শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নাকি মানুষ গড়ার কারখানা৷ সেখানেই যদি শিক্ষকেরা শিশুদের নৃশংসভাবে মারধর করেন তাহলে সেসব শিশু কি সত্যিই একদিন জাতির জন্য ভালো ভবিষ্যত হবে? বলছিলাম হাটহাজারীর মাদ্রাসায় এক শিশুকে নির্যাতনের কথা৷
বিজ্ঞাপন
হাটহাজারী পৌরসভার কনক কমিউনিটি সেন্টারের পাশে আল মারকাযুল কোরআন ইসলামিক একাডেমি নামের মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষার্থী আট বছর বয়সি শিশুকে দেখতে যায় তার মা মঙ্গলবার৷ মা ফেরার পথে শিশুটি মায়ের পিছু পিছু হাঁটতে শুরু করে৷ তা দেখে মাদ্রাসার এক শিক্ষক শিশুটিকে সেখান থেকে জোর করে ধরে এনে মারধর শুরু করেন৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশু নির্যাতনের এই ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ার পর অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেন এবং শিক্ষক ইয়াহিয়াকে আটক করেন বলে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন৷
সন্তানকে শিক্ষক অমানবিক নির্যাতন করায় শিশুর মা স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন, কষ্ট পেয়েছেন কিন্তু শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না করায় শিক্ষককে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন৷
আমার প্রশ্ন, শিশুটির মা অপরাধীর বিরুদ্ধে প্রথমে কেন অভিযোগ করেন নি? শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের কারণে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন ভেবে না কি তার ভেতরে কি কোনো ধরনের শঙ্কা বা ভয় কাজ করেছে ? যাই হোক, শেষ পর্যন্ত তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন৷ শিশুর মা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করায় অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেকথা বিবিসিকে জানিয়েছেন হাটহাজারী পুলিশ৷ অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্তও করা হয়েছে৷
শিশুকে মারলে সে অংকে খারাপ করে
ইউনিসেফ-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে শিশুকে মারধর করলে কিংবা তাকে মানসিকভাবে শাস্তি দিলে পরবর্তীতে সেটা তার লেখাপড়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে৷
ছবি: picture alliance/dpa
শারীরিক শাস্তি
ইউনিসেফ-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের ২ থেকে ১৪ বছর বয়সি প্রতি ১০ জন শিশুর মধ্যে ছয়জনকে নিয়মিতভাবে শারীরিক শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়৷ শিশুদের যাঁরা দেখাশোনা করেন তাঁরাই এই শাস্তি দিয়ে থাকেন৷ শারীরিক শাস্তি বলতে ইউনিসেফ বুঝিয়েছে এমন শাস্তি যেটা দিলে শিশু শরীরে ব্যথা কিংবা অস্বস্তি অনুভব করে৷ এমন শাস্তির মধ্যে রয়েছে শিশুর হাত, পা, মুখ, মাথা, কান কিংবা নিতম্ব ধরে ঝাঁকানো বা মার দেয়া৷
ছবি: Fotolia/Firma V
মানসিক শাস্তি
কোনো অপরাধের প্রেক্ষিতে শিশুর সঙ্গে চিৎকার করে কথা বলা, তার কাছ থেকে কোনো সুযোগ কেড়ে নেয়া যেন শিশুটি মানসিকভাবে কষ্ট পায় ইত্যাদিকে মানসিক শাস্তি হিসেবে মনে করে ইউনিসেফ৷ তাদের গবেষণা বলছে, বিশ্বের ৮০ শতাংশ শিশুকে বোঝানো হয়েছে যে, তারা (শিশু) যেটা করেছে সেটা ঠিক নয়৷ ৭০ শতাংশের ক্ষেত্রে চিৎকার করে সেটা করা হয়েছে৷ এছাড়া ৪৮ শতাংশের ক্ষেত্রে শিশুদের কিছু সুবিধা কেড়ে নেয়া হয়েছে৷
ছবি: picture alliance/ANP/R. Koole
সবচেয়ে বেশি ইয়েমেনে
বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে অভাগা বলতে হবে এই দেশের শিশুদের৷ কেননা সেখাকার প্রায় ৯৫ জন শিশুকেই তাদের অপরাধের জন্য শারীরিক ও মানসিক শাস্তি পেতে হয়৷ অভাগাদের তালিকায় এরপর ক্রমান্বয়ে আছে ঘানা, টিউনিশিয়া, টোগো, ক্যামেরুন ও ফিলিস্তিনের শিশুরা৷ এই গবেষণা সম্পর্কে আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: picture alliance/dpa/P. Pleul
বাংলাদেশ বিষয়ক তথ্য
ইউনিসেফ-এর সহায়তায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে ১ থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশুদের দুই-তৃতীয়াংশকে মারধর করেন মা-বাবাসহ অভিভাবকেরা৷ আর ৭৪.৪ শতাংশ শিশুকে মানসিক চাপ দিয়ে শৃঙ্খলা শেখানো হয়৷ শৃঙ্খলা বলতে শিশুদের পড়াশোনায় মনোযোগী করাসহ অভিভাবকদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজকে বোঝানো হয়েছে৷ এছাড়া প্রতি তিনজন মায়ের মধ্যে একজন বিশ্বাস করেন, নিয়মকানুন শেখাতে সন্তানদের শাস্তি দেয়া প্রয়োজন৷
ছবি: picture alliance/ANP/R. Koole
অংক স্কোর কম করে!
শিশুদের উপর শারীরিক ও মানসিক শাস্তির প্রভাব নিয়ে আরেকটি গবেষণা করেছে ইউনিসেফ৷ তাতে দেখা গেছে, ৮ বছর বয়সে যেসব শিশু এ ধরণের শাস্তির মুখোমুখি হয়েছে তারা ১২ বছর বয়সে গিয়ে স্কুলে অংকে খারাপ স্কোর করেছে৷ শব্দভাণ্ডার গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও তাদের অনীহা দেখা গেছে৷ শিশুকে শাস্তি দেয়ার এটি একটি নেতিবাচক প্রভাব বলে উল্লেখ করেছে ইউনিসেফ৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: picture alliance/dpa
ইউনিসেফ-এর উদ্যোগ
শিশুদের শারীরিক শাস্তি দেয়া নিষিদ্ধ করতে জাতিসংঘের এই সংস্থাটির ‘কনভেনশন অন দ্য রাইটস অফ দ্য চাইল্ড’ রয়েছে৷ এখন পর্যন্ত ১৪০টি দেশ এতে স্বাক্ষর করেছে৷ তবে এর মাধ্যমে বিশ্বের মাত্র ৮ শতাংশ শিশুকে শারীরিক শাস্তির হাত থেকে রক্ষা করা গেছে বলে জানিয়েছেন ইউনিসেফ এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডেল রুটস্টাইন৷ ১৯৮৯ সালে গৃহীত এই কনভেনশনে ১৯৯০ সালে সই করে বাংলাদেশ৷
ছবি: picture alliance/ANP/R. Koole
6 ছবি1 | 6
শিক্ষার্থীদের মারধর করা বাংলাদেশে মোটেই অস্বাভাবিক ঘটনা নয়৷ ‘মায়ের পেছন পেছন যাওয়ায় ছাত্রকে বেধড়ক পেটালেন মাদ্রাসা শিক্ষক’ এবং ‘‘পড়া না পারায়’ মাদ্রাসা ছাত্রকে পিটিয়ে জখম, শিক্ষকের দণ্ড’’- ছাত্র মারধরের এই দুটি ঘটনা একই দিনে প্রকাশিত হয়েছে দেশের সংবাদমাধ্যমে ৷
ময়মনসিংহের নান্দাইলে মাদ্রাসার নূরানি বিভাগের ১১ বছর বয়সি এক শিক্ষার্থীকে পড়া না পারার কারণে বাঁশের তৈরি বেত দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন শিক্ষক শফিকুল ইসলাম৷ পরে শিক্ষার্থীর বাবা বিষয়টি জানালে ওই শিক্ষককে আটক করে সাতদিনের কারাদন্ড দেওয়া হয়৷
আট বছরের একটি ছোট্ট শিশু অনেকদিন পরে নিজের মা কে দেখলে তার পেছন পেছন যেতে চাইতেই পারে আর এটাই তো স্বাভাবিক! সেজন্য এমন মারধর ! দ্বিতীয় ঘটনার ছেলেটি ক্লাসে পড়া পারেনি, এটা কি কোনো অপরাধ? যার জন্য শিশুটিকে মেরে জখম করতে হবে শিক্ষকের? প্রথম ঘটনার ভিডিওটি ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়ায় সারা বিশ্ব জেনেছে, আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে৷ জানিনা, হয়তো সেকারণেই শিশুটিরঅভিভাবক সাহস পেয়ে পরে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন৷
শুধু বাংলাদেশ নয় উন্নয়নশীল বহু দেশেই হাজারো শিশু ঘরে বা স্কুলে শারীরিক এবং মানসিকভাবে নানা নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে৷ বেশ কিছুদিন আগের ইউনিসেফের করা এক গবেষণার রিপোর্টে দেখা গেছে, শিশুদের মানসিক বা শারীরিকভাবে শাস্তি দেওয়ায় তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে শিশুদের লেখাপড়ায়৷ তাছাড়াও শিশুদের মনস্তত্ত্ব নিয়ে করা বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, শিশু বয়সে যাদের মারধর করা হয়, পরবর্তীতে তারাও নিজেদের শিশু বা সুযোগ পেলে অন্যদের মারধর বা নানাভাবে নির্যাতন করে থাকে৷
শিশুদের মারধর বা বকাবকি না করে কোমল মনের শিশুদের বুঝিয়ে বললে যে কাজ বেশি হয় তা বোধহয় ব্যক্তিগত জীবন থেকে আমরা কম -বেশি সবাই জানি৷ আমার দুই একজন জার্মান শিক্ষক বন্ধু রয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন আমার প্রতিবেশি মারিয়ানে৷ দীর্ঘ শিক্ষক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানান, ‘‘মা-বাবার পরেই একটি শিশুর সবচেয়ে ভালো বন্ধু তার শিক্ষক৷ পড়াশোনায় শিশুর অমনোযোগ বা অন্যরকম আচরণ দেখেই শিশুর সমস্যা আঁচ করা যায়, শিশুকে একটু আদর করে সমস্যা জেনে নিয়ে তার সমাধানের চেষ্টা করতেন তিনি সবসময়৷ প্রয়োজনে শিশুর মা-বাবার সাথে কথা বলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সফল হয়েছেন তিনি৷ পড়াশোনায় ছাত্রদের মনোযোগী করে ভালো মানষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারাই একজন শিক্ষকের সার্থকতা৷’’
আসলে মারধর করে কিছু অর্জন করা যায় না৷ জার্মনিসহ ইউরোপের অনেক দেশেই শিশুর গায়ে শিক্ষকের হাত তোলা পুরোপুরি নিষিদ্ধ৷ জার্মানিতে শিশু সুরক্ষা আইনের বিশেষ ধারায় শিশুদের মারধর করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ৷ শুধু স্কুলে নয়, শিশুরা যাতে বাড়িতেও সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্যও রয়েছে বেশ কড়া আইন৷ শিশু সুরক্ষার এমন আইন সন্তান লালন পালনে মা-বাবার পুরো অধিকার থাকলেও সন্তানের গায়ে হাত তোলা বা মানসিকভাবে ক্ষতি করার কোনো অধিকার নেই মা-বাবার৷ ইউরোপ অ্যামেরিকার মতো উন্নত দেশে আইন এবং আইনের প্রয়োগ দুটোই রয়েছে বলেই এমনটা সম্ভব৷
একটি শিশু তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বাড়িতে নিরাপদ না হলে সে কি করে একজন ভালো মানুষ হয়ে হবে? শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের দেশে কি এমন একটি আইন হতে পারে না? দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আইনের প্রয়োগের কথা না হয় পরে হবে, আগে তো শিশু সুরক্ষার যথাযথ একটি আইন করা হোক!
গত সেপ্টেম্বেরের ছবিঘরটি দেখুন..
একমাসে খবরে আসা নির্মমতার আট ঘটনা
৯ আগস্ট থেকে ৮ সেপ্টেম্বর৷ এই এক মাসে বাংলাদেশের কিছু মানুষের নির্মম আচরণের উদাহরণ তুলে ধরা হচ্ছে ছবিঘরে৷
ছবি: bdnews24.com
গরু চুরির অপবাদে নির্যাতন
২১ আগস্ট গরু চুরির অপবাদ দিয়ে পারভিন বেগম, তার দুই মেয়ে, এক ছেলে ও ছেলের বন্ধুকে কোমরে রশি বেঁধে প্রকাশ্যে রাস্তায় হাঁটিয়ে মারধর করতে করতে কক্সবাজারের চকরিয়ার হারবাং ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে৷ সেখানে ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিরানুল ইসলাম মিরানও তাদের মারধর করেন৷ বুধবার মিরানসহ আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়৷
ছবি: bdnews24.com
নৈশপ্রহরীকে পিটিয়ে হত্যা
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ির বাজারে নৈশপ্রহরীর চাকরি করতেন ৬০ বছরের তসলিম উদ্দিন৷ ৯ আগস্ট ঐ বাজারের এক মুদি দোকানে চুরি হলে দোকান মালিক জামিলুর রহমান (২৮) চুরির সঙ্গে তসলিম জড়িত থাকতে পারেন সন্দেহ করে তাকে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বেঁধে মারধর করে৷ পুলিশ তসলিমকে হাসপাতালে নেয়ার উদ্যোগ নেয়, তবে পথেই তিনি মারা যান৷ জামিলুর রহমান ও তার ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
ছবি: AFP/Getty Images
শিশু কেন্দ্রে তিন কিশোরের মৃত্যু
১৩ আগস্ট যশোরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়, আহত হয় ১৫ জন৷ কর্তৃপক্ষের দাবি, কিশোরদের দুই দলের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে৷ তবে আহত কিশোরদের ভাষ্য, কেন্দ্রের প্রধান নিরাপত্তা কর্মীর সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে কেন্দ্র কর্মকর্তা, আনসার সদস্য ও তাদের ‘অনুগামী’ কয়েকজন কিশোরের মারধরে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে৷ কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক ও সহকারী তত্ত্বাবধায়কসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com
চুরির অপবাদ দিয়ে মারধরের অভিযোগ
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল ২০ শতক জমি পেতে আমির হোসেনকে অনেকদিন ধরে চাপ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ৷ এতে রাজি না হওয়ায় ২৩ আগস্ট রাতে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে আমির হোসেনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান৷ পরে জ্ঞান ফিরলে মামলা না করতে ও চিকিৎসা না নিতে সাদা কাগজে সই নেয়া হয় বলে দাবি তার৷ চেয়ারম্যান ছৈয়াল সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷
ছবি: bdnews24.com
শ্বশুর-শাশুড়ির হাতে গৃহবধূ নির্যাতন
৩ সেপ্টেম্বর পিরোজপুর জেলার আমারগাছিয়া ইউনিয়নের মানিকখালী গ্রামে সৌদি আরব প্রবাসী ছেলের বউ-এর সাথে শাশুড়ি আলেয়া বেগমের পারিবারিক বিষয়ে তর্ক শুরু হয়৷ এক পর্যায়ে শ্বশুর, শাশুড়ি ও চাচা শ্বশুর মিলে গৃহবধূকে নির্যাতন করেন৷ ঐ গৃহবধূর মেয়ের করা ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ৫ সেপ্টেম্বর রাতে মামলা হয়৷ এরপর শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়৷
ছবি: bdnews24.com
চোর সন্দেহে শিশু পেটানো
ময়মনসিংহের সদর উপজেলার চর ভবানীপুর এলাকায় ৩ সেপ্টেম্বর মোবাইল ফোন চোর সন্দেহে ১২ ও ১৭ বছর বয়সি দুই শিশুকে দড়ি দিয়ে বেঁধে পেটানো হয়৷ ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ৬ সেপ্টেম্বর দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ তাদের একজন গোলাম মোস্তফার (৪৫) নিজের মেয়ের মোবাইল চুরি করেছে সন্দেহে ঐ দুই শিশুকে পিটিয়েছিলেন৷
যৌতুক না পাওয়ায় এই নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ৷ ময়মনসিংহের নান্দাইলে ৬ সেপ্টেম্বর এই ঘটনা ঘটে৷ সেদিন কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে জুয়েল মিয়া (২৮) স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ফাহিমা সুলতানার (২২) মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থান ক্ষতবিক্ষত করেন৷ পরে বাঁশ দিয়েও মারধর করেন৷ এতে ফাহিমা অচেতন হয়ে যান৷ হাসপাতালে নেয়ার দুদিন পর মৃত সন্তান প্রসব করেন তিনি৷ স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Keystone USA Falkenberg
পায়ে শিকল বেঁধে শিশু নির্যাতন
দিনাজপুরের বিরামপুরের ত্বালিমউদ্দীন ইসলামিয়া মাদ্রাসার ছাত্র মো. মারুফ হোসেনকে (১০) ৮ সেপ্টেম্বর পায়ে শিকল বেঁধে লাঠি দিয়ে হাত, মাথা, পিঠসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়েছে৷ এই অপরাধে মাদ্রাসার মোহতামিম লুৎফর রহমানকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে৷ মারধরের এক পর্যায়ে মারুফ নিস্তেজ হয়ে পড়লে লুৎফর ঘর থেকে বের হন৷ এই ফাঁকে মারুফ পালিয়ে পাশের ধানক্ষেতে আশ্রয় নেয়৷ স্থানীয় থানার ওসি তাকে উদ্ধার করেন৷