সংক্রমণ কমে আসায় লকডাউন তুলে নিয়ে চলাফেরা আর সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞাও শিথিল করেছিল জার্মানি৷ তবে গত কয়েক সপ্তাহে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ঘরে-বাইরে অনুষ্ঠান আয়োজনে নতুন করে শর্ত আরোপের পরিকল্পনা করছে সরকার৷
বিজ্ঞাপন
শীতকালে সংক্রমণ ঠেকাতে ইতোমধ্যে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে সরকার৷ সম্প্রতি দলের নেতাদের সাথে এক আলোচনায় চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সতর্ক করে বলেন যে, ক্রিসমাসের সময়ে দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ১৯ হাজার দু'শ পর্যন্ত হতে পারে৷
তাই জনসমাগমে আবার কড়াকড়ির কথাও ভাবা হচ্ছে৷
প্রস্তাবনায় বলা হয়, ঘরোয়া অনুষ্ঠানে ২৫ জনের বেশি এবং ঘরের বাইরের অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি লোক একত্রিত হতে পারবে না৷ তাছাড়া বার ও রেস্টুরেন্টে অ্যালকোহল বিক্রির সময়সীমাও বেঁধে দিতে চায় সরকার৷
বার্লিনে করোনার ঝুঁকি দূরে রেখে আলোর উৎসব
প্রতি বছরের মতো এবারও বার্লিনে শুরু হয়েছে ‘ফেস্টিভ্যাল অফ লাইটস’৷ করোনা সংকট এই উৎসবে যোগ করেছে কিছু ভিন্নতা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Zinken
ব্রান্ডেনবুর্গ গেট
১৫ বছর পেরিয়ে এ বছর বার্লিনের ‘ফেস্টিভ্যাল অফ লাইটস’ পা দিলো ১৬ বছরে৷ এই উৎসবের মূলে থাকে শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থান৷ এৱ মধ্যে অবশ্যই রয়েছে বিখ্যাত ব্রান্ডেনবুর্গ গেট৷ আলো দেখতে আসা মানুষের ভিড় বেড়ে গেলে কিছুক্ষণের জন্য আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়, যাতে ভিড় কম হয়৷
ছবি: picture-alliance/Xinhua News Agency/S. Yuqi
জাদুঘরের সমাহার যেখানে...
জার্মানির সবচেয়ে উঁচু স্থাপত্য বার্লিনের এই টিভি টাওয়ার৷ আলোর উৎসব থেকে বাদ পড়েনি এটিও৷ বেশ কিছু জাদুঘর রয়েছে শহরের ‘মিউজিয়াম আইল্যান্ড’ অঞ্চলে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সচেতনতা প্রকল্পের আওতায় এবার টিভি টাওয়ারসহ বেশ কিছু স্থাপত্যের গায়ে জ্বলবে কমলা আলো৷ এই আলো বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্তদের প্রতি সহমর্মিতার প্রতীক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Chr. Gateau
বার্লিন ক্যাথিড্রাল
মিউজিয়াম আইল্যান্ডের অদূরে বার্লিন ক্যাথিড্রাল৷ বেশ কিছুদিন ধরে সংস্কার কাজ চলছিল সেখানে৷ সেখানেও চলছে আলোর উৎসব৷
ছবি: picture-alliance/Xinhua News Agency/S. Yuqi
বেবেলপ্লাৎজ
ঐতিহ্যবাহী বেবেলপ্লাৎজে হাঁটলে মনে হবে যেন কোনো অসাধারণ শিল্পকর্মের মাঝখানে হেঁটে বেড়াচ্ছেন৷ এবারের উৎসবের ‘একসাথে জ্বলবো আমরা’ স্লোগানের সঙ্গে মিল রেখে সেজে উঠেছে বেবেলপ্লাৎজের হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়, স্টেট অপেরা ও বিখ্যাত হোটেল ডে রোম৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Chr. Gateau
অপেরা
জার্মানি-ইসরায়েল সম্পর্কের ৫৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ইসরায়েল দূতাবাসের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে আলোকিত করা হয়েছে বার্লিন স্টেট অপেরাকে৷
ছবি: picture-alliance/Xinhua News Agency/S. Yuqi
হোটেল ডে রোম
উনিশ শতকের শেষের দিকে তৈরি হওয়া এই বাড়িটি যাত্রা শুরু করে ড্রেসডেনার ব্যাংকের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসাবে৷ পরে ২০০৬ থেকে এটি অবশ্য হোটেল৷ এর মূল আকর্ষণ ছাদ থেকে পাওয়া বার্লিনের অসামান্য চিত্র, যা এই আলোর উৎসবের সময়ে পর্যটকদের নজর কাড়ছে৷
ছবি: picture-alliance/Xinhua News Agency/S. Yuqi
হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ
বেবেলপ্লাৎজের অন্যতম অংশ হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ ভবন৷ আঠারো শতাব্দীতে এই বাড়িটি তৈরির নির্দেশ দেন প্রাশিয়ান রাজা ফ্রেডেরিক৷ ১৯৬৯ সালে হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ ভবনের মর্যাদা পাবার আগ পর্যন্ত এটি ছিল পাঠাগার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Chr. Gateau
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বাদ যায়নি
জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভবনটিও সেজেছে উৎসবের আলোয়৷ সহনশীলতা ও সামাজিক মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে এবারের আলোর ডিজাইন বেছে নিয়েছেন চিত্রশিল্পী কার্স্টেন জান্ডের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Chr. Gateau
শার্লটেনবুর্গ প্রাসাদ
করোনা সংকটের মাঝে মানুষের ভিড় যাতে শহরের একটি অংশেই সীমিত না থাকে, তা নিশ্চিত করতে এই উৎসবকে শহরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ শহরের কেন্দ্র থেকে একটু দূরের শার্লটেনবুর্গ প্রাসাদ ও বের্গগ্রুয়েন জাদুঘরের আলোর সাজ সেই উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Zinken
পটসডামার প্লাৎজ
প্রতি বছরের মতো এবারও আলোর উৎসবের প্রাণকেন্দ্র বার্লিনের পটসডামের প্লাৎজ৷ এবারের আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে বিশাল এক ‘লাভ সাইন’, যা অস্ট্রেলিয়ান শিল্পী জারা পাসফিল্ডের সৃষ্টি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Zinken
10 ছবি1 | 10
প্রস্তাবিত এ শর্ত জার্মানির সব অঞ্চলের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে না৷ শুধুমাত্র যে এলাকায় সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি লক্ষে ৫০ জন পাওয়া যাবে, সে এলাকাতেই এ নির্দেশনা জারি থাকবে৷
দেশটিতে সম্প্রতি সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নতুন করে বাড়ছে৷ নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের হাম শহরে কিছুদিন আগে এক বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ৪০ জন শিশুসহ মোট একশ’ জন সংক্রমিত হয়৷
জনগণের চলাচলের বিষয়ে সঠিক তথ্য সংগ্রহের কথাও বলা হয়েছে প্রস্তাবনায়৷ বার কিংবা রেস্টুরেন্টগুলোকে অতিথিদের পুরো নাম ও ঠিকানা সঠিকভাবে সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে৷ তা না করলে ৫০ ইউরো জরিমানা গুণতে হবে তাদের৷
সরকারের এ প্রস্তাবনা রাজ্য সরকারের সাথে আলোচনার পর চূড়ান্ত হবে৷ জার্মানির ১৬টি রাজ্য আগে করোনা ভাইরাসের বিষয়ে আলাদা পদক্ষেপ নিয়েছিল৷
জার্মানিতে এখন পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ লোক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আর মারা গেছেন দশ হাজার৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ার পর প্রথম কয়েক সপ্তাহ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে৷ তবে রোগ নির্ণয়, দমন, প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় কমে আসে সংক্রমণ৷ তবে গত কয়েক সপ্তাহে নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধি ভাবনায় ফেলেছে সরকারকে৷