1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদেশেও সাহিত্য শাসনে হুমায়ূন

অমৃতা পারভেজ ফ্রাংকফুর্ট বইমেলা
১৬ অক্টোবর ২০১৭

ফ্রাংকফুর্ট বইমেলায় বাংলাদেশের বেশ কয়েরকটি বইয়ের সত্ত্ব বিক্রি হয়েছে এবার৷ হুমায়ূন আহমেদ, সেলিনা হোসেন এবং সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের লেখা বইয়ের সত্ত্ব বিক্রি হয়েছে৷ বিশ্বের সাত হাজারের বেশি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল৷

ছবি: DW/Amrita Parvez

ফ্রাংকফুর্ট বইমেলা বিশ্বের বৃহত্তম বইমেলা, যেটাকে বইয়ের বাণিজ্য মেলা বলা যেতে পারে৷ এবারের মেলা শুরু হয়েছিল ১১ই অক্টোবর, চলেছে ১৫ই অক্টোবর পর্যন্ত৷ এই মেলায় কোনো বই বিক্রি হয় না৷ বিক্রি হয় বই বা প্রকাশনার সত্ত্ব৷ তাই মেলাটি মূলত বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা, লেখক আর এজেন্টের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে৷ এ কারণে প্রথম তিনদিন কোনো দর্শনার্থীকে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না৷ তবে পরের দু'দিন সবার জন্য উন্মুক্ত৷ তবে এবারের বইমেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা আগের মেলাগুলোর তুলনায় অনেক বেশি ছিল বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে৷

ফ্রাংকফুর্ট বইমেলায় এবার বাংলাদেশের বেশ কিছু প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিয়েছিলছবি: DW/Amrita Parvez

ফ্রাংকফুর্ট বইমেলায় এবার বাংলাদেশের বেশ কিছু প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিয়েছিল৷ বাংলাদেশের জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রও অংশ নিয়েছিল এতে৷ বাংলাদেশের প্রকাশনা স্টলগুলো ঘুরে দেখা গেলো বেশিরভাগ বই প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা৷ আর আছে রাজনীতি এবং লোক সাহিত্য সংস্কৃতির উপর বেশ কিছু অনুবাদ৷ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর উপরও বিভিন্ন বই রয়েছে৷

প্রথমেই কথা হলো জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের পরিচালক নজরুল ইসলামের সঙ্গে৷ বাংলাদেশের হুমায়ূন আহমেদের পর তাঁর মত জনপ্রিয় কোনো লেখক এসেছেন কি? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, ‘‘আমাদের দেশের সৃজনশীল লেখা শেখানোর কোনো প্রতিষ্ঠান নেই৷ ভালো লেখক পেতে হলে তাদের গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে৷ সেটা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমেও হতে পারে৷ সরকার চাইলে এমন উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা ভালো লেখক পেতে পারি৷''

বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত জীবনী বহু ভাষায় অনুদিত হয়েছেছবি: DW/Amrita Parvez

আমাদের বই আন্তর্জাতিকভাবে বিক্রির জন্য যে ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড বুক নাম্বার থাকা দরকার, সেটা কি আমাদের প্রত্যেকট বইয়ে দেয়া হয়? এ প্রশ্নের জবাবে জানালেন, এ দায়িত্ব জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র পালন করে থাকে এবং এখন প্রত্যেকটি বইয়ে এই নাম্বার দেখতে পাওয়া যায়৷''

জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের লক্ষ্য প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম বললেন, ‘‘সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আমরা কাজ করছি৷ লন্ডন, কলকাতা বইমেলার অংশগ্রহণ করছি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায়৷ সরকার একটি মুদ্রন পল্লী গড়ে তুলছেন৷ বেসরকারি পাঠাগারগুলোর বই বিতরণও করে থাকি আমরা৷ পাঠকদের উৎসাহ দেয়ার জন্য ওয়েসবসাইট, ফেসবুকের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করি৷ প্রতিবছর বই অনুদান দেয়া প্রত্যন্ত লাইব্রেরিগুলোতে৷''

পাঠক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কোন উদ্যোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘পাঠক সংখ্যা বাড়ছে৷ প্রতি বছর অনেক নতুন বই বের হচ্ছে, বিক্রিও বাড়ছে৷ ভবিষ্যতে পাঠক গড়ে তোলার জন্য সরকারের বইপড়া প্রকল্প আছে৷ সারাদেশে এখন প্রায় ৮০ লাখ ছেলে-মেয়ে এই প্রকল্পের আওতায় বই পড়েছে, বেশি বই পড়লে তাদের পুরস্কৃত করা হয়৷''

আগামী প্রকাশনীর স্টলছবি: DW/Amrita Parvez

বাংলাদেশের সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থার সভাপতি এবং অন্য প্রকাশের কর্ণধার মাজহারুল ইসলাম জানালেন, এই নিয়ে তিনবার তাঁরা ফ্রাংকফুর্ট বইমেলায় অংশ নিয়েছেন৷ এখানে বইয়ের সত্ত্ব বিক্রির প্রক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আগামী একবছর সারা পৃথিবীতে কোন দেশে কোন বই কত কপি ছাপা হবে, কত কপি বইয়ের সত্ত্ব বিক্রি হবে, প্রকাশনা সত্ত্ব বিক্রি হবে – এই মেলায় মূলত এ সবই হয়৷''

তিনি আরও জানালেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি বাংলাদেশের যে গুরুত্বপূর্ণ বইগুলো, যেগুলো বাংলা ভাষায় প্রকাশিত, সেই বইগুলোকে বিভিন্ন ভাষায় যদি সত্ত্ব বিক্রি করতে পারি, তাহলে আমাদের বাংলা সাহিত্য, আমাদের হাজার বছরের সমৃদ্ধ ভাষা, আমাদের সংস্কৃতিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে পারব, এ উদ্দেশ্যেই আমাদের এখানে আসা৷''

তিনি জানালেন, গত তিন বছরে বেশ কয়েকটি বইয়ের সত্ত্ব বিক্রি করেছেন৷ এ বছর কয়েকটি বইয়ের রাইটস কিনেছেন৷ সেলিনা হোসেনের ‘রাসেলের জন্য অপেক্ষা বা ওয়েটিং ফর রাসেল' এই বইয়ের সত্ত্ব বিক্রি হয়েছে৷ বিভিন্ন ভাষায় এটা অনুবাদ হবে৷ এছাড়া হুমায়ূন আহমেদের বেশ কয়েকটি বইয়ের সত্ত্ব বিক্রির ব্যাপারে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি এবং নিশ্চিত ছিলেন ঐ বইগুলোর সত্ত্ব বিক্রি হবে৷ একটি জাপানিজ রাইটস সেলিং এজেন্সির সঙ্গে তাদের কথা হয়েছিল৷ হুমায়ূন আহমেদের লেখা মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জনননীর গল্প, মিসির আলী সিরিজ, যার প্রতিটি গল্প বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশ করার ব্যাপারে কথা চূড়ান্ত হয়েছিল তাদের৷

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বললেন, ‘‘বাংলাদেশ অন্যান্য দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও সংস্কৃতিতে এগিয়ে৷ অনেক বই নিয়ে এসেছি যেগুলো বিদেশিদের আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা দেবে৷ '' বিদেশিদের কেমন আগ্রহ দেখছেন এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘‘তাঁদের প্রচুর আগ্রহ, বিশেষ করে আমাদের সংস্কৃতি, রাজনীতি নিয়ে৷ আমাদের বই খুঁটিয়ে দেখছেন৷ জানতে চাচ্ছেন কোথায় পাবেন বই৷ সাম্প্রতিককালে আমাদের অর্থনীতি, রাজনীতি নিয়ে অনেক বই, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত জীবনী বহু ভাষায় অনুদিত হয়েছে৷''

আনন্দ পাবলিশার্সের স্টলছবি: DW/Amrita Parvez

বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের আনন্দ পাবলিশার্স একটি স্টল ছিল সেখানে৷ তারা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সত্যজিৎ রায়ের বইগুলো মূলত এনেছিল এবার৷ পাশাপাশি ফেলুদা, ব্যোমকেশ বক্সির কমিকস নিয়ে উপস্থিত হয়েছিল তারা৷ কমিক্সের বইগুলো শিশুদের বেশ আকৃষ্ট করেছে৷

এই বইমেলা নিয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ