1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘শুনেছি আমার বিরুদ্ধে আরো মামলা হবে'

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৮ জুন ২০১৭

সাংবাদিক আফসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় একটি মামলা হওয়া পর তিনি আরো মামলার অশঙ্কা করছেন৷ তিনি মনে করছেন, কোনো ক্ষোভ থেকে মামলা করা হয়েছে৷

ছবি: bdnews24.com

আর মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেছেন, ‘‘এই মামলা মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ৷''

বুধবার সাংবাদিক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আফসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে গুলশান থানায় মামলা করেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী৷ মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, আফসান চৌধুরী সাবেক সেনা কর্মকর্তা মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও তাঁর ছেলেকে নিয়ে ফেসবুকে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন৷

এদিকে ৫ জুন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম জুলফিকার আলী জুনু ফেসবুকে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে মন্তব্য করার অভিযোগ তুলে আফসান চৌধুরীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার চেয়ে স্বরাষ্ট্রসচিব ও পুলিশ প্রধানকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন৷ তবে ওই নোটিশের কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি পুলিশ৷

Afsan Chowdhury - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

আফসান চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এক মাস আগে আমি এক ফেসবুক পোস্টে বনানীতে দুই তরুণী ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনায় পিকাসো হোটেলের মালিকের ছেলে জড়িত বলে লিখেছিলাম৷ তখন ফেসবুকসহ সংবাদ মাধ্যমে খবর বের হয় পিকাসো হোটেলের মালিক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী৷ আমি সেই তথ্যের ভিত্তিতেই মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর ছেলের কথা লিখেছিলাম৷ তবে পরে জানা যায়, পিকাসো হোটেলের একাধিক মালিকের একজন তিনি৷ এবং ধর্ষণের সঙ্গে যে জড়িত সে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে নয়৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমি আমার পোস্টে এ বিষয়গুলো পরে উল্লেখ করেছি৷ তাঁর এবং তাঁর মেয়ের বক্তব্য দিয়েছি৷ তারপরও কেন মামলা হলো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না৷ তবে এখন খবর পাচ্ছি, আমার বিরুদ্ধে আরো মামলা হবে৷ ক্ষোভ থেকে এসব মামলা হচ্ছে বলে আমার মনে হয়৷''

সিনিয়র এই সাংবাদিক ও শিক্ষক আরো বলেন ,‘ এই আইনটি যে ভালো না তা তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুও বলেছেন৷ এতে বাক-স্বাধীনতা রুদ্ধ হয়৷ আর রুদ্ধ হলে কী ক্ষতি হয়, তা তারাই বলতে পারবেন৷''

নূর খান

This browser does not support the audio element.

ফেসবুক পোস্টটি যে সঠিক তথ্যভিত্তিক ছিল না– এ বিষয়টি তুলে ধরা হলে আফসান চৌধুরী বলেন, ‘‘আমি একা নই অনেকেই তখন এই কথা বলেছেন৷ পোস্ট দিয়েছেন৷ আমি ফেসবুক থেকেই তথ্য পেয়েছি৷ আর আমার উদ্দেশ্য ছিল ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতরা যতই ক্ষমতাবান হোক না কেন, যেন রেহাই না পায়৷ পরে আমার পোস্টে  সংশোধিত তথ্যও দিয়েছি৷ এক মাস পরে কেন এই মামলা?''

অন্যদিকে প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে দেয়া পোস্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি তো ওই পোস্টে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে কোনো কটুক্তি করিনি৷ আমি তাঁর প্রশংসা করেছি৷ সুপ্রিমকোর্টের সামনে থেকে ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলায় আমি তার প্রশংসা করেছি৷''

তাঁর মতে, ‘‘একজন আইনজীবী সক্রিয় আছে৷ তিনি আমাকে গ্রেপ্তারে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন৷ আবার তিনিই আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদীর আইনজীবী৷''

আফসান চৌধুরী বলেন, ‘‘আমি আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি৷ শুক্র , শনি দু'দিন ছুটি, তাই আদালতে যেতে পারছি না৷ দেশের আইনে যদি এই মামলা গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে আমার কী বলার আছে৷ পুলিশ যদি গ্রেপ্তার করতে চায়, করবে৷''

এ নিয়ে মানবাধিকার কর্মী এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সরকার তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার কথা বললেও এই আইনটির অপব্যবহার অব্যাহত আছে৷ কেউ যদি সাংবাদিক আফসান চৌধুরীর ফেসবুক পোস্টে ক্ষতিগ্রস্ত বা ক্ষুব্ধ হন, তাহলে প্রতিকারের অনেক পথ আছে৷ তাই বলে এই বিতর্কিত আইনে মামলা করতে হবে? এটা মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ৷ এর ফলে মানুষ আর কথা বলার সাহস পাবে না৷''

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘কারো পোস্টের কথা যদি তথ্যভিত্তিক না-ও হয়, তা হলেও এই আইনে মামলা করা গ্রহণযোগ্য নয়৷ প্রতিকারের আরো অনেক পথ আছে৷ মামলা মোকদ্দমা ক্ষোভ প্রশমনের একমাত্র পথ নয়৷''

নূর খান বলেন, ‘‘আফসান চৌধুরী তাঁর পোস্ট সংশোধন করেছিলেন৷ যাঁরা ক্ষতিগ্রস্থ দাবিদার, তাঁদের কথাও পোস্টে প্রকাশ করেছেন৷ তারপরও এই মামলা হওয়ার মানে হলো কোনো দুরভিসন্ধি আছে৷''

এদিকে আদালত এই মামলায় গুলশান থানাকে আগামী ২৩ জুলই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার আদেশ দিয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ