অনেক বাবা-মাই চান তাঁদের সন্তান বিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠুক৷ কিন্তু সবসময় তা সম্ভব হয়ে ওঠে না৷ তবে জার্মানিতে একটি বিজ্ঞান কেন্দ্র আছে যেখানে গেলে শিশুরা বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে৷
বিজ্ঞাপন
প্রতিবছর প্রায় দুই লক্ষ ৭০ হাজার দর্শক ফেনোতে যায়৷ এর মধ্যে স্কুল শিক্ষার্থীদের দলও আছে৷ বিজ্ঞান কেন্দ্রের গাইড গিজেলা ক্রাউজে-ব্যার্থেল জানান, ‘‘ফেনোকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন শিশুরা বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে মজা পায়৷ কোন বিষয়ে তারা পরীক্ষা করতে চায় সেটা নিজেরাই ঠিক করে৷ এভাবে তারা মনোযোগ ছাড়াই অনেককিছু শিখতে পারে৷''
পেরেকের বিছানার উপর নিজেদের ওজন ভাগ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি ফেনোতে গিয়ে বুঝতে পারে শিক্ষার্থীরা৷ মাকড়সা কীভাবে শৈল্পিক উপায়ে তাদের বাসা বানায় সেটাও শিশুরা নিজেরাই পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পারে৷
ওরা ইন্টারনেটে যা দেখে
জার্মানির মাইনৎস মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোদৈহিক বিভাগের একটি জরিপের ফলাফলে জানা গেছে, আজকের কিশোর-কিশোরীরা অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছে৷ কী দেখে তারা? ছবিঘরে পাবেন...
ছবি: Pub Crawl Cologne
অতিরিক্ত ইন্টারনেট টিন-এজারদের নিঃসঙ্গ করে তোলে
সম্প্রতি ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সি ২,৪০০ কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে একটি জরিপ করা হয়েছিলো৷ যারা দিনের ৬ ঘণ্টাই কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল বা ট্যাবলেটের সামনে বসে সময় কাটায়, তাদের সমবয়সি বা বন্ধুবান্ধবদের সাথে মেশার তেমন কোনো আগ্রহ নেই৷ কারণ সামনে থাকা যন্ত্রটিই তাদের বড় বন্ধু ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. von Jutrczenka
কম্পিউটার গেম
যখন মানুষের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার সবচেয়ে ভালো সময় ঠিক সেসময়ই যদি তারা দিনের এতটা সময় কম্পিউটার গেম বা যৌন বিষয়ক ওয়েবসাইট নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটায় তাহলে কারো সাথে বন্ধুত্ব হওয়া খুব কঠিন৷ এ কথা বলেন গবেষক টিমের প্রধান ডা.মানফ্রেড বয়টেল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নেশা
যাদের নিয়ে গবেষণা করা হয়, তাদের মধ্যে শতকরা ৩.৪ শতাংশই ইন্টারনেটে নেশাগ্রস্ত৷ অর্থাৎ তারা দিনে ৬ ঘণ্টার বেশি অনলাইনে থাকে, অন্য কিছুর প্রতি তাদের কোনো আগ্রহ নেই৷ ১৩.৮ শতাংশ কিশোর-কিশোরীদের নেশা না হলেও তারাও ইন্টারনেটের প্রতি খুবই আগ্রহী৷ সময়ের দিক থেকে ছেলেমেয়ে সমানভাবেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে৷
ছবি: Shaikh Azizur Rahman
ছেলে-মেয়ের পার্থক্য
সময়ের দিক থেকে পার্থক্য না থাকলেও ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে৷ যেমন মেয়েরা বেশি সময় কাটায় সামাজিক যোগাযোগ এবং অনলাইন শপিং-এ, আরা ছেলেরা বেশি সময় খরচ করে কম্পিউটার গেম এ, এবং যৌনআনন্দে৷
ছবি: Fotolia/apops
বন্ধু চাই
যেসব টিন-এজ বা কিশোর-কিশোরীরা সমাজে ভালোভাবে মেলামেশা করতে পারেনা, তারা এমন অনলাইন কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকে যেগুলোতে সামাজিক যোগাযোগ কম হয়৷ এ তথ্য জানান ড.বয়টেল তাঁদের ক্লিনিকের আউটডোর পেশেন্ট হিসেবে আসা কম্পিউটারে ‘নেশা’ টিন-এজারদের সম্পর্কে৷
ছবি: Fotolia/Doreen Salcher
সামাজিকভাবে মেলামেশার পরামর্শ
এরকম ছেলে-মেয়েদের বাবা-মা এবং শিক্ষকদের প্রতি ডা.মানফ্রেড বয়টেলের পরামর্শ, টিন-এজারদের প্রযুক্তির উন্নয়ন ব্যবহারের পাশাপাশি সামাজিকভাবে মেলামেশার বিষয়টির দিকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া এবং লক্ষ্য রাখা উচিত৷
ছবি: Pub Crawl Cologne
6 ছবি1 | 6
ফেনোর একটি ল্যাবে পৃথিবী নিয়ে ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা আছে৷ সেখানে শিশুরা কেঁচো কীভাবে ত্বক দিয়ে শ্বাস নেয় আর কীভাবে নড়াচড়া করে তা জানতে পারে৷
এছাড়া খাবার পানি কীভাবে তৈরি হয়েছে? পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট কীভাবে কাজ করে এ সম্পর্কেও ধারনা পায় শিশুরা৷
ফেনোর লক্ষ্য শিশুদের অনেক আনন্দ দেয়া আর তাদের কৌতূহলকে জাগ্রত করে তোলা৷ শিক্ষার্থীদের যদি নিজে নিজে শেখা আর অনেক অনুশীলন করানোর মাধ্যমে উৎসাহিত করে তোলা যায়, তাহলে তারা কৌতূহলী হয়ে বেড়ে ওঠে, তাদের মধ্যে জানার আগ্রহ গড়ে ওঠে৷