অবশেষে জোটের দিকে একধাপ এগলো জার্মানির সামাজিক গণতন্ত্রী দল এসপিডি৷ শুক্রবার চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন এসপিডি প্রতিনিধিরা৷ তবে শেষ পর্যন্ত জোট হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় এখনো কাটেনি৷
বিজ্ঞাপন
অবশেষে আলোচনায় বসল জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের কনজারভেটিভ দল খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী ইউনিয়ন সিডিইউ এবং জার্মানির মধ্যবামপন্থি দল সামাজিক গণতন্ত্রীরা৷ দীর্ঘ টালবাহানার পর দুই দল আলোচনায় বসতে রাজি হল৷ তবে এই আলোচনা যে শেষপর্যন্ত মহাজোটের দিকে এগোবে এবং জার্মানিতে সরকার গঠন করবে, এখনই তা হলফ করে বলা যাচ্ছে না৷ বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, জল গড়িয়েছে মাত্র৷ তবে তা কোন পথে যাবে, এখনই বলা মুশকিল৷
কী চায় জার্মানির এসপিডি দল?
ছোট শরিক হয়েও জার্মানির বিদায়ী মহাজোট সরকারে যথেষ্ট সাফল্যের সঙ্গে অনেক দলীয় সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পেরেছে এসপিডি দল৷ তবে ভোটাররা তার স্বীকৃতি দেয়নি৷ আবার মহাজোটে যোগ দিলে অনেকগুলি শর্ত চাপাতে চায় এসপিডি৷
ছবি: picture-alliance/U. Baumgarten
‘আরও ইউরোপ’
বর্তমান সংকটগুলির সমাধানের লক্ষ্যে ব্রেক্সিটের পথে না গিয়ে ইইউ-কে আরও শক্তিশালী করে তুলতে চায় জার্মানির সামাজিক গণতন্ত্রী দল৷ ইউরোপীয় স্তরে ন্যূনতম মজুরি, তরুণদের বেকারত্বের মোকাবিলা, কোম্পানিগুলির উপর অভিন্ন কর চাপানো এবং ‘কর ফাঁকির মরুদ্যান’ বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন দলের নেতা মার্টিন শুলৎস৷ ২০২৫ সালের মধ্যে ‘ইউরোপীয় যুক্তরাষ্ট্র’ স্থাপনের স্বপ্ন দেখছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই প্রাক্তন স্পিকার৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. Florin
শ্রমিকদের আরও অধিকার
জার্মানিতে শ্রমিক-কর্মীদের অধিকার বাড়াতে চিরকাল উদ্যোগ নিয়ে এসেছে সামাজিক গণতন্ত্রী দল৷ তবে সাম্প্রতিক কিছু সংস্কারের ফলে সেই ভাবমূর্তি বেশ ক্ষুণ্ণ হয়েছে৷ এবার বেতন ও মজুরি কাঠামো কার্যকর করা ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষার দাবি জানাচ্ছে এসপিডি৷ তাছাড়া যারা পার্ট টাইম বা খন্ডকালীন কাজ করছে, তাদের ফুল টাইম বা পূর্ণ কাজের কাঠামোয় ফিরে যাবার অধিকারের স্বীকৃতি চায় এসপিডি৷
ছবি: picture-alliance/Ulrich Baumgarten
অবসর ভাতার আমূল পরিবর্তন
সমাজে সংহতির ভিত্তিতে জার্মানির অবসর ভাতা কাঠামোর আমূল পরিবর্তন চায় সামাজিক গণতন্ত্রী দল৷ বিশেষ করে সারা জীবন কাজ করেও শেষ বয়সে দারিদ্র্যের ঝুঁকি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চায় এসপিডি৷ অতএব সংহতির স্বার্থে অবসর ভাতার বিচ্ছিন্ন সব কাঠামোগুলিকে একত্র করার চেষ্টা চালাতে চায় তারা৷ অত্যন্ত জটিল এই ব্যবস্থার রাতারাতি পরিবর্তন যে কঠিন হবে, সে বিষয়ে অবশ্য তেমন সংশয় নেই৷
ছবি: picture-alliance/S. Gollnow
বিনামূল্যে শিক্ষা
জার্মানির শিক্ষাব্যবস্থার একটা বড় অংশই সরকারি ভরতুকিতে চলে৷ তবে অবকাঠামোর কিছু দুর্বলতার ফলে সমস্যা রয়েছে৷ বিশেষ করে শিক্ষা রাজ্য সরকারগুলির এক্তিয়ারে থাকায় এ ক্ষেত্রে সার্বিক উদ্যোগ নেওয়া কঠিন৷ এসপিডি দলের দাবি, সারা দেশে বিনামূল্যে কিন্ডারগার্টেন ও সেখানে সারাদিন বাচ্চা রাখার সুযোগকে অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে৷ এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির আধুনিকীকরণসহ শিক্ষা ক্ষেত্রে আরও বিনিয়োগ চাই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Gambarini
স্বাস্থ্যবিমা ব্যবস্থার সংস্কার
বর্তমানে জার্মানিতে সার্বজনীন ও বেসরকারি স্বাস্থ্যবিমা চালু রয়েছে৷ ডাক্তারখানা ও হাসপাতালে বেসরকারি স্বাস্থ্য বিমাকারীদের বিশেষ খাতির করা হয়, অন্যদের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়৷ এই বিভাজন ঘুঁচিয়ে সবাইকে নিয়ে এক ‘নাগরিক স্বাস্থবিমা’ চালু করতে চায় সামাজিক গণতন্ত্রীরা৷ তবে এই প্রস্তাবের জোরালো বিরোধিতা করছে বেশ কিছু মহল৷ তাদের আশঙ্কা, এর ফলে স্বাস্থ্য অবকাঠামোর মানের ক্ষতি হবে৷
ছবি: Colourbox
শরণার্থী নীতি
২০১৫ সালে বিশাল সংখ্যক শরণার্থীর ঢলের কারণে জার্মানির রাজনীতি জগত উত্তাল হয়ে উঠেছে৷ চ্যান্সেলর ম্যার্কেল তাঁর উদার মনোভাবের জন্য প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন৷ এসপিডি গোটা অভিবাসন ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের দাবি জানাচ্ছে, যাতে আইনি পথে বিদেশিরা জার্মানিতে এসে কাজের সুযোগ পায়৷ তবে রাজনৈতিক আশ্রয়ের অধিকার সঙ্কুচিত করার বিরোধী এই দল৷ আশ্রয়ের ক্ষেত্রে কোনো ঊর্ধসীমাও মানতে নারাজ তারা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Jensen
জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা
সন্ত্রাসী হামলা ও অপরাধ দমন করতে প্রায়ই হিমশিম খায় জার্মানির পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ৷ ফলে মানুষের মনে অসন্তোষ দেখা যায়৷ এই সমস্যার মোকাবিলা করতে এসপিডি দল আরও পুলিশকর্মী নিয়োগের দাবি জানাচ্ছে৷ সেইসঙ্গে অপরাধ প্রতিরোধ করার জোরালো উদ্যোগ চায় তারা৷ তাদের মতে, দাগী অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে গোটা ব্যবস্থায় আরও দক্ষতার ছাপ আনতে হবে৷
ছবি: Picture-Alliance/dpa/B. Marks
পরিবেশ সংরক্ষণ
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে এককালে জার্মানি পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছে৷ বিকল্প জ্বালানির বিকাশের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাফল্যও এসেছে৷ কিন্তু কয়লার লাগাতার ব্যবহার, ডিজেল গাড়ি নিয়ে বিতর্কের মতো কারণে এ ক্ষেত্রে জার্মানির ভাবমূর্তি বেশ ধাক্কা খাচ্ছে৷ এমন প্রেক্ষাপটে এসপিডি বিকল্প জ্বালানির আরও ব্যবহারের উপর জোর দিতে চায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নারী-পুরুষের সমানাধিকার
শিল্পোন্নত দেশগুলিতেও কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বেতন বৈষম্য বাস্তব সমস্যা৷ এই তালিকায় জার্মানির অবস্থান ভালো নয়৷ একাধিক সরকার এই বৈষম্য দূর করতে শিল্প-বাণিজ্য জগতের সঙ্গে বোঝাপড়ার চেষ্টা করেও বিফল হয়েছে৷ এবার এসপিডি দল চায়, আলাপ-আলোচনার বদলে আইন করে তাদের এই বৈষম্য দূর করতে বাধ্য করা হোক৷
ছবি: Colourbox
9 ছবি1 | 9
ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে৷ ওই মাসেই জার্মানিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ কিন্তু কোনো দলই সরকার বানানোর মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি৷ গতবারের চেয়ে অনেক কম ভোট পায় ম্যার্কেলের দল৷ খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দলের আরেক জোট সদস্য বাভেরিয়ার খ্রিষ্টীয় সমাজতন্ত্রী বা সিএসইউ দলের ভোট কমেছে চোখে পড়ার মতো৷ চোখে পড়ার মতো ভোট কমেছে মধ্যবামপন্থিদেরও৷ উলটোদিকে, দক্ষিণপন্থি দল জার্মানির জন্য বিকল্প বা এএফডি ভোট শতাংশ অনেকটাই বাড়িয়ে নেয়৷ কিন্তু কোনো দলই সরকার গঠন করার মতো গরিষ্ঠতা পায়নি৷
২০০৫ থেকে ২০০৯ এবং ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ম্যার্কেলের দলের সঙ্গে জোট করে সরকার গঠনে সাহায্য করেছিল এসপিডি৷ কিন্তু সেপ্টেম্বরের নির্বাচনের পর এসপিডি প্রাথমিক ভাবে জানিয়ে দেয়, অন্যবারের মতো এবারও ম্যার্কেলের পাশে থাকবে না তারা৷ ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে ম্যার্কেলও সরকার গঠন করতে পারেননি৷ প্রাথমিক ভাবে অচলাবস্থা কাটার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছিল না৷ মাঝে কেটে গিয়েছে, প্রায় চার মাস৷ এখনো পর্যন্ত জার্মানিতে সরকার গঠন করা যায়নি৷ জার্মান ইতিহাসে যা ব্যতিক্রমী ঘটনা৷ অন্যদিকে, ম্যার্কেলের সঙ্গে আলোচনায় বসা উচিত হবে কি না, তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে এসপিডি৷ গত রবিবার বন শহরে তাদের বিশাল সভা হয়৷ ভোটাভুটির মাধ্যমে সেখানে শেষপর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয় যে, অচলাবস্থা কাটাতে ম্যার্কেলের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে৷ যদিও এসপিডি-র বামমনস্ক একটি অংশ এই ভাবনার সঙ্গে সহমত হতে পারেনি৷ তাদের দাবি, এর ফলে আগামী দিনে এসপিডি-র ভোট আরো কমবে৷ মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে দলটি৷
তবে অধিকাংশের মতকে সম্মান জানিয়ে শুক্রবার ম্যার্কেলের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে বসেছেন এসপিডি-র প্রতিনিধিরা৷ অন্যদিকে ম্যার্কেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এসপিডি-র সঙ্গে আলোচনা ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করা হবে৷ তারপরেই সরকার গঠনের দিকে এগোবে তাঁর দল৷ উল্লেখ্য ২০১৩ সালে জোট গঠনের জন্য এসপিডি-র সঙ্গে প্রায় তিন সপ্তাহ আলোচনা চলেছিল ম্যার্কেলের৷
যেভাবে প্রতিদ্বন্দ্বীদের পরাস্ত করেন ম্যার্কেল
এমনকি ২০১৭ সালের নির্বাচনের আগেও তাঁর পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো রাজনীতিবিদদের নিষ্ক্রিয় বা পাশে সরিয়ে দিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ নিজের দল বা বিরোধী দলের অনেক নেতাকেই নানাভাবে ঠেকিয়েছেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/ANP/R. De Waal
‘কোল গার্ল’ যখন গুরুকে ছাড়লেন
দীর্ঘদিন চ্যান্সেলর পদে থাকে হেলমুট কোল ম্যার্কেলকে মন্ত্রিসভায় প্রথম সুযোগ দিয়েছেন এবং তাঁর উত্থানে সহায়তা করেছিলেন৷ কিন্তু ১৯৯৮ সালে চ্যান্সেলর পদ হারানোর পর ম্যার্কেল এবং সিডিইউ তাঁর বিপক্ষে চলে যায়৷ কোল কিছু সূত্র থেকে নগদ অর্থ সাহায্য নিয়েছিলেন৷ কিন্তু সে সব সূত্রের বিস্তারিত তিনি জানাননি যা দলের জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেছিলেন সেসময় সিডিইউ’র সাধারণ সম্পাদক আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Altwein
গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার – রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি
২০০৫ সালের নির্বাচনে এসপিডি’র চ্যান্সেলর শ্র্যোডারকে পরাস্ত করেন ম্যার্কেল৷ তবে এই পরাজয়ে শ্র্যোডারের নিজের দাম্ভিকতাও কিছুটা ভূমিকা রেখেছিল৷ সেই নির্বাচনে খুব অল্প ব্যবধানে সিডিইউ’র কাছে হেরে যায় এসপিডি৷ যদিও নির্বাচনের আগে টিভি বিতর্কে তিনি দাবি করেছিলেন, যে জার্মানরা চায় তিনি ক্ষমতায় থাকুন৷ কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি এবং তিনি রাজনীতি থেকে বিদায় নেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার - দীর্ঘদিনের সঙ্গী
শুরুতে ম্যার্কেলের অধীনে চারবছর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার৷ এরপর ২০০৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করেন সামাজিক গণতন্ত্রীদের এই রাজনীতিবিদ৷ কিন্তু সেই নির্বাচনে সুবিধা করতে পারেনি স্টাইনমায়ারের দল৷ পরবর্তীতে ২০১৩ সালে আবারো ম্যার্কেলের অধীনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন স্টাইনমায়ার৷ আর চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে তিনি জার্মানির প্রেসিডেন্ট৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Kembowski
গ্যুন্টার ও্যটিঙার - পথের কাঁটা দূর হলো
ম্যার্কেল যে শুধু তাঁর সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেন এমন নয়৷ বরং নিজের দলে থাকা সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের লোভনীয় অন্য কোন পদেও পাঠিয়ে দেন৷ তাঁর সহকর্মী বাডেন-ভ্যুর্টেমব্যার্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গ্যুন্টার ও্যটিঙারকে ২০১০ সালে তিনি ইউরোপীয় কমিশনে বড় পদে পাঠিয়ে দেন৷ অথচ ও্যটিঙারের সেই পদ পাওয়ার মতো কোনো অভিজ্ঞতাই ছিল না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Seeger
রোনাল্ড কখ - বাতিলের তালিকায় ফেলে দেয়া
দুই কারণে রোনাল্ড কখ পরিচিত৷ প্রথমত, তিনি দলাই লামার বন্ধু৷ দ্বিতীয়ত, সরকারের দ্বৈত নাগরিকত্ব চালুর পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কয়েক মিলিয়ন স্বাক্ষর সংগ্রহের জন্য৷ হেসে রাজ্যের এই রাজ্য প্রধান কখনো ম্যার্কেলের উত্থানে বাধা না হলেও হঠাৎ করেই মনে করেছিলেন তাঁকে বার্লিনে বড় পদের জন্য ডাকা হবে৷ কিন্তু ম্যার্কেলকে তাঁকে সেরকম কোন সুযোগ দেননি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ - একজন দুর্ভাগা রাষ্ট্রপতি
ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ম্যার্কেলের প্রথম পছন্দ ছিলেন না৷ কিন্তু ২০১০ সালে হর্স্ট ক্যোলার পদত্যাগ করার পর সিডিইউ বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় ভুল্ফ সুযোগ পেয়ে যান৷ ভুল্ফ তখন লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যের রাজ্যপ্রধান৷ পরবর্তীতে অবশ্য দুর্নীতির দায়ে প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়তে হয় তাঁকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পেয়ার স্টাইনব্রুক – সঠিক মানুষ, ভুল সময়
২০১৩ সালে ম্যার্কেল যখন তাঁর ক্যারিয়ারের তুঙ্গে, তখন এসপিডি থেকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বেছে নেয়া হয় পেয়ার স্টাইনব্রুক’কে৷ ম্যার্কেলের অধীনে একসময় অর্থমন্ত্রী থাকা এই রাজনীতিবিদের চ্যান্সেলর পদ পাওয়ার সব যোগ্যতাই ছিল৷ কিন্তু সময়টা ঠিক ছিল না৷ ম্যার্কেলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সুবিধা করতে পারেননি তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
7 ছবি1 | 7
এবারের পরিস্থিতি অবশ্য আরো জটিল৷ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আলোচনায় গত সরকারের বেশকিছু সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করবে এসপিডি৷ যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আয়কর এবং শরণার্থীদের পরিবারকে জার্মানিতে আসতে দেওয়ার সুযোগ সংক্রান্ত বিষয়৷ বস্তুত, গত দু'টি জোটেই এসপিডি ছিল কনিষ্ঠ সঙ্গী৷ তার জন্য বহু সময়ে তাদের বক্তব্য গুরুত্ব পায়নি৷ এবারের আলোচনায় সেই বিষয়গুলি উঠে আসবে৷ এসপিডি আগের চেয়ে নিজেদের প্রাধান্য বাড়ানোর চেষ্টা করবে৷ অস্তিত্বরক্ষার প্রয়োজনে ম্যার্কেল তা কতদূর পর্যন্ত মেনে নেন, সেটাই দেখার৷
এদিকে জোট আলোচনা ভেস্তে গেলে নতুন ভোটের দিকে এগনো ছাড়া জার্মানির আর কোনো গত্যন্তর থাকবে না৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারনা, সে ক্ষেত্রে দক্ষিণপন্থি দলের আরো বেশি জনসমর্থন লাভের সুযোগ থাকবে৷ ইতিমধ্যেই অস্ট্রিয়ায় গঠিত হয়েছে অতি দক্ষিণপন্থি দলের সরকার৷ জার্মানিতেও যাতে তার পুনরাবৃত্তি না হয়, সিডিইউ এবং এসপিডি দু'দলই সে বিষয়ে চিন্তিত৷ ফলে জোট সিদ্ধান্তে সেই বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে বলে অনেকের মত৷
শেষপর্যন্ত জোট বৈঠক সফল হলে নির্বাচনের প্রায় ৬ মাস পর জার্মানিতে সরকার গঠিত হবে৷ জার্মানির ইতিহাসে এ এক অভূতপূর্ব ঘটনা৷ তবে এসপিডি-র শেষ সভাতে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, আলোচনায় বসা মানেই জোটকে সমর্থন করা নয়৷ যদিও অনেকেই মনে করছেন, দীর্ঘ টালবাহানার পর এসপিডি যখন আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে, তখন জোট সম্ভাবনাও খুব দূরবর্তী নয়৷