এবার বিজেপি সরকার?
১৪ মে ২০১৪![Master.](https://static.dw.com/image/17255609_800.webp)
গত সোমবার ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের নবম তথা অন্তিম দফার ভোট গ্রহণ শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গেই বুথ ফেরত সমীক্ষার বেশির ভাগই ইঙ্গিত দিয়েছে যে ভঙ্গুর বা ত্রিশঙ্কু সংসদ নয়৷ এবার দিল্লির মসনদে বসতে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট সরকার৷ বিভিন্ন সমীক্ষায় আসন সংখ্যায় কিছু তারতম্য থাকলেও, সবকটি সমীক্ষায় সংসদের ৫৪৩টি আসনের মধ্যে বিজেপি-জোটকে দিয়েছে ২৫০ থেকে ৩৪০টি আসন৷ আর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটকে দিয়েছে ৭০ থেকে ১৪৮টি আসন৷
অর্থাৎ, আসন সংখ্যার দিক থেকে বিজেপি আগেকার সব রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে৷ অন্যদিকে কংগ্রেস এত কম আসন আগে কখনও পায়নি৷ বুথ ফেরত সমীক্ষায় বলা হয়, বিজেপি তামিলনাড়ু ও কেরালায় ধরাশায়ী হলেও উত্তর ভারতের হিন্দি বলয়ে বিজেপির মোদী ঢেউ অপ্রতিহত৷ উত্তর প্রদেশে ৮০টি আসনের মধ্যে বিজেপি পাবে ৪৫ থেকে ৫০টির মতো আসন৷ বিহারে পেতে চলেছে ৪০টির মধ্যে ২৮টি৷ লালু প্রসাদের রাষ্ট্রীয় জনতা দল আর মাথা তুলতে পারেনি৷ আম আদমি পার্টির অবস্থাও সুবিধাজনক নয়৷ এই পূর্বাভাসে সরকারি শিলমোহর পড়ার জন্য অবশ্য অপেক্ষা করতে হবে ১৬ই মে ভোট গণনার দিন পর্যন্ত৷
কংগ্রেস অবশ্য এই পূর্বাভাসকে তেমন আমল দিতে নারাজ৷ কংগ্রেসের মতে, ২০০৪ সালের বুথ ফেরত সমীক্ষায় বলা হয়েছিল বিজেপি-জোট সরকার গড়বে এবং ২০০৯ সালের পূর্বাভাষে বলা হয়েছিল যে, ত্রিশঙ্কু সংসদ হবে৷ কিন্ত কোনোটাই হয়নি৷ এবার রেকর্ড সংখ্যক ৬৬.৪৮ শতাংশ ভোট পড়েছে যা ১৯৮৪-এর হার ছাড়িয়ে গেছে৷ গত সোমবার শেষ দফার ভোটের পর কংগ্রেসের ‘কোর' কমিটির বৈঠক বসে৷ তাতে রাজনৈতিক ছুঁতমার্গ সরিয়ে তৃণমূল, এআইএডিএমকে ও বিএসপিকে নিয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনে কংগ্রেসের সমর্থনের দরজা খোলা রাখা হয়েছে৷ তৃণমূল ও এআইএডিএমকে তাদের আসন সংখ্যা আগের চেয়ে ভালো করেছে বলে সমীক্ষায় বলা হয়েছে৷ নির্বাচনি বিপর্যয়ের জন্য রাহুল গান্ধীকে আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে৷
এদিকে বুথ ফেরত সমীক্ষার ছবি সামনে রেখে দিল্লি বিজেপি হেড-কোয়াটার্সে এবং গুজরাটের গান্ধী নগরে এখন সরকার গঠনের প্রস্তুতির তুমুল ব্যস্ততা৷ মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়ে দিল্লি এলে গুজরাটে তাঁর জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তাই নিয়ে রাজ্যে সাংসদ ও বিধায়কদের এক বেঠকে বর্তমান রাজস্বমন্ত্রী এবং মোদীর ঘনিষ্ট আনন্দিবেন প্যাটেলের নাম প্রস্তাব করেন মোদী৷ দিল্লির বিজেপি অফিসে দলের প্রাক্তন সভাপতি নীতীন গডকড়িকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নেবার কথা শোনা যাচ্ছে৷ তাঁর বিরুদ্ধে আনা আয়কর মামলা খারিজ হয়ে যাবার পর গডকড়ি দেখা করেন মোদীর সঙ্গে৷ গডকড়ি ছাড়াও দেখা করেন মানেকা গান্ধী, সংসদের প্রাক্তন স্পিকার পি.এ সাংমা প্রমুখ৷ বর্তমান সভাপতি রাজনাথ সিং তাঁর পদেই থাকতে চান৷ মোদী এবং রাজনাথ সিং হিন্দুত্ববাদী সংগঠন তথা বিজেপির পথনির্দেশক রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভগবতীর সঙ্গে মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে এক প্রস্ত আলোচনা সেরে ফেলেছেন৷ জানা গেছে, দলের প্রবীণ সদস্যদের সম্মানজনক স্থান দিয়ে মন্ত্রিসভায় তরুণ প্রজন্মকে বেশিগুরুত্ব দিতে চান মোদী৷ প্রধানমন্ত্রী পদে মোদীর অভিষেক প্রায় নিশ্চিত আশা করে শেয়ার বাজার হয়ে ওঠে তেজি৷
এদিকে প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং তাঁর দপ্তরের নিজস্ব ১১০ জন কর্মচারীর কাছ থেকে বিদায় নেন৷ আগামী শনিবার তাঁর মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠক করে তিনি যাবেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে৷ আর তারপর দেবেন জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ৷ বিকেলের দিকে তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের চা-পানে আপ্যায়িত করবেন৷ রাষ্ট্রপতি দেবেন নৈশভোজ৷