1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শুধুমাত্র নারীদের ভালোর জন্য...

ঈশা ভাটিয়া/এসবি২ নভেম্বর ২০১৪

মেয়েদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করা উচিত নয়, জিন্স বা স্কার্ট পরা উচিত নয়৷ আসলে তাদের ভালোর জন্যই নাকি এ সব বলা৷ ঈশা ভাটিয়া মনে করেন, ভারতে আইনের অভাবের কারণেই কিছু দল ভালোমন্দের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে৷

ছবি: Indranil Mukherjee/AFP/Getty Images

নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী পদের দায়িত্ব নিয়েই ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে মানুষের হৃদয় জয় করে নিলেন৷ ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেছিলেন, মেয়েদের বাইরে যেতে বাধা দেওয়ার বদলে বাবা-মায়েদের উচিত নিজেদের ছেলেদের উপর নজর রাখা৷ এমন মন্তব্যের পর অনেক করতালি পড়ে৷ সোজা ও কড়া কথা বলে তিনি শুধু ভারতীয় নয়, আন্তর্জাতিক মিডিয়ারও বাহবা কুড়িয়েছিলেন৷

কিন্তু তাঁর নাকের ডগায় হিন্দু মহাসভা যখন জিন্স ও মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে ধর্ষণ ও নারীদের উত্ত্যক্ত করার মতো প্রবণতা বন্ধ করার দাওয়াই বাতলে দিলো, তখন কিন্তু সেই একই মোদী ও তাঁর সরকার মুখে কুলুপ আঁটলেন৷ এমনকি সবে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সদ্য শপথ নিয়ে মনোহরলাল খাট্টারও নীরব থাকাই শ্রেয় মনে করলেন৷ অথচ হরিয়ানার যে খাপ পঞ্চায়েত বার বার নারীদের মর্যাদার পাঠ দেবার চেষ্টা করে থাকে, তারাও হিন্দু মহাসভার ধর্মপাল সিবাচের সঙ্গে একমত বলে মনে হলো না৷ অথচ সরকার নীরবই রইল৷

হরিয়ানা ব্যতিক্রম নয়৷ তথ্য জানার অধিকার আইন – আরটিআই অনুযায়ী পেশ করা এক প্রশ্নের জবাবে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের পুলিশ প্রধানের কণ্ঠেও শোনা গেল একই সুর৷ তাঁর মতেও ধর্ষণের কারণ মোবাইল ফোন ও নারীদের পোশাক৷ টিভি চ্যানেলগুলি বিষয়টি নিয়ে খুব সক্রিয় হয়ে পড়েছিল৷ যারা এমন মনোভাব পোষণ করে, তাদের আরও একবার ‘ভারতের তালেবান' বলার সুযোগ পেয়ে গেলেন নারী অধিকার রক্ষায় মিছিল করতে অভ্যস্ত রঞ্জনা কুমারী৷ কিন্তু এত সব কিছুর পরেও সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় প্রধানমন্ত্রী একটিও টুইট করার সময় পেলেন না৷ এই নীরবতাকে কি সমর্থন হিসেবে গণ্য করা যায়? নাকি সরকার নারীদের সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট আইন প্রণয়ন করতে ব্যর্থ৷

বজরং দল বা হিন্দু মহাসভার মতো সংগঠন ভারতীয় সংস্কৃতি ও মর্যাদার দোহাই দিয়ে এই প্রথম ফরমান জারি করেনি৷ বহু বছর ধরে ভ্যালেন্টাইন্স ডে বা ভালোবাসা দিবসের দিন তারা ভাঙচুর করে চলেছে৷ ক্লাব বা পার্কে ঢুকে প্রেমিক যুগলদের মারধোরও করেছে তারা৷ কিছুদিন আগেই দক্ষিণ ভারতে বিজেপি দলের কয়েকজন কর্মকর্তা এক ক্যাফের মধ্যে মারধোর করেছিলেন৷ এর বদলা নিতে কোচি শহরে তরুণ-তরুণীরা এক ‘কিস ডে' বা চুম্বন দিবস পালন করার পরিকল্পনা করেছেন৷ তাদের বক্তব্য, ঘৃণার জবাব ভালোবাসা দিয়েই দেওয়া উচিত৷

ঈশা ভাটিয়াছবি: DW/P. Henriksen

এখন প্রশ্ন হলো, এমন পদক্ষেপ নিলে ‘মরাল পুলিশ'-এর ভূমিকায় এই গোষ্ঠীগুলি চুপ করে যাবে? নাকি তাদের আরও জঙ্গি রূপ দেখা যাবে? জিন্সের উপর নিষেধাজ্ঞার জবাব স্কার্ট পরে দেওয়া যাবে না৷ কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক – তা নিয়ে ব্যক্তিগত স্তরে লড়াই করা যেতে পারে না৷ টেলিভিশন চ্যানেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চেঁচামেচি করেও কোনো ফল পাওয়া যাবে না৷ নারীদের সুরক্ষা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব৷ এর জন্য চাই কড়া আইন৷ প্রধানমন্ত্রী অ্যামেরিকায় দেওয়া তাঁর ভাষণে বলেছেন বটে, যে কথায় কথায় আইন তৈরি করতে তিনি পছন্দ করছেন না৷ কিন্তু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নারীদের সুরক্ষা ও তাঁদের ভালোর জন্য এটুকু তো তাঁকে করতেই হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ