মস্কো শহরে শীতের সময় দিন বড় ছোট৷ তাই রাশিয়ার রাজধানী শহরকে কিছুটা আলোকিত করে রাখার প্রচেষ্টা নিয়ে বিস্ময়ের কোনো কারণ থাকতে পারে না৷
ছবি: Reuters/Y. Shino
বিজ্ঞাপন
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই মস্কো শহরের কেন্দ্রস্থলে প্রায় ২ কোটি বাল্ব দিয়ে তৈরি ৪,০০০ লাইট ইনস্টলেশন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে৷ যেমন পথচারীদের জন্য নির্দিষ্ট এই এলাকায়৷ মস্কো শহর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি আলেক্সান্ডার কনট্রাটেনকো বলেন, ‘‘এই নিকোলস্কায়া সড়কের ৬০০ মিটার উপরে নক্ষত্রভরা এই আকাশ বসানো হয়েছে৷ আলোর শৃঙ্খল ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ৷''
আলোর এই সাগরের জন্য কত ব্যয় হয়েছে, তা কেউ জানে না৷ সরকারি হিসেব অনুযায়ী মস্কোর কর্তৃপক্ষ বিদ্যুতের দামসহ প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ ইউরো ব্যয় করেছে৷ সেইসঙ্গে বেসরকারি কিছু সংস্থাও স্পনসর হিসেবে এগিয়ে এসেছে৷ তবে এই কর্মযজ্ঞের ফলাফল সত্যি দেখার মতো৷ পথচারীদের অনেকেই মনে করেন, সূর্য ডুবলে এই আলোকসজ্জা মানুষের মনে কিছুটা নিরাপত্তাবোধ আনে৷ তখন মন শান্ত হয়, আনন্দে ভরে যায়৷
শীত সত্ত্বেও মস্কোর মানুষ সন্ধ্যায় বেড়াতে ভালবাসেন৷ তবে শরীর গরম রাখতে রসদের প্রয়োজন হয়৷ কখনো বারবিকিউ, কখনো বা রুশ সামোভার থেকে গরম চা৷ রুশ ঐতিহ্য অনুযায়ী এই সামোভারে কয়লা ও পাইন গাছের ত্রিকোণ ফল ভরা আছে৷ সে কারণেই পানিতে কিছুটা ধৌঁয়ার স্বাদ পাওয়া যায়৷
শীতে ঝলমলে মস্কো
04:07
This browser does not support the video element.
বলশয় থিয়েটার শীতের আলোকসজ্জায় উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে৷ রেড স্কোয়্যারে বিশাল বিপণি জিইউএম আলোর সাজে মোড়া রয়েছে৷ প্রতি সন্ধ্যায় হাজার হাজার মানুষ শহরের দর্শনীয় স্থানগুলির আলোকসজ্জা উপভোগ করেন৷
রেড স্কোয়্যারের উপর মস্কোর সবচেয়ে জনপ্রিয় স্কেটিং-এর জায়গা৷ তবে সীমিত সেই রিং-এ প্রবেশের জন্য ভিড় লেগেই রয়েছে৷ সেই স্কেটিং রিং ছোট মনে হলে গোর্কি পার্কে যেতে হবে৷ সেখানেও আধুনিক আলোকসজ্জা৷ ইউরোপের সবচেয়ে বড় স্কেটিং রিং সেখানে অবস্থিত৷ স্কেট লাগানো জুতো বেশ সস্থায় ধার নেওয়া যায়৷ স্বপ্নময় এই পরিবেশে আনাড়ি ও অভিজ্ঞদের জন্য স্কেটিং কোর্সের ব্যবস্থা রয়েছে৷
খুবই সুন্দর জায়গা৷ প্রত্যেকটি গাছ আলো দিয়ে মোড়া৷ সারা দেশের মানুষ এই সজ্জা দেখতে মস্কোয় আসেন, সে বিষয়ে আলোচনা করেন৷ তবে কোনো এক সময় এই ভিড় সরে যায়৷ তখন শান্তিতে সব কিছু দেখা যায়৷ হই-হট্টগোল থেকে দূরে গিয়ে মস্কভা নদীর উপর জাহাজে বসে আলোকসজ্জা দেখা সম্ভব৷ ভিতরে হিটিং ব্যবস্থা থাকায় বেশ আরামে বসা যায়৷
নদী ভ্রমণের শেষ পর্যায় ক্রেমলিনের পাশ দিয়ে জাহাজ চলে যায়৷ বেশ রাজকীয় দেখায়৷ মস্কোর মানুষ মনে করেন, ঠান্ডা সত্ত্বেও এত আলোর কল্যাণে শীতকালই শ্রেষ্ঠ ঋতু৷
শীত থেকে যেভাবে বাঁচে প্রাণীরা
জার্মানিতে আস্তে আস্তে শীতের প্রকোপ বাড়ছে৷ সাধারণত এ সময়ে মানুষ আরো বেশি গরম কাপড় পরে৷ ঠান্ডায় বাইরে থাকার চেয়ে ঘরেই থাকতেই ভালোবাসে তারা৷ কিন্তু পশু-পাখিরা কি করে থাকে প্রচণ্ড এই শীতে? চলুন জানা যাক এই ছবিঘর থেকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
প্রচণ্ড শীতে যা করতে হবে
বাইরে যখন প্রচণ্ড শীত, মানুষ তখন ঘরে হিটারের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয় আর যতটা সম্ভব বাড়িতেই থাকার চেষ্টার করে৷ এই প্রাণীটি যেমন নিজেকে শীতের হাত থেকে বাঁচাতে মাটির নীচে চলে যায়৷ আর পানি যখন জমতে শুরু করে তখন বরফের ফাঁক থেকে মাথা উঁচু করে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শীতে রং-ও যায় বদলে
শীতের সময় বেজি জাতীয় এই প্রাণীদের দেহে শুধু যে মোটা পশমই তৈরি হয়, তা নয়৷ ওদের গায়ের বাদামি রং-এর পশম হয়ে যায় ধবধবে সাদা৷ যার ফলে শীতের কষ্ট কিছুটা হলেও কমে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেয়
ঈগল পাখিদের সেরকম সমস্যা হয় না৷ কারণ শীতকালটা ওরা ঘুমিয়েই থাকে৷ ফলে ওদের শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমে যায়৷ শীতের সময় ওরা অন্য কিছু খায়ও না আর ঘুমের মধ্যে নিজেদের গায়ের ক্ষয়প্রাপ্ত চর্বি থেকেই খাদ্যগ্রহণ করে৷ ঘুমের সময় এ সব প্রাণীকে আঘাত করলে ওদের মরে যাওয়াও অসম্ভব কিছু নয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
একে অপরকে আলিঙ্গন
শরীর গরম রাখার জন্য একে অপরকে জড়িয়ে থাকাটা খুবই জনপ্রিয় একটি উপায়৷ তবে সেটা যে শুধু শীত ঘুমে থাকা প্রাণীদের মধ্যেই দেখা যায়, তা কিন্তু নয়!
ছবি: picture-alliance/dpa
আফ্রিকায় শীতকালীন ঘুম
সাদা, সুন্দর এই বকগুলো যখন কেনিয়ার সেরেংগেটি অভয়ারণ্যে শীত ঘুমে থাকে, তখন অন্য বকগুলো ১০ হাজার কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ আফ্রিকার পথে উড়তে শুরু করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
জার্মানিতে শীতকালীন ছুটি
সুমেরু অঞ্চল থেকে পাখিরা চলে আসে জার্মানিতে৷ বলা বাহুল্য, আর্কটিসের তুলনায় ওদের কাছে জার্মানির আবহাওয়া অনেক বেশি আরামদায়ক৷ প্রতি বছরই ওরা আসে এখানে, পাখি-প্রিয় পর্যকদের জন্য যা আনন্দদায়কও বটে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শীতকালের জন্য খাবার সংগ্রহ
কাঠবেড়ালিরা হেমন্তকালেই শীতকালের জন্য খাবার সংগ্রহ করে রাখে৷ এক হয় মাটির নীচে, না হয় গাছের গোড়ায়৷ শুধু তাই নয়, জমিয়ে রাখা সেই খাবার খুঁজে পাওয়ার জন্য চিহ্নও দিয়ে রাখে ওরা৷ অবশ্য খাবারের গন্ধও এই খোঁজার কাজে সাহায্য করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বেশি বেশি করে খাওয়া
যেসব প্রাণীর ‘শীত ঘুম’ নেই, তাদের শীতকালে নিজেদের গরম রাখার জন্য অনেক বেশি খাবার খেতে হয়৷ বিশেষ করে ছোট ছোট পাখিদের৷ তাই খাবার পেলে ওরা খুবই খুশি হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ওপর থেকে উষ্ণতা নেয়
চিড়িয়াখানায় যারা পশু-পাখির দেখাশোনা করেন, তাঁরাই ওদের গরম রাখার জন্য গায়ের ওপর লাইটের তাপ দিয়ে থাকে৷ ছবিতে দেখুন আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা এই জন্তুটিকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
প্রয়োজনে কোট গায়ে দেয়
গৃহপালিত পশুদের জন্য সব কিছুই খানিকটা সহজ৷ কারণ ওরা বাড়িতে থাকে৷ ফলে শীতের প্রকোপ সেভাবে বুঝতে পারে না৷ তাছাড়া কুকুরদের জন্য বাজারে সুন্দর কোটও কিনতে পাওয়া যায়৷