1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শীতে বিপাকে মানুষ, ৬৪ জনের মৃত্যু

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৪ জানুয়ারি ২০২০

শীত ও শীতজনিত রোগে এ মৌসুমে বাংলাদেশে মোট ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ উত্তরবঙ্গে দিন পার করা কঠিন হয়ে পড়েছে নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য৷ সরকারের দাবি পর্যাপ্ত ত্রাণ দেয়া হচ্ছে কিন্তু সেগুলো পৌছেনি চাহিদামতো এসব মানুষের কাছে৷

Bangladesch Kältewelle
ফাইল ফটোছবি: bdnews24

এমন অবস্থায় আগামী সপ্তাহে শৈত্যপ্রবাহে সারাদেশে আবারও তাপমাত্রা কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর৷  

ডিসেম্বর থেকেই বেশ কয়েকবার তীব্র শীতের কবলে পড়েছে বাংলাদেশ৷ নিম্নবিত্ত মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে চরম কষ্টের মধ্যে পড়েছেন৷ একই সঙ্গে শীত ও শীতজনিত রোগে মৃত্যুও বাড়ছে৷ যারা মারা যাচ্ছেন তাদের অধিকাংশই শিশু৷

সরকারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে কম্বল বিতরণ করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম৷ অন্যদিকে বেসরকারি উদ্যোগেও গরম কাপড় এবং অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ তেমন নয় বলে স্থানীয় পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে৷

দেশের রংপুর ও রাজশাহী বিভাগেই এই শীতে নিম্নবিত্ত মানুষ সবচেয়ে কষ্টে আছেন৷ পঞ্চগড়ের স্থানীয় সাংবাদিক আনিস প্রধান জানান, গরম কাপড়ের অভাবের পাশাপাশি নিম্নবিত্ত মানুষ চরম আর্থিক কষ্টে আছে৷ যারা দিনমজুর তারা কাজ পাচ্ছেন না৷ অন্যদিকে জেলা প্রশাসন শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে জেলা বা উপজেলা শহরের আশপাশে৷ প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ তা পাচ্ছেন না৷ অথচ তাদেরই প্রয়োজন বেশি৷

‘সরকারের বরাদ্দ ছিল এ পর্যন্ত এক লাখ টাকা’

This browser does not support the audio element.

পঞ্চগড় জেলায় মোট উপজেলা পাঁচটি৷ জনসংখ্যা প্রায় ১১ লাখ৷ আর পঞ্চগড় সদরেরই জনসংখ্যা দুই লাখের বেশি৷ জেলার এডিসি (সাধারণ) আব্দুল মান্নান জানান, তারা এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের মতো কম্বল বিতরণ করেছেন৷ এরমধ্যে বেসরকারিভাবে পাওয়া গেছে সাত থেকে আট হাজার৷ প্রধানত পঞ্চগড় সদরেই এসব কম্বল বিতরণ করা হয়েছে বলেও জানা যায় তার কথায়৷ তিনি জানান এর বাইরে আরো কিছু শীতবস্ত্র ও শিশু খাদ্য বিতরণের কথাও জানান তিনি৷ এজন্য সরকারের বরাদ্দ ছিল এ পর্যন্ত এক লাখ টাকা৷

পঞ্চগড়ে কত শীতবস্ত্র প্রয়োজন এবং যা পাওয়া গেছে তা পর্যাপ্ত কিনা জানতে চাইলে আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘কত প্রয়োজন তা আমরা বলতে পারছি না৷ তবে যা পাওয়া যাচ্ছে তা বিতরণ করছি৷'' দিনমজুরদের কাজের অভাব নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এরকম কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই৷ তবে আমরা খোঁজ নেব৷ এরকম লোক পাওয়া গেলে কাজের ব্যবস্থা করা হবে৷''

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের হিসেবে এ পর্যন্ত দেশের ৬৪ জেলায় প্রায় ৩২ লাখ কম্বল দেয়া হয়েছে বিতরণের জন্য৷ বিভিন্ন জেলায় কম্বল কিনে শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য দুই কোটি ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে৷ আর উত্তরের আট জেলায় ১৬ হাজার কার্টন শুকনো খাবার ও শিশু খাদ্য পাঠানো হয়েছে৷

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন৷ তিনি থাইল্যান্ড থেকে টেলিফোনে ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমাদের পর্যাপ্ত গরম কাপড় ও ত্রাণ সামগ্রী আছে৷ আমরা চাহিদামত বরাদ্দ দিচ্ছি৷ শুকনা খাবারের জন্য নগদ টাকাও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে৷ শুধু সরকার নয়, আওয়ামী লীগও কাজ করছে৷ সরকার ও দল মিলিয়ে আমরা শীতার্ত মানুষকে সহায়তা করছি৷''

‘আমরা চাহিদামত বরাদ্দ দিচ্ছি’

This browser does not support the audio element.

তিনি আরো বলেন, ‘‘উত্তরাঞ্চলে কাজের সংকট সম্পর্কে আমাদের কেউ জানায়নি৷ আমরা জেনে ব্যবস্থা নেব৷''

৬৪ জনের মৃত্যু

বাংলাদেশে এ পর্যন্ত শীত ও শীতজনিত রোগে মোট ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ আর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় চার লাখ মানুষ৷ তাদের অধিকাংশই শিশু৷

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী গত এক নভেম্বর পর্যন্ত শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে ২০ জন, ডায়রিয়ায় চার জন এবং শীতজনিত অন্যান্য রোগে মারা গেছেন ৩০ জন৷ এইসব রোগের মধ্যে আছে জন্ডিস, আমাশয়, জ্বর প্রভৃতি৷ তবে এককভাবে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি প্রায় দেড় লাখ৷ আর গত ২৪ ঘন্টায় শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরুরি কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে যারা মারা গেছেন তাদের ৮০ ভাগই শিশু৷ এরপর আছেন বয়স্করা৷

আবার শৈত্যপ্রবাহ

ঢাকায় মঙ্গলবার শীত একটু কমে এলেও রংপুর ও রাজশাহীর ১১ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ চলছে৷ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে আগামী সপ্তাহের শেষে আবার তীব্র শীত এবং শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে সারাদেশে৷

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগের বেশ কিছু অঞ্চলের উপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে৷ বুধবার তাপমাত্রা বাড়তে পারে৷ তবে আগামী সপ্তাহে সারাদেশে তাপমাত্রা আবার কমে যাবার আশঙ্কা আছে৷

মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায় সাত দশমিক দুই ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড৷ ঢাকায় মঙ্গলবার ১২ দশমিক সাত৷ সোমবার ছিল ১২ দশমিক এক ডিগ্রি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ