় ও মিয়ানমারে টেকটনিক প্লেটের মধ্যে অবস্থান করছে দেশটি৷ বাংলাদেশের নীচে জমে ওঠা টেকটনিক প্লেটে চাপ পড়ছে কম করে বিগত ৪০০ বছর ধরে৷
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ভূমিকম্প সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সরকার একজন আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষক নিয়োগ করছে৷ আগামী সেপ্টেম্বর থেকে তাঁর কাজ শুরু হবে৷''
বাংলাদেশে সেভ দ্য চিলড্রেন-এর স্কুল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ব্যবস্থাপক মনির উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘বহু স্কুলেই শিক্ষার্থীদের আশ্রয় নেওয়ার জন্য চেয়ারগুলোর উচ্চতা বেশ কম৷''
সাভারের ইয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেওয়ান মোহাম্মদ আবদুস সাত্তারের কথায়, ‘‘অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে আমরা এখন বেশি সংগঠিত৷ প্রতি তিনমাস পরপর আমরা এ ধরনের একটি করে মহড়া করব৷ তাহলে বাস্তব পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা এটি প্রয়োগ করতে পারবে৷''
মাকসুদ কামাল
২০১৩ সালে বাংলাদেশে রানা প্লাজা ধসের পর সাড়ে তিন হাজার ফ্যাক্টরির ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান প্রকৌশলীরা৷ তাঁরা ফ্যাক্টরি ভবনগুলোর কাঠামোগত পরিস্থিতির পর্যালোচনাও করেন৷ পর্যালোচনা শেষে তাঁরা জানান যে, ২৫ শতাংশ ভবনে আরও সংস্কারের প্রয়োজন আছে৷ বলেন, বাংলাদেশের স্কুল ভবনগুলোর অবস্থা আরো খারাপ৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম মাকসুদ কামাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ৷ কারণ এগুলো শুধুমাত্র ইট-সুরকির তৈরি৷ এমনকি পরবর্তীতে বানানো কিছু ভবন ‘এল শেপড', যেগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ৷ এগুলো সাত মাত্রার বেশি ভূমিকম্পেই ধসে পড়বে৷ আর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবনগুলোতে আছে ল্যাবরেটরি, যাতে নানারকম কেমিক্যাল থাকে৷ তাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যে আছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘সরকারের উদ্যোগে এখন স্কুলগুলোতে ভূমিকম্প প্রস্তুতি মহড়া শুরু হয়েছে৷ তবে এটা প্রতিবছর চারমাস অন্তর অন্তর বা তিনবার হওয়া প্রয়োজন৷ শিক্ষার্থীদের জীবন রক্ষা এবং সচেতন করতে এটা খুবই জরুরি৷''