1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আবারো এক অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট খুন

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৭ এপ্রিল ২০১৬

বাংলাদেশে আরো একজন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টকে হত্যা করা হয়েছে৷ নিহত ‘ব্লগার’ নাজিমুদ্দিন সামাদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ছিলেন৷ বুধবার রাতে পুরনো ঢাকায় তাঁকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়৷

ব্লগার হত্যা
ছবি: DW

ঢাকার সূত্রাপুর থানার পুলিশ জানায়, ‘‘লক্ষ্মীবাজারের একটি মেসে থাকতেন সামাদ৷ বুধবার রাতে তিন বন্ধুকে নিয়ে পুরনো ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের উদ্দেশ্যে বের হলে, ঋষিকেশ দাশ লেনে অজ্ঞাত যুবকরা তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে৷ শুধু তাই নয়, খুব কাছ থেকে দুই রাউন্ড গুলিও করে তারা৷ এরপর হাসপাতালে নেয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়৷ সামাদের সঙ্গে থাকা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাউথ ইস্টের শিক্ষার্থী নাজিবের ওপরও আক্রমণ করে দুর্বৃত্তরা৷ তবে সৌভাগ্যক্রমে নাজিব বেঁচে যান৷''

নাজিমুদ্দিন সামাদ নিহত হওয়ার আগে সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন৷ সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘সরকার, এবার একটু নড়েচড়ে বসো বাবা৷ দেশের যা অবস্থা, আইন-শৃঙ্খলার যা অবনতি, তাতে গদিতে বেশি দিন থাকা সম্ভব হবে না৷ জনরোষ বলে একটা কথা আছে৷ এটার চূড়ান্ত পরিণতি দেখতে না চাইলে এক্ষুনি কঠোর পদক্ষেপ নেয়া দরকার সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে৷ নতুবা দিন ফুরিয়ে আসবে দ্রুত৷'

ইমরান এইচ সরকার

This browser does not support the audio element.

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার এ ঘটনার পর ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নাজিমুদ্দিন সামাদ যে শুধু মৌলবাদের বিরুদ্ধেই লিখতেন, তা নয়৷ তিনি অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ করতেন৷ তনু হত্যার বিচারের দাবিতেও তিনি ছিলেন সোচ্চার৷ এছাড়া তিনি নানা অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত পোস্ট দিতেন তাঁর ফেসবুক পাতায়৷''

ডা. সরকার বলেন, ‘‘আমরা যখন বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা লুটের প্রতিবাদ, তনু হত্যার বিচারের দাবি এবং বাঁশখালিতে পাঁচজনকে হত্যার প্রতিবাদে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছি, তখন আবার আরেকজন ব্লগারকে হত্যা করা হলো৷ তাই এখন আমার মনে হচ্ছে যে, মানুষের দৃষ্টি ভিন্নখাতে নেয়ার জন্যই আবারো ব্লগার হত্যা করা হলো৷''

সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তপন কুমার সাহা জানান, ‘‘মোটর সাইকেলে ৩-৪ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি এসে সামাদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং মাথায় গুলি করে হত্যা করে৷ ঘটনাস্থল থেকে পিস্তলের গুলির এক রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে৷ তবে এ ঘটনায় এখনও কাউকে জড়িত সন্দেহে শনাক্ত কিংবা আটক করা যায়নি৷''

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ডক্টর নূর মোহাম্মদ জানান, ‘‘নাজিমুদ্দিন সামাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন কোর্সের এলএলএম-এর ছাত্র ছিলেন৷ তাঁর গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজারে৷ তবে তাঁর পরিবারের সবাই লন্ডন প্রবাসী৷''

হত্যাকাণ্ডের কয়েকঘণ্টা পর কিছু ফেসবুক পোস্টে নাজিমুদ্দিন সামাদকে ‘নাস্তিক' বলে উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে৷

এদিকে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যলায়ের ছাত্ররা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে৷ দাবি জানিয়েছে হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করার জন্য৷ এছাড়া বিকেলে শাহবাগে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে গণজাগরণ মঞ্চ৷

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে একের পর এক ব্লগার, মুক্তমনা, প্রকাশক এবং অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা হত্যার শিকার হলেও অপরাধীরা আটক হচ্ছে না৷ ডা. ইমরান এইচ সরকারের কথায়, ‘‘বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ এখানে হত্যা, ধর্ষণ কিছুরই বিচার পাওয়া যায় না৷''

ওদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সামাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি৷ পুলিশ জানায়, ‘‘আমরা তাঁর নিকটাত্মীয়দের অপেক্ষায় আছি৷''

‘আমি কোনো ধর্মে বিশ্বাসী নই’ – এমনটাই নিজের ফেসবুক পাতায় লিখেছিলেন সামাদ৷ এই কি তাঁর অপরাধ ছিল? এর জন্যই কি তিনি খুন হলেন? জানান আপনার মতামত, নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ